চুইঝালের যত পুষ্টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম
চুই ঝাল একটি মসলার নাম। জায়গা ভেদে একেক জায়গায় একে একেক নামে ডাকা হয়। চুইঝালের বৈজ্ঞানিক নাম 'পিপার ছাবা'। চুই ঝাল দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি প্রজাতি হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশে এই চুইঝালের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে
চুইঝাল মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। মাংসের ঝাল এবং স্বাদ বাড়াতে এর তুলনা নেই। চুইঝাল শরীরের কোন ক্ষতি করে না বরং রয়েছে অনেক ঔষধি গুনাগুন। খুলনা যশোর সাতক্ষীরা এবং নড়াইল এলাকায় চুইঝাল মসলা হিসেবে বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
চুই ঝালের পুষ্টি উপকারিতা
আমরা অনেকেই চুইঝালের নাম শুনেছি। আমরা জানি চুই ঝাল মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। কিন্তু নানা গুনে গুণান্বিত এই চুইঝালের রয়েছে অনেক পুষ্টি উপকারিতা যা আপনারা অনেকেই জানেন না। চুই ঝালের পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হবেন। আপনি যদি চুইঝালের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আরোও পড়ুন: সকালে ঘাসের উপর খালি পায়ে হাটার ১৫টি উপকারিতা
বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বাগেরহাট,খুলনা, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা সহ আরো বিভিন্ন এলাকায় চুইঝাল একটি জনপ্রিয় মসলা হয়ে উঠেছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চুইঝালের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। চুইঝাল মূলত একটি লতা জাতীয় গাছ। চুই ঝাল গাছের কান্ড ধূসর এবং এর পাতা পান পাতার মতো দেখতে সবুজ রঙের হয়।
চুইঝালের শিকড়, কান্ড, পাতা, ফুল-ফল সবকিছুই ভেষজ গুণসম্পন্ন। এটি মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। মূলত হাঁসের মাংস, গরুর মাংস এবং খাসির মাংস রান্নায় চুইঝালের কান্ড ব্যবহার করা হয়। চুই ঝালে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপকারিতা। আসুন জেনে নিই চুইঝালে ১৫ টি পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে।
চুই ঝালের ১৫ টি পুষ্টি উপকারিতা
- মুখের রুচি বাড়ায়
- ক্যান্সার প্রতিরোধে
- হৃদরোগ প্রতিরোধে
- মানসিক প্রশান্তিতে
- পাকস্থলীর সমস্যা দূরীকরণে
- ব্যথা দূর করে
- ঘুমের ওষুধ হিসেবে
- প্রসব পরবর্তী ব্যথা উপশমের
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
- গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে
- সর্দি দূর করে
- কাশি কফ হাঁপানি দূর করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- ডায়রিয়া দূর করে
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
মুখের রুচি বাড়ায়
চুইঝাল এমন একটি মসলা যা খাবারের রুচি বাড়িয়ে ক্ষুধামুন্দা দূর করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
চুইঝালে থাকা প্রচুর পরিমাণের আইসোফ্লাভোন এবং অ্যালকালয়েড নামক ফাইটো কেমিক্যাল যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে
চুই ঝাল আমাদের শরীরে থাকা কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে আমাদের হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে হূদরোগের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
মানসিক প্রশান্তিতে
নিয়মিত চুই ঝাল খেলে আমাদের স্নায়বিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা দূর করে মানসিক প্রশান্তি দেয়।
পাকস্থলীর সমস্যা দূরীকরণে
গবেষণায় দেখা গেছে পাকস্থলী অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে চুইঝাল অনেক উপকারী।
ব্যথা দূর করে
অনেক সময় আমাদের শরীরে নানা ধরনের ব্যথা সৃষ্টি হয়। চুইঝাল আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করে শরীরকে সতেজ ও ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ঘুমের ওষুধ হিসেবে
চুইঝাল ঘুমের ওষুধ হিসেবে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এটি নিয়মিত খেলে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়।
প্রসব পরবর্তী ব্যথা উপশমে
সদ্য প্রসূতি মায়েদের শরীরের ব্যথা কমাতে চুই ঝাল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
চুইঝালে থাকা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জনিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে।
গ্যাস্টিক সমস্যা সমাধানে
চুইঝালে থাকা পুষ্টি উপাদান পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করে থাকে।
সর্দি দূর করে
আপনার যদি অল্পতেই ঠান্ডা লাগার প্রবণতা থাকে তাহলে চুই ঝাল আপনার শরীরে ম্যাজিকের মত কাজ করবে। অল্প একটু চুই ঝাল তার সাথে আদা পিসে খেলে সর্দির সমস্যা দূর হয়।
কাশি কফ হাঁপানি দূর করে
অনেকের পুরনো কাশি, কফ এবং হাঁপানি সমস্যা থাকে। নিয়মিত চুই ঝাল খেলে কাশি, কফ এবং পুরাতন হাঁপানি দূর হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক জটিল একটি সমস্যা। আমাদের দেশের অনেক মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে। নিয়মিত চুই ঝাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো কঠিন সমস্যাও দূর হয়।
ডায়রিয়া দূর করে
চুইঝালে থাকা পুষ্টি উপাদান ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি পেটের নানা ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
হিমোগ্লোবিনের সমস্যার কারণে আমাদের অনেকের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। আপনি যদি রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত চুই ঝাল খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়। শরীরে শক্তি যোগান দেয়।
চুই ঝালের পুষ্টি উপাদান
চুইঝালের পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম চুইঝালে রয়েছে প্রায় ২০ গ্রাম ক্যালোরি, চর্বি নগণ্য, প্রোটিন ১ গ্রামের বেশি, ফাইবার ১ গ্রামের বেশি, ভিটামিন সি ৫০-১০০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৫-২ মিলিগ্রাম প্রায়, ক্যালসিয়াম ৮০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি। এছাড়াও এতে রয়েছে আইসোফ্লাভন, অ্যালকালয়েড, পিপালারিটিন, সিজামিন, মিউসিলেজ, গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, গয়লাকোসাইডস। চুঁই ঝালের শিকড়ের রয়েছে ১৩.১৫ শতাংশ পিপারিন।
চুইঝাল খাওয়ার নিয়ম
চুই ঝাল একটি মসলা জাতীয় খাবার। চুই ঝাল সাধারণত হাঁসের মাংস এবং গরুর মাংসের ব্যবহারের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও এটি বড় মাছ, খিচুড়ি, ডাল মোটকথা রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য চুই ঝাল তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায়। এটি খেতে কিছুটা আঠালো এবং ঝাঁঝালো স্বাদের হয়। খাওয়ার সময় এটি ডাটার মত চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়।
চুই ঝাল সংরক্ষণের নিয়ম
চুইঝাল একটি লতা জাতীয় গাছ। চুইঝালের কান্ড শিকড় এইসব মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। চুইঝাল দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য এর ছাল বাকলসহ ছোট ছোট করে কেটে পলিথিনের মোড়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে খাওয়া যায়। এছাড়াও চটের বস্তায় মুড়িয়ে মাঝে মাঝে পানির ছিটা দিয়ে অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। অনেকেই আবার এটিকে কেটেকুটে ওয়াটারপ্রুফ বক্সে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখেও খায়।
চুই ঝাল রান্নার নিয়ম
বর্তমানে মাংসের সাথে চুই ঝাল রান্না অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অল্প একটু চুইঝালেই বদলে দিতে পারে সম্পূর্ণ রান্না স্বাদ। অসম্ভব লোভনীয় জনপ্রিয় এই দেশি পণ্য এক পিস খেলে এটি আপনি সারা জীবন মনে রাখবেন। গরু বা হাঁসের মাংস ৬০ শতাংশ সিদ্ধ হওয়ার পর আলুর মতো করে কেটে চুইঝাল তরকারিতে দিতে হয়। দেশি চুই ঝাল রান্নার শেষের দিকে দিলেও ভালোমতো সিদ্ধ হয়ে যায়।
চুই ঝাল এর দাম
বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা অঞ্চলের মানুষের কাছে গরুর মাংস এবং হাঁসের মাংসের স্বাদ বাড়াতে চুইঝাল একটি অন্যতম মসলা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর এই চুই ঝাল বিক্রির প্রধান মৌসুম হচ্ছে কোরবানির ঈদ। সাধারণ সময় চুইঝাল প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে চুই ঝাল আকার ভেদে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চুইঝাল গাছ লাগানোর পদ্ধতি
চুই ঝাল গাছের ফুল ও ফল হয়। তাই বীজ থেকেও চারা হয়। তবে চুই ঝাল গাছ লাগানোর সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে সিকড়সহ গিট কেটে লাগালে সহজেই চারা গাছ বের হয় এবং বড় হয়। আম, সুপারি এর মত কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগাতে হয়।
আরোও পড়ুন: মরিঙ্গা পাউডার এর ২০ টি উপকারিতা
চুই গাছ লাগানোর জন্য প্রথমে গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তের মধ্যে কিছু পরিমাণ গোবর বর্জ্য ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ৫০ গ্রাম পটাশ ৫০ গ্রাম টিএসপি সার দিয়ে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে সাত দিন রেখে দিয়ে তারপর গাছ লাগাতে হয়। চুই গাছ উঁচু জায়গায় ভালো হয় কারণ গাছের গোড়ায় পানি জমলে গাছ পচে যায়।
চুই ঝাল গরুর মাংসের রেসিপি
চুই ঝাল মসলা জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি গরুর মাংসের সাথে রান্না করে খাওয়ার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আজ আপনাদের গরুর মাংসের সাথে চুই ঝাল রান্নার রেসিপি শেখাব। চলুন জেনে নেওয়া যাক চুইঝাল গরুর মাংসের রেসিপি।
উপকরণ
- মাংস
- চুই ঝাল
- তেল
- জিরা
- এলাচ
- মরিচের গুঁড়া
- দারুচিনি
- হলুদ
- আদা ও রসুন বাটা
- গরম মসলা
- তেজপাতা
- এক কাপ পেঁয়াজ
একটি প্যানে গরু অথবা খাসির মাংস ভালোভাবে একটু বড় বড় টুকরো করে কাটতে হবে। এবার সব মসলা এক এক করে দিয়ে দিতে হবে। সবগুলো মসলা মাংসের সাথে উল্টে পাল্টে ভালোভাবে মাখাতে হবে। মাখানোর উপরেই আসলে মাংসের স্বাদ নির্ভর করে। মাংসের সাথে মসলাটা যত ভালোভাবে মাখানো হবে মাংসের স্বাদ তত বেড়ে যাবে।
মসলা মাখানো হয়ে গেলে এতে কিছুটা পানি দিতে হবে। পানিটা এমন পরিমাণ দিতে হবে যেন মাংসের গায়ে গায়ে লেগে থাকে খুব কম বা বেশি না হয়। এবার মাংসটা রান্নায় দিয়ে ফুল আঁচে রান্না করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত পানি শুকিয়ে মাংসের উপরে তেল উঠে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত রান্না করতে হবে। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে ভালোভাবে নেড়ে দিতে হবে।
মাংসের তেল ওপরে উঠে আসলে রসুন আর চুই ঝাল একসাথে দিতে হবে। চুইঝাল দেওয়ার পর মাংসটা উপর নিচ করে ভালোভাবে অনবরত নাড়তে হবে। এ অবস্থায় অনবরত না নাড়লে মাংসটা লেগে যাবে।
এবার ঢাকনা দিয়ে মাংসটা ফুল আঁচে পাঁচ মিনিট রান্না করতে হবে। পাঁচ মিনিট রান্না করার পরে মাংসের স্বাদ কিছুটা বাড়ানোর জন্য কিছুটা মেথি গুঁড়ো মাংসের সাথে মিশাতে পারেন।
এ অবস্থায় কিছু কয়েকটা রসুন গোটা গোটা করে খোসা ছাড়িয়ে মাংসের ছেড়ে দিন।এবার মাংস ভালোভাবে কষাতে থাকুন। মাংস ততক্ষণ পর্যন্ত কষাতে হবে যতক্ষণ না রসুন এবং চুই ঝাল গুলো সিদ্ধ হবে। এরপর সবশেষে এক চা চামচ ভাজা জিরা গুড়া, এক চা চামচ রাঁধুনি গুড়া দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মজাদার চুইঝাল গরুর মাংসের রেসিপি।
খুলনার চুইঝালের মাংসের সুখ্যাতি
ছাদে গুনে এবং গন্ধে চুইঝাল একটি জনপ্রিয় মসলা হওয়ায় চুইঝালের মাংস শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। শুধু স্বাদের জন্যই নয় এতে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপকারিতাও।
গরুর মাংসের সাথে চুই ঝাল মিশালে গরুর মাংসের স্বাদ দ্বিগুণ বাড়িয়ে এটি আরো লোভনীয় করে তোলে। তাই গরু খাসি কিংবা হাঁসের মাংসে চুইঝাল এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে এটি ছাড়া চলেই না। আর এটি যদি হয় খুলনার চুইঝাল তাহলে তো কোন কথাই নেই। কারণ খুলনায় কেউ একবার গেলে চুইঝাল রেসিপির স্বাদ গ্রহণের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে।
খুলনা চুইঝালের জনপ্রিয়তার জন্য চুইনগর, জিরোপয়েন্টসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো হোটেল-রেস্টুরেন্ট। খুলনার জিরো পয়েন্টের কামরুলের হোটেলের বিক্রেতা শরীফ পোদ্দার ঢাকা পোস্টকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন হোটেলে মাছ, গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হয়।
চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংসের জন্য এই হোটেলটি অনেক বিখ্যাত। চুইঝাল গরুর মাংস খেতেই মানুষ এখানে বেশি আছে। এই হোটেলে দৈনিক ২ মন গরুর মাংস রান্না করে বিক্রি করা হয়।
এতে ২ মন গরুর মাংসে ১৫ থেকে ২০ কেজি চুই ঝাল প্রয়োজন হয়। এই চুই ঝাল কে কেন্দ্র করেই খুলনায় প্রথমে কামরুলের হোটেল এবং পরবর্তীতে আরও ৪০টির মত হোটেল এই এলাকায় গড়ে উঠেছে বলে শরিফ জানান।
এই হোটেলে ক্রেতাদের কাছে প্রতি পিস গরুর মাংস ১৭০ টাকা এবং এক প্লেট ভাত ২০ টাকা করে নেওয়া হয়। সঙ্গে থাকছে বিনামূল্যে ডাল। সব মিলিয়ে ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে একজন মানুষ ভালোভাবে খেতে পারে।
চুইঝালের এর অপকারিতা
আপনি জেনে খুশি হবেন যে চুইঝালের অনেক উপকারিতা থাকলেও আসলে এর কোন অপকারিতা নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, চুইঝাল অনেক উপকারী একটি মসলা জাতীয় খাবার হলেও সাধারণত এর কোন অপকারিতা পাওয়া যায়নি। চুই ঝাল খেয়ে শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার আসলেও আসলে চুইঝালে কোন প্রকার কোন ক্ষতি নেই। এটি বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত মসলা জাতীয় আদর্শ একটি খাবার।
মসলা জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায়। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন এটি খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু হওয়ায় তরকারিতে এটি অতিরিক্ত মাত্রায় দেওয়া যাবে না। তাহলে তরকারি বেস্বাদ হয়ে যাবে এবং কিছুটা শারীরিক জটিলতা দেখা দিবে। চুইঝালের কোন অপকারিতা নেই বলে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং আমাদের দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এর চাষাবাদ ব্যাপক পরিমাণ বেড়েছে।
চুই ঝাল গাছ চেনার উপায়
চুই ঝাল লতা জাতীয় একটি গাছ। এর পাতা, কান্ড, জড় সবকিছুই মসলা হিসেবে খাওয়া যায়। চুই ঝালের পাতা দেখতে পান পাতার মত। চুই গাছের চারাই সারা অঙ্গে অনেকগুলো গিরা রয়েছে। এই গিরা গুলো বৃষ্টি পেলে বড় বড় শিকর বের হয়। তখন এই ডগাগুলোকে কেটে যে কোন বড় গাছের এক হাত দূরত্বে বেঁধে দিলে ওই গাছকে অবলম্বন করে এটি বেড়ে ওঠে। বিশেষ করে এটি আম গাছে খুব ভালো হয়। এই গাছের জন্য আলাদা কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।
আরোও পড়ুন: ড্রাগন ফলের কার্যকরী ২০ টি উপকারিতা। গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা।
শেষ কিছু কথা
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের চুইঝালের যত পুষ্টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম সহ চুইঝাল সম্পর্কে আরো অনেক অজানা তথ্য সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জানিয়েছে। আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরো পোস্ট পেতে www.digitalabida.com এর সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url