চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়। গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আমরা কম-বেশি ছোট-বড় সবাই ভুগে থাকি। অনিয়মিত খাদ্য অভ্যাস, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বাতেল মসলাযুক্ত খাবার খেলে, হোটেলের খাবার বা বিয়ে বাড়ির খাবার খেলে অনেকেই অস্বস্তিকর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকে। যার ফলে আমাদের পেটের নানা জটিলতা দেখা দেয়।
বর্তমানে গ্যাস্টিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। আপনিও যদি এই সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি হতে পারে আপনার সমস্যা সমাধানের উপায়। আপনি কি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে নিচের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আরোও পড়ুন: সবুজ আপেলের ১৫টি উপকারিতা
অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, কায়িক শ্রমের গাফিলতি এবং নিয়মিত ব্যায়াম না করার কারণে পেটে ব্যথা, হজম জনিত সমস্যা, পেট ফেপে, পেট খোলা ভাব, অস্বস্তি বোধসহ নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন এই সমস্যার অন্যতম কারণ হলো বেশি খাওয়া আর খুব দ্রুত খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমান খাবার পানি না খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
মূলত খাবার খাওয়ার সময় বা তরল কোন কিছু পান করার সময় আমাদের শরীরে অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন প্রবেশ করে। পরিপাকতন্ত্র খাদ্য হজম হওয়ার সময় আমাদের শরীরে হাইড্রোজেন মিথেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর মত গ্যাস নির্গত হয়ে পেটে জমা হয় আর এগুলোর কারণেই মূলত গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি হয়। আজ বলবো আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের গ্যাস্টিক দূর করার ২০টি উপায় এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে কিছু কথা।
চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায়
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
- ফলের রস খাওয়া
- আলুর রস
- আদা
- দই
- কাঁচা রসুন
- পুদিনা পাতা
- কাঁচা পেঁপে
- পাকা কলা
- শসা
- আনারস
- কাঁচা হলুদ
- ডাবের পানি
- লেবু পানি
- জিরা ও জোয়ানের পানি
- মৌরি ভেজানো পানি
- ঠান্ডা দুধ
- খাবার চিবিয়ে খাওয়া
- ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা
- হার্বাল টি খাওয়া
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে পানির ভূমিকা অনেক কোলন আমাদের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। প্রতিদিন অন্তত ৩ লিটার পানি পান করলে আপনার শরীরের কোলন পরিষ্কার থাকবে। মলের সাথে শরীরে জমে থাকা ময়লা বের হয়ে যাবে। পানি পানের পাশাপাশি আপনি চাইলে ওর স্যালাইন ডাবের পানি বা ফলের রস খেতে পারেন। এতে করে আপনার কিডনি এবং হার্টের অসুখ দূরে থাকবে ।
ফলের রস খাওয়া
গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করতে চাইলে কোলন ঠিক রাখতে হবে। নিয়মিত ফলের রস খেলে কোলনের ময়লা দূর হয়। গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন ধরনের ফলের রস খেলে কল্যাণে জমে থাকা ময়লা খুব সহজে বের হয়ে যায়। এতে খাবার হজম ভালো হয় পেটের যার ফলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আলুর রস
গ্যাস্টিকের দূর করতে একটি অন্যতম ভালো ঘরোয়া উপায় হল আলুর রস। আলুতে থাকা অ্যালকালাইন উপাদান গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই একটিবার দুটি আলু ভালোভাবে গ্রেট করে নিয়ে তা থেকে রস বের করে নিতে হবে। আলুর রসের সাথে গরম পানি মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগে তিনবার পান পান করলে দুই সপ্তাহের মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
আদা
হজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকে শুরু করে পেটের নানা সমস্যা সমাধানে আদার অনেক কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত আদা পানি ফুটিয়ে খেলে, আদার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে, বা সরাসরি আদা ধুয়ে চিবিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আদায় থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি গ্যাস্টিকের জ্বালাপোড়ার সমস্যা রোধ করে থাকে।
দই
দুই এমন একটি খাদ্য যাতে থাকে ল্যাকটোব্যাকিলাস, এসিডোফিলাস, বিফিডাসের মত আরো অনেক উপকারী জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া। এ সকল ব্যাকটেরিয়া আমাদের পেটের মধের খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এইজন্য প্রতিদিন খাবারের পর দুই তিন চামচ দই খেলে আমাদের হজম ভালো হয় এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়।
কাঁচা রসুন
গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করতে কাঁচা রসুনের বিকল্প নাই বললেই চলে। গ্যাস বেশি হলে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই ইস্টোমাকে এসিড ক্ষরণের মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে যার ফলে গ্যাস গ্যাস সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।
পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতার উপকারিতা জন্য বর্তমানে অনেকের বাড়িতে বা ছাদে টবে পুদিনা পাতা চাষ করা হয়। কয়েকটি পুদিনা পাতা পানিতে ফুটিয়ে খেলে পেট ফাঁপা ভাব, বমি বমি ভাব দূর হয় এবং গ্যাস্ট্রিক দূর হয়।
কাঁচা পেঁপে
কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে পেঁপেই নামক এনজাইম যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কয়েক টুকরো কাঁচা পেঁপে চিবিয়ে খেলে গ্যাসের সমস্যা চিরতরে দূর হয়। তাই নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
পাকা কলা
পাকা কলা এমন একটি খাদ্য যা আমাদের দেহ থেকে দূষিত পদার্থ দূর করে দেয়। কলাই পর্যাপ্ত পরিমাণের পটাশিয়াম থাকায় তা শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে হজম ভালো হয়। যারা বেশি পরিমাণ লবণ খায় তাদের গ্যাস ও হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই তাদের এই সমস্যা সমাধান হচ্ছে পাকা কলা।
শসা
আমাদের শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখতে শসা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শশায় রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা আমাদের পেটে গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
আনারস
আনারস এমন একটি ফল যাতে রয়েছে ৮৫ শতাংশ পানি এবং ব্রোমেলিন নামক হজমে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম। এটি একটি কার্যকারী পাঁচক রস যা আমাদের পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে এবং ত্বকের জন্যেও বেশ উপকারী।
কাঁচা হলুদ
হজম সংক্রান্ত সকল ধরনের সমস্যা সমাধানে হলুদের কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন খালি পেটে কয়েক টুকরো কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে শরীরে চর্বি জাতীয় খাবার হজম করতে সাহায্য করে। যার হলে আমাদের পেট পরিস্কার থাকে এবং গ্যাস্ট্রিক দূর হয়।
ডাবের পানি
ডাবের পানি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি পানীয়। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই দূর করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিবারের ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিকের। আমাদের শরীরের বুক জ্বালাপোড়া ভাব এবং পেটের ব্যথা কমাতে ডাবের পানির ভূমিকা অনেক।
আরোও পড়ুন: কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও এর পুষ্টিগুণ। কোন ডিমে পুষ্টি বেশি
লেবু পানি
যারা অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যায় ভুগছেন তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু পানি খেয়ে দেখতে পারেন। বেশিরভাগ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সকালে খালি পেটে লেবু পানি খাওয়ার ফলে চলে যায়। লেবুতে থাকা অ্যালকালাইজড বা ক্ষারীয় পদার্থের কারণে আমাদের শরীরে থাকা বাড়তি গ্যাস্টিকের প্রভাব কেটে যাবে।
জিরা ও জোয়ানের পানি
জিরা আজওয়ান হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে যার ফলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়। এক লিটার পানিতে এক চামচ জিরা এবং এক চামচ কাঁচা জোয়ান ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পানিটা থেকে পান করলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মৌরি ভেজানো পানি
এক চামচ মুড়ি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালবেলা সেই পানিটা থেকে খালি পেটে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও আমাদের পেটের নানা সমস্যা দূর করতে মৌরির ভূমিকা অনেক।
ঠান্ডা দুধ
আমরা মনে করি গরম দুধেই বুঝি সব উপকার। কিন্তু আসলে তা না ঠান্ডা দুধেও রয়েছে বাড়তি অনেক উপকারিতা। ঠান্ডা দুধের ক্যালসিয়াম বাটি অ্যাসিড শোষণ করে নেই। যার ফলে আপনি যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত ঠান্ডা দুধ পান করুন। এতে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তা দূর হবে এবং গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাবেন।
খাবার চিবিয়ে খাওয়া
আমরা অনেক সময় তাড়াহুড়া করে খাবার না চিবিয়ে। যার ফলে পাকস্থলীর সেই খাবারটা হজম করতে কষ্ট হয়। এতে করে লিভারের অনেক সমস্যা দেখা দেয় যার মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা একটি। তাই আমরা খাবার খাওয়া সময় অবশ্যই ভালোভাবে চিবিয়ে খাব।
ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এগিয়ে চলা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা একটু ভাজাপোড়া এবং তেল চর্বি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। আসলে এই তেল চর্বি জাতীয় খাবার এবং ভাজাপোড়া আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি করে। তাই এগুলো এড়িয়ে চললে এমনিতেই গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হার্বাল টি খাওয়া
উপকারী পানীয়ের তালিকায় হার্বাল টি সবার উপরে। এই জাতীয় শব্দটি অনেক উপকারী। এই পানীয় অন্তর পরিষ্কার রাখতে বেশ কার্যকরী। তাই গ্যাস্টিকের সমস্যা হজম সমস্যা দূর করতে নিয়মিত এই চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম
নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। ব্যায়াম এমন একটি কায়িক শ্রম যা নিয়মিত করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আজ আপনাদের এমন কিছু ব্যায়ামের কথা বলব যা গ্যাস্ট্রিক দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেটের সমস্যা দূর হয় এবং নিজেকে অনেক হালকা মনে হয়। আসুন জেনে নিই ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে।
সাইকেলিং ব্যায়াম
পিঠের ওপর শুয়ে শূন্যে পা দুটিকে বাইসাইকেলের মতো চালাতে থাকুন। গবেষণায় বলছে এই ব্যায়ামটি ৫ মিনিট করলে পেটের গ্যাস অতি দ্রুত নির্মূল হয়ে যাবে।
চাইল্ড পোজ
হাত দুটোকে সামনের দিকে রেখে নামাজের সেজদা দেওয়ার ভঙ্গিতে হাটু, হাত, নাক এবং কপাল সবগুলোই মাটির সাথে লাগাতে হবে। এভাবে সর্বোচ্চ ১-২ মিনিট থাকুন এবং ঠিক একই ভাবে এটি ৩-৪ বার রিপিট করুন। এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে পেটের গ্যাসটিক কমে যাবে।
খাবার খাওয়ার পর হালকা একটু হাঁটা
আমাদের অনেকেরই বদভ্যাস আছে খাবার খাওয়ার পরপরই বসে যাওয়া বা শুয়ে যাওয়া। সবথেকে সহজ ব্যায়াম হচ্ছে খাবার খাওয়ার পর বসে না থেকে অথবা শুয়ে না গিয়ে অল্প কিছুক্ষণ ধীর এবং স্থির গতিতে হাঁটলে খাবার সহজে হজম হয় এবং পেটের গ্যাস অনেকাংশই কমে যায়।
পেটে গ্যাস হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত
গ্যাসের সমস্যা হলে বুক জ্বালাপোড়া ভাব হয়, পেট ফুলে যায় এবং অস্বস্তিকর বোধ হয়। তাই আমাদের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে কোন ধরনের খাবার খেলে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। সাধারণত জিরা, তুলসী পাতা, মৌরি, পুদিনা পাতা, ফলের রস ইত্যাদি জাতীয় খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দ্রুত সেরে যায়। তাই পেটে গ্যাস হলে এই ধরনের খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে।
পেটে গ্যাস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেক বিরক্তিকর একটি সমস্যা। এই সমস্যায় যারা ভোগেন ঠিক তারাই জানেন এটা কেমন কষ্টকর একটি পেটের সমস্যা। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে জীবন যাপনে এবং খাদ্যাভ্যাসের অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে খাবারের ক্ষেত্রে ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেসব খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায় সেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আসুন জেনে নিই পেটে গ্যাস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা সেই সম্পর্কে।
- পপকর্ন
- কাঁচা সবজি
- চুইংগাম
- পেঁয়াজ
- আপেল
পপকর্ন
সারা পৃথিবী জুড়েই পপকর্ন খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। ছোট বড় প্রায় সব ধরনের মানুষই পপকর্ন পছন্দ করে অনেক। কিন্তু এই পপকর্নই হতে পারে আপনার পেটের সমস্যার একটি মূল কারণ। কারণ পপকর্নে থাকে অতিমাত্রায় ফাইবার যার ফলে পেটের গ্যাস এবং পেট ফাঁপা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে পপকর্ন এড়িয়ে চলুন।
কাঁচা সবজি
অনেকেই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় কাঁচা সবজি খালাদ হিসেবে খেয়ে থাকেন। কাঁচা সবজিতে থাকা সালফার এবং গন্ধকের যোগ্য আমাদের হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই কাঁচা সবজি এড়িয়ে চলতে হবে।
চুইংগাম
চুইংগাম আসলে কোন খাবার নয় এটি এক ধরনের রাবার। তাই এটি জীবাণু হয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত ফেলে দিতে হয়। অনেকেই মুখের গন্ধ দূর করার জন্য এটি খেয়ে থাকেন। কিন্তু এর ফলে হতে পারে বদহজমের সমস্যা। কারণ চুইংগাম মুখের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে জীবাণোর কারণে অনেক বাতাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে চুইংগাম চিবানোর বদ অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
পেঁয়াজ
পেঁয়াজে অনেক উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষতির দিক রয়েছে। যেমন পেঁয়াজে থাকা কার্বোহাইড্রেট ফ্রুক্টন অনেকের শরীর হজম করতে পারে না। যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে অবশ্যই পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ রাখা উত্তম।
আপেল
আপেল একটি স্বাস্থ্যকর উপকারী ফল হলেও গ্যাস্ট্রিক রোগীদের জন্য এটি মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ আপেলে পিচের মত ফ্রুক্টজের মাত্রা বেশি থাকে যা শরীরে গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি হতে সাহায্য করে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে অবশ্যই আপেল এড়িয়ে চলবেন।
গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায়
অনেক সময় খেয়াল রাখবেন গ্যাস্টিকের কারণে আমাদের অনেকেরই পেটের মধ্যে আলসার দেখা দেয়। আর এই গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার জন্য অবশ্যই আমাদের খাদ্যের ব্যাপারে অনেক সচেতন হতে হবে। কারণ গ্যাস্টিক আলসার হলে যত ওষুধই খান না কেন খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন না করলে কোন উপকার হবে না। তাই অবশ্যই মনে রাখবেন গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায় হল খাদ্যা অভ্যাস পরিবর্তন করা।
গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে টক বা টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবেনা। যেমন কমলা, লেবু, মালটা, আমলকি এইসব টক জাতীয় খাবার খালি পেটে খেলে আলসার বেড়ে যাবে। তাই এগুলো ভরা পেটে খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি সবজি রাখতে হবে যেমন ধরুন নরম শাক, লাউ, পেঁপে, চাল কুমড়া, গাজর, আলু, মিষ্টি আলু, বাঁধাকপি, শসা ইত্যাদি।
গ্যাস্ট্রিকের বুকে ব্যথা দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক অতি পরিচিত একটি রোগ। কারণ এ রোগে প্রায় অনেকেই ভুগতে দেখা যায়। একটি কথা সত্য যে আমরা নিজেরাই আমাদের শরীরে সচেতনতার অভাবে এই রোগ বাধিয়ে ফেলি । যার ফলে ভুক্তভোগী হই আমরা নিজেই। গ্যাস্ট্রিকের ফলে হতে পারে মারাত্মক বুক ব্যথা। কিন্তু চিন্তার কারণ নেই গ্যাস্ট্রিকের বুক ব্যথা দূর করার অনেক উপায় রয়েছে। এই উপায়গুলো মেনে চললে এবং খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন আনলে অবশ্যই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্যাস্টটিকে বুকে ব্যথা দূর করার উপায়
- গুড়: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার অধিক কার্যকরী একটি উপাদান হচ্ছে গুড়। আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের ফলে বুক ব্যথা শুরু হয় তাহলে এক টুকরো গুড় মুখে দিয়ে না চিবিয়ে চুষে চুষে খান এতে দেখবেন আপনার গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা।
- টক দই: যদি অধিক তেল যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পাকস্থলী খাদ্য হজম করতে না পেরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে বুক ব্যথা শুরু হয় তাহলে দুই তিন চামচ টক দই পানির সাথে গুলে খেয়ে ফেলুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন বুক ব্যথা থেমে গেছে।
- আদা: গ্যাস্টিকের সমস্যা ফলে বুক ব্যথা শুরু হলে ওষুধ না খেয়ে আপনার হাতের কাছে থাকা এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্যথা কমে গেছে।
- লবঙ্গ: গ্যাস্ট্রিকের বুক ব্যথায় লবঙ্গ বেশ কার্যকরী একটি উপাদান। গ্যাস্ট্রিকের ফলে বুক ব্যথা হলে অবশ্যই লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন এতে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত?
সাধারণত অম্লের জ্বালাপোড়া বা এসিডিটিকে গ্যাস্ট্রিক বলা হয়। এ রোগের অনেক ওষুধের গ্রুপ বাজারে পাওয়া যায়। যেমন ধরুন ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ইসমিপ্রাজল, রেবিপ্রাজল ইত্যাদি জাতীয় ওষুধ। গ্যাস্টিকের সমস্যা যদি অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা দেয় এবং তা ঘরোয়া চিকিৎসায় না সারে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ওষুধ খাওয়া উচিত। অসুখ বাড়তে দেওয়া উচিত নয়। তাই সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাবেন।
গ্যাস্ট্রিক ভালো করার উপায় কি
গ্যাস্ট্রিক একবার হয়ে গেলে আর কোনদিন ভালো হবে না এমনটি নয়। গ্যাস্ট্রিক ভালো করা যায়। গ্যাস্ট্রিক ভালো করার অন্যতম উপায়গুলো হল পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুমানো, প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করা, ভাজাপোড়া ও তেল চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা, অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, হোটেলের খাবার এগিয়ে চলা। মূলত খাবারের অভ্যাস চেঞ্জ করলেই গ্যাস্ট্রিক চিরতরে ভালো হয়।
আরোও পড়ুন: ইসুবগুলের ভুষির ৮ টি উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
শেষ কিছু কথা
আজকের এই আর্টিকেলে আজ আপনাদের চিরতরে গ্যাস্ট্রিক ভালো করার উপায় এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন যা আপনার অনেক উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের সাথেই থাকবেন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url