জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে। তলপেটের চর্বি কমানোর উপায়

শরীরের ওজন বেড়েই চলেছে। যার ফলে দেখা দিচ্ছে নানান শারীরিক জটিলতা। নিয়মিত কায়িক শ্রম এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর কারণে দিন দিন আমাদের শরীরে জমা হচ্ছে মেদের পাহাড়। যার ফলে দিন দিন আমরা শারীরিক ভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছি।

জিরা-কিভাবে-খেলে-দ্রুত-ওজন-কমে

শরীরের এই অতিরিক্ত মেদ কোনরকম কষ্টসাধ্য ব্যায়াম বা কঠিন ডায়েট ছাড়াই আপনি ঝড়িয়ে ফেলতে পারবেন। শুনে অবাক হলেও আপনার হাতের কাছে থাকা জিরাই রয়েছে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান যা আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে পারে। 

ভূমিকা 

জিরা আমরা যুগ যুগ ধরে মসলা হিসেবে রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য খেয়ে থাকি। এর বৈজ্ঞানিক নাম কুমিনাম সিমিনাম। এর আদি উৎপত্তি মিশর দেশে। স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজরা সর্বপ্রথম আমেরিকায় জিরা নিয়ে আসে‌। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশে প্রচুর পরিমাণের জিরা জন্মে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দক্ষিণ এশিয়া, চিলি, চীন, মেক্সিকো, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতে প্রচুর পরিমাণ জিরা জন্মে।

আরোও পড়ুন: কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা। কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

আপনি জেনে অবাক হবেন, এটি শুধু মসলা হিসেবেই নয়, এটি আপনার শরীরের বাড়তি ওজন কমাতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। যাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন এবং তলপেটে চর্বির পরিমাণ বেশি তাদেরকে চিকিৎসকরা নিয়মিত জিরা পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জিরা কিভাবে খেলে ওজন কমে - তলপেটের চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে জানব। আপনি যদি জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে - তলপেটের ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে

জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে তা আমরা অনেকেই জানিনা। জিরাকে শুধুমাত্র আমরা মসলা হিসেবেই জেনে থাকি। জিরা পানি পান করে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো যায়। তবে পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভ্যাসের। অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। তাহলে জিমে না যেও শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে এবং জিরা পানি পান করে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা যায়। জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে - তলপেটের চর্বি কমানোর জন্য জিরা পানি পানের বেশ কয়েকটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

পদ্ধতি-১

২ চামচ জিরা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে জিরা থেকে সেই পানি খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়। 

পদ্ধতি-২

দুই চামচ জিরা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই জিরা পানি সকালে হালকা আঁচে কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে সকালে খালি পেটে চা হিসেবে পান করতে পারেন এবং ভেজানো জিরা টুকু চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বের করে দিতে সহায়তা করবে। 

পদ্ধতি-৩

উপরের পদ্ধতিটি কিছুদিন করার পর আপনার ওজন না কমলে জিরার পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দিন এবং তার সাথে যুক্ত করুন দুই চামচ টক দই। জিরা পানির সাথে টক দই মিশিয়ে নিয়মিত কিছুদিন খেলে এটি আপনার শরীরের ওজন কমতে দ্রুত সহায়তা করবে। 

পদ্ধতি-৪

এক চামচ জিরা গুড়ার সাথে কিছুটা মধু মিশিয়ে এটি পান করুন অথবা বিভিন্ন সবজি বা স্যুপের সাথে এক চামচ জিরা গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাবে। 

পদ্ধতি-৫

লেবু এবং রসুন এই দুটি উপাদানও শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন সালাদ জাতীয় খাবার বা সবজি সিদ্ধ করে তার ওপর কয়েকটি রসুনের টুকরা কুচি কুচি করে কেটে তার সাথে লেবুর রস এবং এক চামচ জিরা গুড়া একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন রাতে খাবারটি নিয়মিত খেলে ১৫ দিনের মধ্যে আপনার শরীরে একটা জাদুকরী পরিবর্তন আপনি নিজেই টের পাবেন। এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

জিরার পুষ্টিগুণ

জিরা যে একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন মসলা জাতীয় খাবার তা আমরা অনেকেই জানিনা। প্রতি ১০০ গ্রাম জিরাই রয়েছে ৩৭৫ ক্যালোরি। এছাড়াও জিরাই রয়েছে কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ফ্যাট সোডিয়াম পটাশিয়াম এবং বেশ কিছু ভিটামিন যা আমাদের স্বাস্থ্য উপকারিতায় বেশ কার্যকরী। সুগন্ধযুক্ত এই মশলাটি নিয়মিত পান করলে অসুখ-বিসুখ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

জিরা পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা 

জিরা যা শুধু মসলা হিসেবে খাবারের সুগন্ধি বাড়ায় না সেই সাথে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পেটের চর্বি কমাতে এবং এছাড়াও শরীরের অনেকগুলো উপকার করে থাকে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা জিরার ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানব। 

জিরা-পানি-খাওয়ার-১০-টি-উপকারিতা

দ্রুত ওজন কমাতে সহায়ক 

জিরা পানি আমাদের শরীরে হজমে সহায়তা করে এবং দেহ থেকে দূষিত টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। শরীর থেকে এই টক্সিন সহজেই দূর করে ফেলতে পারে বলে ওজন হ্রাস হয় এবং ফ্যাট কমে যায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত জিরা পানি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় 

সাধারণত জিরা পটাশিয়াম আয়রন এবং ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস হিসেবে পুষ্টিবিদরা মনে করেন। তাই নিয়মিত জিরা পানি পান করলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং শরীর অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ঘন ঘন যেকোনো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে 

খালি পেটে জিরা পানি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি মহা ওষুধ হিসেবে বিবেচিত। শরীরের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে। যার ফলে আপনাদের শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

লিভারের জন্য উপকারী 

জিরাতে লিভারের ডিটক্সিফিকেশন বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। তাই জিরা পানি লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়। এটি আমাদের শরীরে ডাইজেস্টিভ এনজাইম উৎপাদন বাড়ায়। তাই নিয়মিত জিরা পানি পান করলে এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং পিত্ত উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে 

জিরাতে থাকে উচ্চ পরিমাণের পটাশিয়াম। আর এই পটাশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ লবণ যা আমাদের শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি খনিজ লবণ হওয়ায় আমাদের শরীরে লবণের নেতিবাচক প্রভাব গুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 

হৃদ রোগের জন্য উপকারী 

জিরা পানি আপনাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি টাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত জিরা পানি পান করলে হৃদরোগের নানা রকম জটিলতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের মতো অসুখ দূরে থাকে। 

রক্তস্বল্পতা নিরাময়ে সহায়তা করে 

জিরা পানিতে উপস্থিত আয়রন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ গুলোর মধ্যে একটি। আমাদের শরীরের ক্রিয়া-কলাপ ঠিক রাখতে আইরন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রক্তের হিমোগ্লোবিনের গঠন ঠিক রাখার জন্য আয়রনের প্রয়োজন। এটি আয়রনের ঘাটতির বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের রক্তস্বল্পতা নিরাময়ে সহায়তা করে। 

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে 

জিরা পানিতে এন্টি কারসিনোজেনিক বিদ্যমান যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মত কঠিন অসুখের ঝুঁকি হ্রাস করে। 

গর্ভবতী নারীর জন্য উপকারী 

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে হজমের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। নিয়মিত জিরা পানি পান করলে গর্ভবতী মায়েদের হজমের সমস্যা দূর হয় সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এছাড়া এটি গর্ভবতী নারীদের আরো অনেক সমস্যার সমাধান করে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মেয়েদের প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধে হাফ চামচ জিরা এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

ঘুমে সাহায্য করে 

ঘুম না হওয়া অনেক বড় একটি সমস্যা। যাদের রাতের বেলা ঘুম আসে না তারা প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এক চামচ জিরা গুড়া পানিতে মিশিয়ে বা কলার সাথে চটকিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার ঘুমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। প্রতিদিন নিয়মিত জিরা গুড়া পান করলে মস্তিষ্কের মেলাটোনিন নামক এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা ঘুম আসার ক্ষেত্রে দারুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। 

ত্বক ও চুলের উপকারী 

জিরা পানিতে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা শরীরকে ডিটক্স করতে সহায়তা করে। যার ফলে ত্বক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল এবং ভেতর থেকে উজ্জ্বল থাকে। এছাড়াও জিরা পানি ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করে । নিয়মিত জিরা পানি পান করলে এটি চুলের জন্য অনেক উপকারী। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল পড়া রোধ করে, খুশকি দূর করে এবং অকালে চুল পেকে যাওয়া থেকে চুলকে রক্ষা করে।

জিরা পানি কখন খেতে হয় 

জিরা এমন একটি উপাদান যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহযোগিতা করে এবং তলপেটের চর্বি কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। তবে জিরা পানি সঠিক নিয়মে সঠিক সময়ে খেলে আমরা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবো। আসুন জেনে নিই জিরা পানি কখন খেতে হয় এবং কখন খেলে উপকার বেশি হয়। 

আরোও পড়ুন: তালের শাঁসের উপকারিতা ও অপকারিতা।

জিরা পানি এমন একটি খাবার যা আপনারা সারাদিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারি। তবে এটি খালি পেটে খাওয়া উত্তম। সকালে ঘুম থেকে উঠে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখা জিরা পানি খালি পেটে খেতে পারেন। এছাড়াও খাবার খাওয়ার আগে বা কোন ভারি খাবারের আগে জিরা পানি খেতে পারেন। প্রয়োজনে জিরা পানির সাথে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে স্বাদ এবং উপকার দুইটাই বেড়ে যায়।

জিরা পানি বানানোর নিয়ম 

উপকরণ 

  • হাফ লিটার পানি 
  • দুই চামচ জিরা 
  • এক চিমটি লবণ 
  • দুই চামচ টক দই 

বানানোর পদ্ধতি :

হাফ লিটার পানির সাথে ২ চামচ জিরা একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে হালকা আঁচে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানো হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে জিরা ছেঁকে ফেলে দিয়ে পানির সাথে এক এক করে এক চিমটি লবন ২ চামচ টক দই একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করুন স্বাস্থ্যসম্মত জিরা পানি।

জিরা লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা 

জিরা এবং লেবু এই দুটি এমন খাদ্য যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং চর্বি কমাতে সহায়তা করে। জিরা এবং লেবুতে থাকা উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই আমরা প্রতিদিন সকালে জিরা পানির সাথে কয়েক টুকরো লেবু মিশিয়ে কিছুক্ষণ পানিতে ফুটিয়ে তা পান করতে পারি। এতে করে অবশ্যই আপনার শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করবে পাশাপাশি এটি আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং ঘুম ভালো হতে সহায়তা করবে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত জিরা লেবু পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আপনাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে শরীরকে করবে হালকা এবং সচল। 

তলপেটের চর্বি কমানোর উপায় 

তলপেটের চর্বি কোন সাধারণ চর্বি নয়। তলপেটের চর্বি কেবল মধ্যপ্রদেশের মেদ নয়, এ মেদের অবস্থান আরও গভীরে। সাধারণত আমাদের শরীরের ত্বক পেরিয়ে নিচে একেবারে অন্ত্রগুলোর চারপাশে আষ্টেপিষ্টে ভালোভাবে পেঁচিয়ে থাকে চর্বির ঘন স্তর। শরীরের অন্য জায়গার মেদের তুলনায় তলপেটের মেদের চরিত্র আলাদা এরা খুব সক্রিয় এবং প্রচুর চটপটে টাইপের। তাই আপনার তলপেটের চর্বি কমাতে হলে অবশ্যই একটু কষ্ট করতে হবে। তলপেটের চর্বি কমানোর উপায় হল 

  • জিরা পানি খাওয়া: প্রতিদিন নিয়মিত সকালে জিরা পানি খেলে কমে যাবে আপনার তল পেটের জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি। তাই আপনার তলপেটে চর্বি জমে থাকলে নিয়মিত জিরা পানি পান করুন। 
  • খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন: আপনার যদি অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা তেল চর্বি জাতীয় খাবারের অভ্যাস থাকে তাহলে অবশ্যই তা পরিহার করতে হবে। কারণ খাদ্যাভাসের পরিবর্তন না করলে কোন কিছু করেই তলপেটে চর্বি কমানো যাবে না। 
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা: খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তলপেটে চর্বি কমানোর জন্য বিশেষ কিছু ব্যায়াম আছে। এই ব্যায়াম গুলো নিয়মিত করলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তলপেটের চর্বি কমানো যায়।
  • জোরে জোরে হাঁটুন: তলপেটের চর্বি কমানোর আরও একটি বিশেষ উপায় হচ্ছে প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ৩০ মিনিট দ্রুত বেগে হাঁটা। প্রতিদিন সকালে দ্রুত বেগে ৩০ মিনিট হাঁটলে তলপেটের চর্বি গলে যায়। যার ফলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং তলপেটে চর্বি দুটোই কমানো যায়।

প্রতিদিন কতটুকু জিরা পানি খাওয়া যায় 

আমাদের সকলের মনে একটা প্রশ্ন থাকে প্রতিদিন আমরা কতটুকু জিরা পানি খেতে পারব। আজ আপনারা পোষ্টের এই অংশে প্রতিদিন কতটুকু জিরা পানি খেতে পারবেন তার উত্তর পাবেন। আমরা প্রতিদিন সকালে জিরা পানি পান করতে পারি। সকালে সাধারণত এক থেকে দুই গ্লাসের বেশি পানি খাওয়া যায় না। তাই আপনিও প্রতিদিন সকালে এক থেকে দুই গ্লাস জিরা পানি খেতে পারেন। 

তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর আশায় অতিরিক্ত জিরা পানি পান করবেন না। এতে শরীরের উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে। তাই তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে ওজন কমান। এক চামচ জিরা এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে জিরা থেকে সেই পানি পান করুন।

৭ দিনে কিভাবে ওজন কমানো যায়

সাত দিনে ওজন কমানো অনেক কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ। আপনি যদি এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চান তাহলে আপনাকে কিছুটা কষ্ট করতে হবে। সাত দিনে ওজন কমানোর জন্য জিরা পানি হতে পারে আপনার জন্য খুব ভালো একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। যা নিয়মিত পান করলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও আপনাকে নিয়মিত বায়বীয় ব্যায়ামের উচ্চ তীব্রতায় ক্রিয়া-কলাপ গুলি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। 

আরোও পড়ুন: সবুজ আপেলের ১৫টি উপকারিতা

যেমন ধরুন পাঁচ মিনিট দ্রুত বেগে হাঁটা, তারপরে পাঁচ মিনিট দৌড়াতে হবে এবং সবশেষে আরো পাঁচ মিনিট দ্রুত বেগে হাঁটতে হবে। এছাড়াও আপনার শরীরের ক্যালরি পোড়ার জন্য জুম্বা, অ্যারোবিকস এবং দ্রুত বেগে সাঁতার হতে পারে খুব ভালো কিছু পদ্ধতি। সেই সাথে অবশ্যই মনে রাখতে হবে অস্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের ডায়েট চ্যাট অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। আপনার ডায়েটে যুক্ত করতে পারেন কলা যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। এসব নিয়ম মেনে চললে আপনি সাত দিনে ওজন কমাতে পারবেন।

৭-দিনে-কিভাবে-ওজন-কমানো-যায়

জিরা পানি খাওয়ার অপকারিতা 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত জিরা পানি খেলে জিরা পানি শরীরের রক্তকে তরল করে দিতে পারে। যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। 

  • অতিরিক্ত জিরা পানি খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে হঠাৎ রক্তচাপ কমে যেতে পারে। 
  • অতিরিক্ত জিরা তেল ব্যবহার করলে শরীরে অতিরিক্ত প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। 
  • জিরা পানি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে হতে পারে বাতকর্ম ও ঢেকুরের প্রকোপ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন অতিরিক্ত জিরা পানি খেলে পেটের কোনো অসুখ থাকলে তা বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • জিরায় রয়েছে নারকোটিক প্রপার্টিজ। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ জিরা পানি খেলে নেশায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। যার ফলে মাথা ঘুরতে পারে, চোখে ধোঁয়া দেখতে পারে এবং পিছু নিতে পারে বিভ্রান্তির মত কিছু লক্ষণ। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পরিমিত মাত্রায় জিরা পানি পান করতে হবে

শেষ কিছু কথা

আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি আপনি জানতে পেরেছেন জিরা কিভাবে খেলে দ্রুত ওজন কমে - তলপেটে চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে। উপরের নিয়ম অনুযায়ী মেনে চললে আপনিও ওজন কমাতে পারবেন। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url