স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর ১৬ টি আশ্চর্যজনক উপকারিতা
প্রতিদিন নিয়মিত অ্যাভোকাডো খাচ্ছেন কিন্তু জানেন কি অ্যাভোকাডো খাওয়ার ফলে কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়মিত অ্যাভোকাডোর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হবেন। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো।
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। যা আপনাদের সুস্বাস্থ্য গঠনে অনেক উপকারে আসবে। অ্যাভোকাডো ফলের উপকারিতা ও গণিত। তাই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর ১৬ টি উপকারিতা
অধিক পুষ্টিমান সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডো একটি চমৎকার ফল। বেশিরভাগ ফলে মূলত কার্বোহাইড্রেট থাকে তবে এভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা এ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর ১৬ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নি ই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাড ১৬ টি আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে।
আরোও পড়ুন: দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত। খালি পেটে কলা খেলে কি হয় জানুন
- হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- হজমে সহায়তা করে
- ওজন কমায়
- ঘুম ভালো হয়
- দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
- চুল ও ত্বকের যত্নে
- অস্টিওপেরোসিস প্রতিরোধ করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
- ভ্রুনের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে
- বিষন্নতা কমায়
- অস্টিও আর্থ্রাইটিস উপসরন করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে
- অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে
- দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করে
- উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়: উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং ধমনী ফলকের ধীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোকাডো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া অস্বাভাবিক হার্ট স্পন্দন হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতে অ্যাভোকাডোর ঝুড়ি মেলা ভার।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: অ্যাভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি যা আমাদের শরীরকে জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এছাড়া অ্যাভোকাডোতে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং উদ্ভিজ্জ খনিজ আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
হজমে সহায়তা করে: অ্যাভোকাডো খাদ্য হজমে সহায়তা করে। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অ্যাভোকাডো রাখলে খাবার দ্রুত হজম হয় যার ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়। একটি অ্যাভোকাডোতে ১০ গ্রামের মত ফাইবার থাকে যা হজমে সহায়তা করে।
ওজন কমায়: ওজন কমাতে অ্যাভোকাডো ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষা করে দেখা গেছে খাবারের সঙ্গে অ্যাভোকাডো খেলে ২৩% বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায় যার ফলে এই ফলটি হাওয়ার পাঁচ ঘন্টার মধ্যে তাদের খাওয়ার ইচ্ছা ২৮% কমে যায়। সুতরাং আপনার ডায়েট চার্টে প্রতিদিন অ্যাভোকাডো যোগ করলে এটি স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে কম ক্যালরি খেতে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাসে অভ্যস্ত করবে। ফলে আপনার ওজন কমে যাবে।
ঘুম ভালো হয়: অ্যাভোকাডো তে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরে ক্লান্তি দূর করে এবং ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: অ্যাভোকাডোতে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেরোটিনয়েড থাকে লুটেন এবং জেক্সনথিন। এই লুটেন এবং জেক্সনথিন আমাদের উভয় চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এই দুটি ক্যারোটিনয়েড আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে তবে একসঙ্গে এটি আরো ভালো কাজ করে বলে মনে করে চিকিৎসকরা। এর ফলে চোখে ছানি পড়া দূর হয়।
চুল ও ত্বকের যত্নে: চুল এবং ত্বকের জন্য তৈরি প্রায় প্রসাধনীতে পেন্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি ৫) থাকে। আপনি জানলে অবাক হবেন এভোকাডোতে পেন্টোথেনিক এসিডের পরিমাণ ৪৫% যা ত্বক মশ্চারাইজ করে, ত্বকে লাবণ্য ফিরিয়ে আনে এবং চুল সুন্দর করতে সাহায্য করে।
অস্টিওপেরোসিস প্রতিরোধ করে: অ্যাভোকাডো তে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অস্ট্রিওক্যালসিনের এর সংশ্লেষণ কে সমর্থন করে। এটা থাকা প্রোটিন হাড়ের টিস্যুতে ক্যালসিয়ামকে আবদ্ধ করে। যার ফলে হার্ট শক্তিশালী ও খনিজ করে তোলে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: খাদ্য তালিকায় উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার রাখলে এটি কলরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও কিছু ধরনের ফাইবার অন্তরের প্রবাহ এবং কোষের বিস্তার কমাতে সাহায্য করে যার ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।
ভ্রুনের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে: ফলেট নিউরাল টিউব সাধারণত ত্রুটি এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন একটি করে অ্যাভোগাডো খেলে গর্ভ অবস্থায় ফলেটের প্রস্তাবিত দৈনিক ভাতার ২৫% পর্যন্ত সরবরাহ করতে পারে। এতে থাকা অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণের বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্ক/টিস্যুর বিকাশ ঘটাতে সমর্থন করে।
বিষন্নতা কমায়: অ্যাভোকাডোতে থাকা ফলে দৈনিক মূল্যের প্রায় ২০ শতাংশ অর্ধেক ফল দেয়। ফলেট ডোপামিন, সেরোটোনিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নিম্নস্তরের ফলেট নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারিতা কম এবং বিষন্নতা ঝুঁকি বৃদ্ধির সাথে যুক্ত। উচ্চ স্তরের ফলেট বিষন্নতার ঝুঁকি কমায়।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস উপসরন করে: অ্যাভোকাডো সাপনিন জয়েন্ট গুলোতে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে উপস্থিত থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি ওমেগা-৩ শরীরের ফোলা ভাব কমিয়ে শক্তি আনতে সাহায্য করেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে: অ্যাভোকাডো তে প্রতি অর্ধেক ফলের জন্য ছাদ থেকে আট গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে যার দ্রবণীয় এবং অধ্রবণীয় মিশ্রণ। দ্রবণীয় ফাইবার মলকে নরম করে এবং যাতায়াতের সাহায্য করতে জল শোষণ করে। অন্যদিকে দবণীয় ফাইবার মলের বাল্ক যোগ করে এবং অন্ত্রের ট্রানজিট এর সময় কমায়। যার ফলে অ্যাভোকাডোকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার একটি চমৎকার খাদ্য বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে: অ্যাভোকাডোতে থাকা পর্যন্ত পরিমাণ ফাইবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া খাওয়াই মাইক্রোবিয়াল ভারসাম্য বজায় থাকে। একটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং এর প্রদাহ কমায়।
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করে:
- হৃদরোগ: অ্যাভোকাডোতে মনস্যাচুরেটেড হ্যাঁ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এতে স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় থাকে।
- উচ্চ রক্তচাপ: পটাশিয়াম উপাদান রক্তচাপ কমাতে রক্তনালীর দেওয়ালে শিথিল করতে সাহায্য করে যার ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
- ডায়াবেটিস: ফাইবার কার্বোহাইড্রেট হজম এবং রক্তে শর্করার স্পাইক পরিমিত করে বলে এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে। যার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি করে।
- স্টক: পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকাই এটি গ্রহণের সাথে নিম্ন হারে সম্পর্ক রয়েছে ঘাই এবং মৃত্যুহারের।
উপরের এইসব দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে অ্যাভোকাডো আমাদের সুরক্ষা করে।
উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ: অ্যাভোকাডোতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার। প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যাভোকাডোতে ৭ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। অ্যাভোকাডো তে থাকা ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও অ্যাভোকাডোতে রক্তে সুগারের মাত্রা কম বলে এটি পরিমিত মাত্রায় ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরাও খেতে পারেন।
অ্যাভোকাডোর বাংলা নাম কি
অ্যাভোকাডো ফলের বাংলা নাম অ্যালিগেটর নাশপাতি বা অ্যাভোকাডো নাশপাতি (পার্শিয়া আমেরিকানা) হল লরেল পরিবারের (Lauraceae) একটি মাঝারি আকারের চিরহরিৎ গাছ। এটি সর্বপ্রথম আমেরিকার স্থানীয় এবং ৫ হাজার বছরের বেশি আগে মেসোআমেরিকাতে গৃহপালিত হয়েছিল। এমনকি এটি তার বড় এবং অস্বাভাবিক তৈলাক্ত ফলের জন্য পুরস্কৃতও হয়েছিল।
অ্যাভোকাডোর পুষ্টিগুণ
অ্যাভোকাডো প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। চলুন জেনে নিই প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যাভোকাডোতে কি পরিমান পুষ্টিগুণ আছে সেই সম্পর্কে।
- ক্যালোরি ১৬০
- প্রোটিন ২ গ্রাম
- মোট চর্বি ১৫ গ্রাম
- সম্পৃক্ত চর্বি ২.১ গ্রাম
- পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ১.৮ গ্রাম
- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ৯.৮ গ্রাম
- কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম
- শর্করা ৯ গ্রাম
- চিনি ০.৭ গ্রাম
- খাদ্য তালিকা গত ফাইবার ৭ গ্রাম
- ভিটামিন এ ১৪৬ IU
- ভিটামিন ই ২.১ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি ১০ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম ৪৮৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেশিয়াম ২৯ মিলিগ্রাম
- আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ১২ মিলিগ্রাম
- ভোরের তারা ৫২ মিলিগ্রাম
- দস্তা ০.৬ মিলিগ্রাম
অ্যাভোকাডো ফলের স্বাদ কেমন
অ্যাভোকাডো ফলটি সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। তারা জানেই না এই ফলটির স্বাদ কেমন সেই সম্পর্কে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সাথে অ্যাভোকাডো ফলের স্বাদ সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই অ্যাভোকাডো হলে স্বাদ কেমন সে সম্পর্কে।
অ্যাভোকাডো ফলটির একটি অনন্য গন্ধ আছে, পাকা অবস্থায় এই ফলটির স্বাদ মাটি, ঘাস যুক্ত এবং ক্রিমি। তবে এই ফলটি বেশ তাজা। অ্যাভোকাডোর পুষ্টিগুণ ক্রিমের সাথে তুলনা করা হয় বলে এই ফলটি 'বন ক্রিম' নামে পরিচিত। গ্রীষ্মমন্ডলীয় আমেরিকানরা এই ফলটিকে খাদ্য হিসেবে খেয়ে থাকে।
অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম
অ্যাভোকাডো ফলটি অনেক উপকারী একটি ফল। এটি শুধু আমাদের দেশেই নয় এটি সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় ফল। এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের অ্যাভোকাডো ফলটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো।
আরোও পড়ুন: চুইঝালের যত পুষ্টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম
অ্যাভোকাডো ফলের সবুজাভ বা হলুদ বর্ণের মাংসের সাথে মাখনের সামঞ্জস্য রয়েছে। এটি খেতে কিছুটা বাদামের মত। এই ফলটি সাধারণত সালাদ হিসেবে খায়। বিশ্বের আধুনিক দেশগুলোতে এই ফলটি ডেজার্ট হিসেবে খাওয়া হয়। এটি কাঁচা বা রান্না সব রকম ভাবেই খাওয়া যায়। এই ফলটিতে রয়েছে মৃদু গন্ধ এবং ক্রিমি টেকচার যার ফলে এগুলোকে যেকোনো খাবারের সাথে সংযোগ করে খাওয়া যায়। অ্যাভোকাডো খাওয়ার কয়েকটি নিয়ম চলুন জেনে নিই।
- অ্যাভোকাডো স্লাইস করে খাওয়া
- অ্যাভোকাডো বেকড এগ বোট
- অ্যাভোকাডো টোস্ট
- মেয়োনিজের বিকল্প হিসেবে অ্যাভোকাডো
- অ্যাভোকাডোর সালাদ
অ্যাভোকাডো স্লাইস করে খাওয়া: ছোট ছোট করে স্লাইস করে কেটে সকালের নাস্তায় অ্যাভোকাডো খাওয়া যায়। যেকোনো খাবারকে সাজিয়ে তুলতে অ্যাভোকাডো বিকল্প নেই। দুপুরের খাবারের সাথেই হোক বা রাতের খাবার এই হোক যেকোনো সময় অ্যাভোকাডো স্লাইস করে কেটে এতে সামান্য লবণ এবং গোলমরিচ গুঁড়ো যুক্ত করে সালাদের মতো করে খেতে পারেন। এভাবে অ্যাভোকাডো খেলে এতে থাকা পুষ্টি সম্পূর্ণরূপে লাভ করা যায়।
অ্যাভোকাডো বেকড এগ বোট: অ্যাভোকাডো খাওয়ার একটি অন্যতম সেরা উপায় হচ্ছে অ্যাভোকাডো বেকড এগ বোট। অ্যাভোকাডো বেকড এগ বোট বানানোর জন্য প্রথমে অ্যাভোকাডো দুফালি করে কেটে বড় দানা বের করে নিতে হবে। এরপর ফ্রাইং প্যানে বসিয়ে তাতে পিনাট বাটার দিয়ে তার ওপর দুফালি অ্যাভোকাডো রেখে ডিম ফাটিয়ে দিন। এরপর সামান্য লবণ এবং গোলমরিচ ছিটিয়ে ৭ থেকে ৮ মিনিট রান্না করলেই তৈরি হয়ে যাবে অ্যাভোকাডো বেকড এগ বোট। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের জন্যও অনেক উপকারী।
অ্যাভোকাডো টোস্ট: অ্যাভোকাডোর টোস্ট অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি খাবার। যেটি ছোট বড় সকলেই অনেক পছন্দ সহকারে খায়। এটি বানানোর জন্য প্রথমে অ্যাভোকাডো ফলের নরম মাংসল অংশ বের করে এটিকে একটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ঘন মসৃণ ফেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এরপর এই পেস্টের সাথে সামান্য লবণ, গোলমরিচ গুঁড়ো এবং দুই কোয়া রসুন থেতলে দিতে হবে। অন্যদিকে পা রুটি টুকরো সোনালী ও শক্ত হওয়া পর্যন্ত টোস্ট করতে হবে। পোস্টের উপর অ্যাভোকাডোর পেস্ট লাগিয়ে খেলে দেখবেন এটি কতটা সুস্বাদু।
মেয়োনিজের বিকল্প হিসেবে অ্যাভোকাডো: স্যান্ডউইচ বা বার্গার তৈরির জন্য স্প্রেড হিসেবে মেয়োনিজ ব্যবহার করা হয়। ঘরে বসে স্যান্ডউইচ বা বার্গার বানাতে চাইলে মেয়োনিজের পরিবর্তে স্প্রেড হিসেবে অ্যাভোকাডো ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ঘরে বানানো বার্গার বা স্যান্ডউইচ এর স্বাদ যেমন বেড়ে যাবে ঠিক তেমনি এটি অনেক হেলদিও হবে।
অ্যাভোকাডোর সালাদ: যেকোনো সালাদের সাথে অ্যাভোকাডো স্লাইস বা কিউব করে কেটে সালাদের সাথে যুক্ত করলে এটি হয়ে উঠবে অনেক সুস্বাদু। তবে মনে রাখবেন সালাদের সাথে অ্যাভোকাডো ছোট ছোট টুকরো করে কাটলে এর স্বাদ অনেক বেড়ে যায়। যেকোনো সালাদে অ্যাভোকাডো কেটে দেওয়া যায়।
অ্যাভোকাডোর সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ কোনটি
অ্যাভোকাডো অনেক পুষ্টিকর একটি ফল। এর পুষ্টিগুণ বলে শেষ করা যাবে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের অ্যাভোকাডোর সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই অ্যাভোকাডোর সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ সম্পর্কে।
অ্যাভোকাডোর সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ হচ্ছে বাইরের অংশ। অ্যাভোকাডোর সামান্য রুক্ষ টুকরোতে প্রচুর পরিমাণ ক্যারোটিনয়েড লুকিয়ে থাকে। ক্যারোটিনয়েড গুলো মূলত এন্টিঅক্সিডেন্ট। যদিও আপনি তাদেরকে প্রাকৃতিক রঙ্গন হিসেবে চিনে নিতে পারেন। এরা গাজর এপ্রিকট এবং ফ্লেমিঙ্গকে তাদের রং দেয়।
অ্যাভোকাডো খেলে কি হয়
অ্যাভোকাডো অনেক স্বাস্থ্য উপকারী একটি ফল। প্রতিদিন অ্যাভোকাডো খেলে এটি লিপিড প্রোফাইলে উন্নতি করে যার ফলে হার্টের উপর একটি প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে। পাঁচ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন একটি করে অ্যাভোকাডো খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমতে পারে। নিয়মিত অ্যাভোকাডো খেলে আপনার লিপিড প্রোফাইল উন্নত করে যার ফলে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এল ডি এল এর মাত্রা কমায় এবং এইচ ডি এল এর মাত্রা বাড়ায়।
অ্যাভোকাডো কোথায় পাওয়া যায়
মাখনফল বা অ্যাভোকাডোফলের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Persea Americana. এই ফলটি মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকায় স্থানীয় উদ্ভিদ। এটি লসেরি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই ফলটির খোসা কুমিরের গায়ের মত অমসৃণ হওয়ায় এটি কুমির নাশপাতি হিসেবেও পরিচিত।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ১০ হেক্টর জমিতে অ্যাভোকাডো ফলের চাষ হয় এবং প্রতিবছর এর চাহিদা ৬ হাজার টন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন বগুড়া, রাজশাহী, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং খাগড়াছড়িতে বাণিজ্যিকভাবে এই অ্যাভোকাডো চাষ করে সফল হচ্ছেন চাষীরা। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন জায়গার কৃষিবিদরা নিজ উদ্যোগে এখনো আরো গবেষণা করে যাচ্ছে এই ফল সম্পর্কে।
কোন জাতের অ্যাভোকাডো বেশি ভালো
প্রায় সব ধরনের অ্যাভোকাডোর মধ্যে হ্যাস অ্যাভোকাডোতে তেলের পরিমাণ বেশি থাকে প্রায় ১৮ শতাংশ। যার ফলে এটি টেক্সচারটিকে আরো বেশি ক্রিমি করে তোলে তাই অ্যাভোকাডোর হ্যাস যাত্রী সকলের পছন্দের। অন্যদিকে ভারতীয় অ্যাডোকাডোতে তেলের পরিমাণ অনেক কম প্রায় ১২ শতাংশ। যা টেক্সচারকে কিছুটা কম ক্রিমি করে। কিন্তু এই জাতের অ্যাভোকাডোতে স্বাদ একটু বেশি। এই জাতের অ্যাভোকাডোর স্বাদ কিছুটা বাদামের মত।
অ্যাভোকাডো কখন খেতে হয়
অ্যাভোকাডো ফলটি সাধারণত পাকলে খেতে হয়। ফলটির বাইরের আবরণ যখন গাঢ় সবুজ থেকে প্রায় কালো হয়ে আসবে তখন এই ফলটি খাওয়ার উপযুক্ত হবে। যদি একটি অ্যাভোকাডো কালো দাগযুক্ত সবুজ বা গারো সবুজ হয় তবে বুঝবেন এটি খাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। অ্যাভোকাডো খাওয়ার জন্য ফলটি পাকা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
অ্যাভোকাডো ফলের দাম
অ্যাভোকাডো ফলটি বিদেশি ফল হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে এর চাষাবাদ হচ্ছে অনেক। উপকারিতার দিক দিয়ে বিবেচনা করে এই ফলটিকে সুপারফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রতি কেজি অ্যাভোকাডো ফল ৯০০ থেকে ১৫০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। অ্যাভোকাডো অনেক উপকারী একটি ফল। এতে থাকা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত উপাদান ডিম্বানোর স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করে।
ত্বকের যত্নে অ্যাভোকাডো তেলের উপকারিতা
অ্যাভোকাডোর তেল ত্বকের জন্য অনেক স্বাস্থ্যকর একটি উপাদান। অ্যাভোকাড তেলে প্রচুর পরিমাণ খনিজ এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা আপনার ত্বককে নিরাময় প্রশমিত এবং পুষ্ট করতে সাহায্য করে। অ্যাভোকাডো তেলে থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে স্থিতিস্থাপক শক্তিশালী এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে।স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই ত্বকের যত্নে অ্যাভোকাডো তেলের উপকারিতা সম্পর্কে।
- ব্রণ প্রতিরোধ
- ত্বকের ময়শ্চারাইজেশন
- সোরিয়াসিস এবং একজিমা দূর করে
- রোদে পোড়া দূর করে
- ক্ষত নিরাময়
- বার্ধক্য লক্ষণ কমাই
- মাথার ত্বক ও নখের উন্নতি করে
- ত্বক শক্ত করে
- ত্বকের প্রদাহ দূর করে
- মসৃণ করে ও বলিরেখা দূর করে
- ডার্ক স্পট কমায়
- ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে
ব্রণ প্রতিরোধ: অ্যাভোকাডো তেলে উপস্থিত থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ব্রণের চিকিৎসার জন্য একটি উত্তম চিকিৎসা। ত্বক রাতারাতি হাইড্রেট করতে এই তেলের জুড়ি মেলা ভার। যার ফলে এই তেল ব্যবহারে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
ত্বকের ময়শ্চারাইজেশন: মুখে অ্যাভোকাডোর তেল ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বককে মশ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে। এই তাইলে রয়েছে প্রচুর পরিমান পটাশিয়াম লেসিথিন এবং ভিটামিন ই যা ত্বক সহজেই শোষণ করতে পারে ফলে ত্বক দ্রুত মশ্চারাইজিং এবং পুষ্টিকর হয়। এই তেলে থাকা প্রাকৃতিক মস্চারাইজিং উপাদান ত্বকের রুক্ষতা এবং শুষ্কতা গঠন উন্নয়ন করে।
সোরিয়াসিস এবং একজিমা দূর করে: অ্যাভোকাডো তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের। যা ফ্লাকি এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য সহায়ক। সোরিয়াসিস এবং একজিমা ত্বককে চুলকানি,ফ্লাকি এবং জ্বালাময় ভাব করে তোলে। এরকম সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই অ্যাভোকাডো তেল আপনার ত্বকে প্রশান্ত এবং হাইড্রেট করতে সাহায্য করবে।
রোদে পোড়া দূর করে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাভোকাডো তেলে থাকা ভিটামিন ই, ডি লেসিথিন এবং প্রোটিন ত্বকের নিরাময়কে বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বকে অ্যাভোকাডো তেল প্রয়োগ করলে রোদে পোড়া ভাব কমে। এছাড়াও অ্যাভোকাডো তেলে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট রোদে পোড়া উপসর্গ, জ্বালাপোড়া এবং লাল ভাব কমাতে পারে।
ক্ষত নিরাময়: অ্যাভোকাডো তেলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের যে কোন ক্ষতের প্রদাহ এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। এই তেলটি কোলাজেন সংশ্লেষণকে উৎসাহিত করে নতুন সংযোজক টিস্যুগঠনে প্রচার করে বলে এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়।
বার্ধক্য লক্ষণ কমাই: বয়সে সাথে সাথে আমাদের ত্বকের কোলাজেন স্তর ভেঙ্গে যায়। অ্যাভোকাডো তেল কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে পারে যার ফলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নয়ন করতে পারে। অ্যাভোকাডো তেলে উপস্থিত থাকা অলিক এসিড এবং অপরিহার্য ফ্যাটি এসিড কোলাজেন সংশ্লেষণকে উৎসাহিত করে। যার ফলে ত্বক বার্ধক্য হওয়া থেকে মুক্তি পায়।
মাথার ত্বক ও নখের উন্নতি করে: অ্যাভোকাডো তেল শুষ্ক এবং ভঙ্গুর নখের উন্নতিতে কাজ করে। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে নখের চারপাশের ত্বককে নরম করে এবং ক্ষতি হওয়া থেকে বিরত রাখে। এছাড়া মাথার ত্বকের খুশকি সমস্যায় এটি মাস্ক হিসেবে কাজ করে। তাই অ্যাভোকাডো মাস্ক প্রয়োগ করার পরে এটি মাথার ত্বক ভালোভাবে পুষ্ট ও মশ্চারাইড অনুভব করাতে সাহায্য করে।
ত্বক শক্ত করে: এভোকাডো তেলে উপস্থিত থাকা ক্যারোটিনয়েড এবং ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের কোলাজেন ভঙ্গনকে বাধা দেই। এইটেলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো পরিবেশগত কারণে ত্বকের যেকোন ক্ষতি হওয়া থেকে রোধ করে। যার ফলে ত্বক টানটান এবং মজবুত থাকে।
ত্বকের প্রদাহ দূর করে: অ্যাভোকাডো তেলে থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি ত্বকের বিরক্তিকর লাল এবং সমস্যাযুক্ত ত্বককে শান্ত করতে সাহায্য করে। এজাতীয় উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে লিনোলিক অ্যাসিড এবং অলিক অ্যাসিড যা ত্বকের প্রদাহ দূর করে।
মসৃণ করে ও বলিরেখা দূর করে: অ্যাভোকাডো তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ফ্রি যারডিকেল গুলোকে নিরপেক্ষ করে যার ফলে অকাল বার্ধক্য রোধ হয়। এই তেলে উপস্থিত থাকা বিটা ক্যারোটিন এবং ফ্যাটি এসিড কোলাজেন সংশ্লেষণকে উন্নতি করতে পারে। যার ফলে ত্বক মসৃণ হয়, বলিরেখা দূর হয় এবং সুক্ষ রেখার উপস্থিতি কমায়।
ডার্ক স্পট কমায়: অ্যাভোকাডোর তেলে থাকা ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি ত্বকের ইউবি গতি এবং ফ্রী রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যার ফলে ত্বকের থাকা কালো দাগ এবং অন্যান্য অকাল বার্ধক্য রোধ করে।
ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে: অ্যাভোকাডোর তেল একটি ইমোলিয়েন্ট হিসেবে ত্বকের আদ্রতার মাত্রা বাড়ায়। যার ফলে ত্বক মসৃণ এবং নরম হয়। অ্যাভোকাডো তেলে থাকা ভিটামিন এ,ভিটামিন ই, ফ্যাটি এসিড, লেসিথিন এবং পটাশিয়াম এইটেল এর হাইড্রেটিং উপাদান।
অ্যাভোকাডোর বীজের উপকারিতা
আপনি জেনে অবাক হবেন যে এভোকাডো ফলটি শুধু উপকারী নয় এর বীজেও রয়েছে রয়েছে অনেক উপকারীতা। অ্যাভোকাডোর বীজের নির্যাস অনেক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বায়োএকটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন অ্যাভোকাডোর বীজে অ্যান্টি হাইপারগ্লাইসেমিক, এন্টি ক্যান্সার, এন্টি হাইপারকোলেস্টরেলেমিয়া, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি ইনফ্লামেটরি, অ্যান্টি নিউরোজেনারেটিভ প্রভৃতি উপাদান গুলো স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে যে কিভাবে এই বৈশিষ্ট্য গুলি খাদ্য তৈরি বা শক্তিশালী করতে ব্যবহার করা যেতে পারে সেই সম্পর্কে।
অ্যাভোকাডো ফলের অপকারিতা
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখন সবাই জানি। তবে উপকারের পাশাপাশি এতে কিছু অপকারিতাও রয়েছে যা আমাদের প্রত্যেকের জেনে থাকা উচিত। তবে এই ফলের উপকারিতার পরিমাণই বেশি। অ্যাভোকাডোতে সামান্য কিছু উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নিই অ্যাভোকাডোর অপকারিতা সম্পর্কে।
- অ্যাভোকাডো ফলে হেলদি ফ্যাট থাকলেও যদি এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয় তাহলে শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
- অ্যাভোকাডোতে থাকা ক্যালসিয়াম একদিকে যেমন আমাদের দাঁতের জন্য উপকারী ঠিক তেমনি অন্যদিকে এই উপাদানটি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে এর ফলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।
- ল্যাটেক্স এলার্জি রোগীদের জন্য অ্যাভোকাডো ফলটি নিষেধ কারণ এটি খেলে এইসব রোগীদের এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই অ্যাভোকাডো খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
অ্যাভোকাডোতে কিছু অপকারিতা থাকলেও এটি সামান্য। পুষ্টিগুণ থেকে বিবেচনা করে অ্যাভোকাডো কে সুপার ফুড বলা হয়। তাই পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ফলটি আপনার ডায়েট চার্টের অন্যতম উপকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অ্যাভোকাডো খেলে কি ওজন বাড়ে
যাদের ওজন কিছুটা বেশি তারা যে কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে ভাবে এটা খেলে কি ওজন বাড়ে। সব সময় তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা কাজ করে। অনেকেই মনে করে অ্যাভোকাডো খেলে ওজন বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা এই আঁটিকেলের এই অংশে অ্যাভোকাডো খেলে কি ওজন বাড়ে এই প্রশ্নের উত্তর দিব আজ।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে অ্যাভোকাডো খেলে ওজন বাড়ে না বরং কমে যায়। অ্যাভোকাডো ফলটি ওজন কমানোর উপযোগী একটি ফল। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে খাবারের সঙ্গে অ্যাভোকাডো যুক্ত করে খেলে ২৩ শতাংশ বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায়। এই ফলটি যারা খান তাদের পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টায় খাওয়ার ইচ্ছা ২৮ শতাংশ কমে যায়। যার ফলে খাবার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সেই সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই বলা যায় অ্যাভোকাডো খেলে ওজন বাড়ে না বরং কমে।
অ্যাভোকাডো গাছের জন্য কোন মাটি বেশি ভালো?
অ্যাভোকাডো গাছ আলগা, সমৃদ্ধ, ভালো নিকাশি মাটিতে ভালো হয়। ড্রেনেজ গর্ত আছে এমন একটি পাত্রে ভালো মানের মাটিতে অ্যাভোকাডো চারা রোপন করুন। অ্যাভোকাডো গাছের বড় শিকড় এবং দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য মাটি বালুকনাময় হতে পারে যাতে শিকড় গুলি পচা ছত্রাকের শিকার না হয় সেই জন্য।
আরোও পড়ুন: পেয়ারা পাতার ১৬ টি বিশেষ উপকারিতা-চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা
শেষ কিছু কথা
আজকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক উপকারিতা এই আর্টিকেল এর মধ্যে আমরা আপনাদের অ্যাভোকাডো ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো নানা অজানা বিষয়ে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে www.digitalabida.com এই ওয়েবসাইটটির সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url