দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত। খালি পেটে কলা খেলে কি হয় জানুন
কলা খুব সাধারন একটি ফল যা সারা বছর পাওয়া যায়। কিন্তু এ রয়েছে অসাধারণ
পুষ্টিগুণ। আমরা অনেকেই কলার পুষ্টিগুণের কথা সম্পর্কে জানি কিন্তু দিনে কয়টি
কলা খাওয়া উচিত এবং খালি পেটে কলা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য অনেকেই
জানিনা। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত এবং খালি পেটে
কলা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে জানব।
আপনি যদি কলার এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে মনোযোগ
দিয়ে পড়ুন। আর্টিকেলটি পড়ে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন যা আপনার অনেক উপকারে
আসবে। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা: দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত। খালি পেটে কলা খেলে কি হয়
কলা অতি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। আমাদের দেশে সারা বছর যে ফলগুলো পাওয়া যায়
তার মধ্যে কলা একটি। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল। ছোট বড় সকলেই এই ফল খেতে
পছন্দ করে। অনেকেই কলা কে একটি সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের খনিজ উপাদান যা আমাদের হজম
শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কলায় থাকা ফাইবার আমিষ এবং ক্যালোরি আমাদের হার্ট
অ্যাটাকে ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণের আয়রন ক্যালসিয়াম
এবং পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরকে নানা রকম জটিলতার হাত থেকে রক্ষা করে।
আজকের এই আর্টিকেলে মধ্যে দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত খালি পেটে কলা খেলে কি হয়
এই সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য আপনাদের সাথে আলোচনা করব। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়লে আপনি কলা সম্পর্কে বিভিন্ন বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন
করতে পারবেন। তাই ধৈর্য ধরে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন।
দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত
কলা অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুস্বাদু একটি ফল। দামে কম হওয়ায় প্রায় সব শ্রেণীর লোক
এই ফল কিনে খেতে পারে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না দিনে কয়টি কলা খাওয়া
উচিত। আজকের এই আর্টিকেলের এই অংশের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে দিনে কয়টি কলা খাওয়া
উচিত এই সম্পর্কে। দিনে কয়টি কলা খেলে আপনি সুস্থ থাকবেন এবং উপকার বেশি পাবেন
এই সম্পর্কে আলোচনা করব।
আরোও পড়ুন: সবুজ আপেলের ১৫টি উপকারিতা
হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গবেষণা করে বলেছেন যে গত কয়েক বছরে পুরুষদের
তুলনায় নারীদের হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কয়েক গুণ পরিমাণ বেড়ে গেছে। আর
নারীদের এই হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন অন্তত ১ থেকে দুটি
করে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কারণ কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন
ফাইবার পটাশিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেট এর মত খনিজ উপাদান যা আমাদের শরীরে নানা রকম
উপকার করে থাকে। প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং
মাংস পেশিকে আরাম দেয়।
কলা পুষ্টিকর খাবার হলেও এটি বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না। কারণ পুষ্টিবিদরা
গবেষণা করে দেখেছেন, কলাতে প্রচুর পরিমাণ এর পটাশিয়াম রয়েছে যা আমাদের শরীরের
জন্য খুব বেশি পরিমাণ ভালো না। পটাশিয়াম সরাসরি কিডনিতে প্রভাব ফেলে। তাই
প্রতিদিন সর্বোচ্চ একটি থেকে দুটি কলা খাওয়া উচিত এতে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য
ভালো থাকবে।
খালি পেটে কলা খেলে কি হয়
কলা অত্যন্ত উপকারী এবং প্রচুর ভিটামিনযুক্ত ফল হাওয়াই এটি আমরা প্রতিদিন খেয়ে
থাকি। অনেকেই আবার প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কলা খায়। আমাদের প্রতিদিনের তিনবারের
খাদ্য তালিকার মধ্যে সাধারণত সকালের খাবারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। তাই
সকালের নাস্তায় খেয়াল রাখতে হবে অধিক পুষ্টি মানসম্পন্ন খাবার নির্বাচন করার।
প্রতিদিন সকালের নাস্তায় পাকা কলা রাখা উচিত। অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে
সকালে কলা খেলে বিভিন্ন রকম সমস্যা যেমন মাথা ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ইত্যাদি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে
হবে কলাটি যেন সরাসরি খালি পেটে না হয়।
কারণ কলা উপকারী ফল হলেও সরাসরি খালি পেটে খেলে এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। কলা
খালি পেটে খাওয়া ঠিক না কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ফাইবার
পটাশিয়াম এবং প্রোটিন যা সরাসরি খালি পেটে খেলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে কলা খেলে শারীরিক কি কি ক্ষতি হয় তা নিচে তুলে ধরা হলো
- খালি পেটে কলা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়।
- খালি পেটে কলা খেলে পেট ফাঁপা, পেটে বায়ু জমা হওয়া, এবং এসিডিটির মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
- কলাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ এবং ফাইবার। এ আঁশ এবং ফাইবারযুক্ত খাবার খালি পেটে খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- সকালে খালি পেটে কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত একটি জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- সকালে খালি পেটে কলা খেলে তারপর অন্যান্য যে খাবারগুলো খাওয়া হয় সেগুলোর হজমের বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে খাবারের উপকারী খনিজ উপাদান শরীরের শোষণ করতে পারে না।
কলার পুষ্টিগুণ
পুষ্টিবিদদের মতে একটি মাঝারি সাইজের কলায় ২৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৪ গ্রাম
প্রাকৃতিক চিনি, ৩ গ্রাম আঁশ, ১০৫ ক্যালোরি এবং আরো অনেক ধরনের প্রয়োজনীয়
ভিটামিন রয়েছে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম
এবং পটাশিয়াম।
পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা এমন একটি ফল যার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কম বেশি সকলেই জানি। এটি প্রায় সকল
শ্রেণীর মানুষের প্রিয় এবং সহজলোভ্য একটি ফল। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কলার গুণের
কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের শরীরের জন্য কলা খাওয়ার উপকার সম্পর্কে বেশ
কিছু উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো।
রক্তচাপ স্বাভাবিক করে
কলায় থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণের পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
বাড়তি ওজন কমায়
কলা এমন একটি ফল যেখানে প্রচুর পরিমানের আঁশ এবং শর্করা সমৃদ্ধ। যার ফলে কলা খেলে
পেট অনেকক্ষণ ভরাভরা থাকে এবং খিদে কম লাগে। খিদে কম লাগার কারণে প্রয়োজনের
অতিরিক্ত খাওয়া হয়না ফলে আমাদের ওজন ধীরে ধীরে কমে যায়। এছাড়াও কলায় রক্তে
চিনির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে এবং ইনসুলিন হরমোনের পরিমাণ ঠিক রাখে। শরীরে ইনসুলিনের
পরিমাণ কম থাকায় গ্লুকোজ ঠিকভাবে শোষিত হয় না। তাই অগ্নাশয় থেকে আরো অনেক বেশি
পরিমাণের ইনসুলিন উৎপাদন হতে থাকে। শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বেশি থাকলে মানুষের
ওজন ঠিক থাকে।
পরিপাকের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কলা আমাদের শরীরে থাকা গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল অঙ্গ গুলোর কোনরকম প্রদাহ তৈরি
করে না তাই সহজে পরিপাক হতে পারে। কলাই এক ধরনের প্রতিরোধী স্ট্রাচ থাকে যা
আমাদের পরিপাক না হয়ে বৃহদন্ত্রে গিয়ে অবমুক্ত হয়। বৃহদন্ত্রের একটি
স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার খাদ্যে পরিণত হয়। কারো ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে যেসব
খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায় সে সকল খনিজ পদার্থ পূরণে কলা জুরি মেলা ভার।
রক্তে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ কমে গিয়ে হিমোগ্লোবিন কমে যায় যার ফলে
রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হয়।
কারো শরীরে রক্তস্বল্পতা হলে শরীর ফ্যাকাসে লাগে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে
যায় যার ফলে যে কোন অসুখে খুব দ্রুত আক্রান্ত হয়, ক্লান্তি বোধ লাগে এবং
শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা আমাদের শরীরের রক্ত
লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই পরিমিত মাত্রায় নিয়মিত কলা খেলে
রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
মানসিক চাপ কমে
আমাদের শরীরে হাসিখুশি হরমোন তৈরি করার জন্য কলা অত্যন্ত জরুরি একটি ফল। এছাড়া
প্রতিটি কলায় গড়ে ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। ম্যাগনেসিয়াম আমাদের মন
ভালো রাখতে এবং ভালো ঘুমের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
শক্তি বৃদ্ধি করে
কলায় থাকা পটাশিয়াম আমাদের মাংসপেশিকে যেকোনো ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে
এবং কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। যার ফলে নিয়মিত কলা খেলে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী
এবং শক্তিশালী হওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কলায় থাকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন 'এ' ভিটামিন 'ই' এবং ভিটামিন 'সি' যা আমাদের
শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের সাথে লড়াই করে এবং আমাদের শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে
সাহায্য করে।
ক্যান্সার সমস্যা দূর করে
কলাতে থাকে এক ধরনের প্রোটিন এবং লেকটিন। এই প্রোটিন এবং লেকটিন আমাদের শরীরে
ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোর্সগুলোকে ধ্বংস করে যার ফলে ক্যান্সার হওয়া সম্ভাবনা
কমিয়ে ফেলে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
নিয়মিত পাকা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনি যদি
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত একটি করে পাকা কলা খান।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
পাকা কলা খাওয়ার অপকারিতা
কলা একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার তাই বলে এটি যে অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে তা
কিন্তু নয়। অল্প পরিমাণের খেলে যেমন কলা থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায় তেমনি বেশি কলা খেলে আমাদের শরীরের অনেক ধরনের ক্ষতি ও হয়। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা জানবো কলা
খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কলা বেশি খেলে আমাদের শরীরে কি
কি ক্ষতি হতে পারে।
মাইগ্রেনের সমস্যা বৃদ্ধি পায়
মাইগ্রেন অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ। কলা বেশি খেলে যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা
আছে তাদের অসুখ বৃদ্ধি করতে পারে। তাই মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কলা থেকে দূরে
থাকাই ভালো।
দাঁতের ক্ষয় হয়
কলায় থাকা প্রচুর পরিমাণে শর্করা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অতিরিক্ত
পরিমাণ কলা খেলে দাঁতের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। তাছাড়া এটি মিষ্টি জাতীয় খাবার
হওয়ায় এটি দাঁতের জন্য খুব ক্ষতিকর।
এলার্জি সমস্যা বৃদ্ধি করে
অতিরিক্ত পরিমাণ কলা খেলে অনেক সময় এলার্জি হতে পারে। এছাড়াও আমাদের বুক
জ্বালাপোড়া, গলা জ্বালাপোড়া এবং ঠোট ফুলে যাওয়াসহ আরো বিভিন্ন রকমের সমস্যা
হতে পারে।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা বৃদ্ধি করে
যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তারা যদি বেশি পরিমাণ কলা খায় তাহলে শ্বাসকষ্ট
দ্রুত বেড়ে যায়। তাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই কলা এড়িয়ে চলা
উচিত।
গ্যাস্টিকের সমস্যা বাড়ায়
কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানের ফাইবার এবং গ্লুকোজ যা আমাদের শরীরে গ্যাস সৃষ্টি
করে। তাই কলা বেশি খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
পেটে ব্যথা করে
কলায় শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় এটি অতিরিক্ত খেলে আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা সৃষ্টি হয় যার ফলে পেট ব্যথা দেখা দেয়। সেজন্য পরিমিত মাত্রায় কলা
খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করে
কলা একটি মিষ্টি জাতীয় ফল। তাই এটি বেশি পরিমাণের খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত বৃদ্ধি
পায়। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা কলা থেকে দূরে থাকবেন।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল হওয়া এটি একটি সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক উপকারী। গর্ভাবস্থায় নানা ধরনের জটিলতা দেখা
দেয়। এ সকল জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার প্রয়োজন। এটি
গর্ভবতীদের শরীরের নানা ধরনের পুষ্টি উপাদানে চাহিদা পূরণ করে থাকে।
কলায় চর্বি কম এবং পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
হওয়ায় গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ১ থেকে দুইটি কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন
বিশেষজ্ঞরা। কলা একটি অধিক ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফল হয় গর্ভবতী মেয়েদের জন্য
অনেক উপকারী একটি খাদ্য।
আমাদের দেশে কাঁচা কলা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক
উপকারী। কাঁচা কলায় খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এইসব অতিরিক্ত
পরিমাণে থাকায় গর্ভবতী মেয়েদের শরীরে দুর্বলতা দূর করে শরীরে শক্তি যোগাতে
সাহায্য করে। কাঁচা কলা শর্করার উৎস হওয়ায় এটি গর্ভাবস্থায় হজম এবং
কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে।
পাকা কলায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে ক্ষতিকর জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কাঁচা কলায়
রয়েছে শর্করা, ওমেগা 3, ওমেগা সিক্স, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম,
ক্যালসিয়াম, আয়রন, সিলিনিয়াম, তামা পুষ্টি উপাদান যা গর্ভাবস্থায় ভ্রুনের
সুস্থতা বিকাশে বিশেষভাবে সহায়ক।
সকালে কলা খেলে কি হয়
আর্টিকেলের এই অংশটুকুতে আপনারা সকালে কলা খেলে কি হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে পারবেন। আসুন জেনে নিই সকালে কলা খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
- বিশেষজ্ঞরা সকালের নাস্তা অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার দিয়ে করতে বলেন। আর কলা হচ্ছে অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার যা আমাদের শরীরে শক্তি সঞ্চালন ঘটায়।
- সকালে কলা খেলে কলায় থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে আমাদের শরীরে শক্তির উৎস তৈরি করতে সাহায্য করে।
- সকালে কলা খেলে কলায় থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- নিয়মিত সকালে কলা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- খোলা একটি ফাইবার সমৃদ্ধা খাবার হওয়ায় এটি সকালে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়।
- কলায় প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকায় এটি নিয়মিত সকালে খেলে আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে চাঙ্গা এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
বেশি কলা খেলে কি হয়
কলা উপকারী ফল বলে আপনাদের মধ্যে যারা বেশি পরিমাণ কলা খেয়ে থাকেন আজকের এই
আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আমাদের প্রতিটা জিনিসই অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা ঠিক
নয়। এতে হতে পারে নানা শারীরিক জটিলতা। বেশি কলা খেলে কি হয় তা সম্পর্কে আসুন
জেনে নেওয়া যাক
- অতিরিক্ত কলা খেলে শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
- অতিরিক্ত কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
- এটি মিষ্টি জাতীয় ফল হয় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
- অতিরিক্ত কলা খাওয়া ফুসফুসের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
খালি পেটে কলা খেলে কি গ্যাস হয়?
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা খালি পেটে কলা না খাওয়াই ভালো। কারণ কলায়
থাকে এসিড এবং পটাশিয়াম যা খালি পেটে খেলে গ্যাস্টিকের মতো সমস্যা দেখা দেয় এবং
হজমের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। কলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে ক্যালসিয়াম এবং
ম্যাগনেসিয়ামের ভারসাম্যতা তৈরি করতে পারে যার ফলে কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতি বিরূপ
প্রভাব ফেলতে পারে। তাই খালি পেটে কলা খেলে গ্যাস হয়।
কলা খেলে কি মোটা হয়ে যায়?
অনেকেই মনে করেন কলা খেলে মানুষ মোটা হয়ে যায়। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই সঠিক
নয়। কলায় থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
যার ফলে কলায় থাকা ফাইবার আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা ভরা রাখে। ফলে আমাদের খুদা কম লাগে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
শেষ কিছু কথা
আজকের এই আর্টিকেলে দিনে কয়টি খাওয়া উচিত খালি পেটে কলা খেলে কি হয় এই
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত এবং খালি পেটে কলা খেলে
কি হয় সেই সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন
আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে
থাকুন। এরকম আরো অনেক ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে www.digitalabida.com এর সাথে
থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url