গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা

 গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাচ্ছেন কিন্তু জানেন কি গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ফলে কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায়-ডাবের-পানি-খাওয়ার-২০-টি-উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদেরকে গর্ভধারণের তিন মাস থেকেই ডাবের পানি খাওয়া শুরু করা উচিত। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান যা গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য উপকারী। চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা সম্পর্কে। 

পেজের সূচিপত্র: গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় গর্ভে থাকা সন্তানটি ভালো থাকা নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের দুশ্চিন্তার কোন শেষ নাই। গর্ভবতী মায়েদের পাশাপাশি পরিবারের সকলের গর্ভবতী নারীর জন্য যত্নশীল হওয়া উচিত। কারণ গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিলে তবেই একটি সুস্থ সুন্দর বাচ্চা পৃথিবীতে আসবে। গর্ভবতী নারীকে পুষ্টিকর খাবার দিলে তবে গর্ভে থাকা বাচ্চাটির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।

আরোও পড়ুন: বাচ্চাদের রুচি বাড়ানোর উপায়-বাচ্চাদের কি খাওয়ালে খিদে বাড়ে

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক।গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা আর্টিকেলে আমরা আপনাদের গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা সহ ডাবের পানির আরো অনেক উপকারিতার কথা জানাবো। আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা সম্পর্কে। 

  • প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণ করে 
  • ইলেক্ট্রোলাইট যোগ করে 
  • হজমে সাহায্য করে
  • সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করে 
  • হাইপার টেনশন প্রতিরোধ করে 
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 
  • ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস 
  • ক্ষতিকারক উপাদান বের করে 
  • বিপাক প্রক্রিয়া উন্নয়ন করে 
  • কিডনির কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় 
  • কম ক্যালরি ও চিনি থাকে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে 
  • বুকের জ্বালাপোড়া কমাতে 
  • শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে 
  • শিশুর মস্তিষ্ক ভালো রাখতে
  • শরীরে পিএইচ স্তন নিয়ন্ত্রণ করতে 
  • কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে 
  • গর্ভাবস্থায় ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে
  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে 
  • মাতৃদুগ্ধ তৈরিতে

প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণ করে: গর্ভবতী মায়েদের স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় পানির চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কারণ তার নিজের চাহিদার পাশাপাশি সাথে থাকা অনাগত সন্তানের পানির চাহিদাও পূরণ করতে হয়। তাই নিয়মিত ডাব খেলে প্রতিদিনের পানির চাহিদা পূরণ হয়। এটি শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।

ইলেক্ট্রোলাইট যোগ করে: প্রতিটা গর্ভবতী নারীর শরীরে প্রচুর পরিমাণ ইলেকট্রোলাইটের প্রয়োজন হয়। আর এই ইলেকট্রোলাইট শরীর হাইড্রেট করতে সাহায্য করে। ডাবের পানিতে থাকা সোডিয়াম ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরে প্রয়োজনীয় চার্জ দিতে সাহায্য করে।

হজমে সাহায্য করে: গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে এটি গর্ভবতী নারীদের হজমে সাহায্য করে। অনেক সময় অতিরিক্ত রোদের কারণে শরীরে তরলের ঘাটতি হয় এবং শরীর আর্দ্রতা হারায়। এ সময় ডাবের পানি শরীরে তরল উপাদান এবং শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: গর্ভকালীন সময় একটি জটিল সমস্যা হচ্ছে ওজন ধরে রাখা। কারণ গর্ভকালীন সময় অনেক মেয়েদের ওজন বেড়ে যায় আবার অনেকের ওজন কমে যায়। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ডাবের পানিতে থাকা জিরো ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল ওজন বৃদ্ধি হওয়া থেকে বিরত রাখে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে পারেন।

হাইপার টেনশন প্রতিরোধ করে: প্রায় সময় দুশ্চিন্তাজনিত কারণে গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময় হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপারটেনশন মা এবং গর্ভে থাকা বাচ্চা উভয়ের জন্যই অনেক ক্ষতিকর। গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে এটি হাইপার টেনশন কমিয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ডাবের পানিতে থাকা লিফোরিক এসিড আমাদের শরীরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস: ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকায় এটি ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত ডাবের পানি খেলে প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ক্যালসিয়ামের যোগান দেয়।

ক্ষতিকারক উপাদান বের করে: গর্ভকালীন সময় ডাবের পানি খেলে এটি শরীরে থাকা ক্ষতিকারক উপাদান বের করতে সাহায্য করে।

বিপাক প্রক্রিয়া উন্নয়ন করে: ডাবে থাকা আঁশ গর্ভবতী মহিলাদের বিপাক প্রক্রিয়ার উন্নয়ন করতে সাহায্য করে।

কিডনির কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়: ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া উচিত।

কম ক্যালরি ও চিনি থাকে: ডাবের পানিতে অন্য যেকোন পানীয়ের তুলনায় অনেক কম ক্যালোরি এবং চিনি থাকে। যার ফলে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি পানীয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে: গর্ভকালীন সময় গর্ভবতী নারীদের কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক সাধারণ একটি সমস্যা। গর্ভাবস্থায় সাধারণত প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। তাই গর্ভকালীন সময় ডাবের পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বুকের জ্বালাপোড়া কমাতে: গর্ভকালীন সময় প্রায় প্রতিটা গর্ভবতী মায়ের বুক জ্বালাপোড়া এবং অস্বস্তি বোধ একটি সাধারন সমস্যা। গর্ভকালীন সময় এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অবশ্য আপনাকে প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে হবে। কারণ ডাবের পানি আপনার শরীরে থাকা এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে যার ফলে গর্ভ অবস্থায় হজমের সমস্যা এবং বুক জ্বালা পোড়ার সমস্যা দূর হয়।

শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে: গর্ভকালীন সময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায় প্রায় ৫০ শতাংশ। যার ফলে গর্ভবতী মেয়েদের পা এবং পায়ের পাতা ফুলে যায়। ফলে রক্ত চলাচল কম হলে পায়ে ব্যথা শুরু হয়। তাই গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে শরীরের রক্ত চলাচলের গতি বৃদ্ধি পায় এবং পা ব্যথা ও পা ফোলার মতো সমস্যা দূর হয়।

শিশুর মস্তিষ্ক ভালো রাখতে: গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে। তাই গর্ভকালীন সময় ডাবের পানি খাওয়া গর্ভবতী মা এবং গর্ভে থাকা শিশু উভয়ের জন্যই অনেক উপকারী।

শরীরে পিএইচ স্তন নিয়ন্ত্রণ করতে: ডাবের পানিতে পাঁচটি ইলেকট্রোলাইটের অন্তর্নিহিত উপস্থিত থাকে যার ফলে গর্ভ অবস্থায় এটি আপনার শরীরে পিএইচ এর স্তর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তনের ফলে হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় তাই ডাবের পানি খেলে এটি নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে: ডাবের পানিতে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান। গর্ভকালীন সময় এসব উপাদান উপস্থিতির কারণে গর্ভবতীর প্রসাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যা গর্ভ অবস্থায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় প্রসবের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে কিডনিতে পাথরের গঠনের ঝুঁকি অনেক কমে যায়

গর্ভাবস্থায় ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে: গর্ভকালীন সময় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে এটি শরীরকে হাইড্রয়েড করে। যার ফলে গর্ভের বাচ্চার ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে এবং গর্ভধারণের সময় আপনার স্ট্রেস মার্ক গুলো কম করে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে: ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ অনেক কম থাকে তাই ডাবের পানি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। গর্ভকালীন সময় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া উচিত।

মাতৃদুগ্ধ তৈরিতে: গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে এটি গরমে থাকা শিশুটির জন্য পুষ্টিকর মাতৃদুগ্ধ তৈরিতে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও নারিকেল তেলে থাকা লরিক এসিড গর্ভবতী মায়ের ল্যাকটেশন চলাকালীন স্তন দুধ তৈরিতে প্রধান সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া ৭ টি অপকারিতা 

প্রতিটা জিনিসের উপকারের পাশাপাশি অপকারিতাও রয়েছে। আমরা জানি ডাব আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি পানীয়। কিন্তু তাই বলে যে এর কোন ক্ষতিকারক দিক নেই সেটি ভাবা একেবারেই ভুল। কারণ ডাবের পানিতেও উপকারের পাশাপাশি কিছুটা অপকারিতা ও রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের গর্ব অবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া ৭ টি অপকারিতার কথা সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া ৭ টি অপকারিতা সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায়-ডাবের-পানি-খাওয়া-৭-টি-অপকারিতা

  • ডাবের পানি পরিমিত মাত্রায় খেতে হবে বেশি খেলে এটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 
  • অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। 
  • অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। 
  • ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম সোডিয়াম ম্যাগনেসিয়াম সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। যা অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে উচ্চ রক্তচাপ ইলেকট্রোলাইট ইত্যাদি বাড়িয়ে বা কমিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়া সম্ভাবনা বেশি।
  • কিডনি রোগীদের জন্য ডাবের পানি খাওয়া অনেক ক্ষতিকারক। কিডনি রোগীরা ডাবের পানি খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলবেন।
  • কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে এলার্জি সমস্যা বেড়ে যায়। তাই যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর ডাবের পানি খাবেন।
  • যাদের ঠান্ডা বা হাঁপানির রোগ আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর ডাবের পানি খাবেন। কারণ অনেক সময় খাবারের রোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
  • ডাবের পানির পুষ্টিগুণ

    গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই আর্টিকেল এর এই অংশে চলুন জেনে নেই ডাবের পানির পুষ্টিগুন সম্পর্কে। 

    আরোও পড়ুন: পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির সেরা ১৫ টি উপায়-পাইলস এর এলোপ্যাথিক ওষুধের নাম

    ডাবের পানির পুষ্টি উপাদান 

    পানি ৯৫ শতাংশ 

    পটাশিয়াম ০.২৫ শতাংশ 

    ক্যালসিয়াম ০.৬৯ শতাংশ 

    ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড ০.৫৯ শতাংশ 

    ভোজপুরি এসিড ০.৫৬ শতাংশ 

    নাইট্রোজেন ০.০৫ শতাংশ 

    আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানি পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

    চিনি ০.৮০ গ্রাম

    লৌহ ০.৫ গ্রাম 

    প্রোটিন ০.৭২ গ্রাম 

    আঁশ ০.৬২ গ্রাম 

    চর্বি ০.২০ গ্রাম 

    এছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে গর্ভবতী মেয়েদের জন্য এটি অনেক উপকারী বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

    গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া যাবে কি

    অনেকের মনে এই প্রশ্ন থাকে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া যাবে কিনা সেটি নিয়ে। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে গর্ভ অবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করার যাবে না। এতে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে যা গর্ভবতী এবং গর্ভে থাকা শিশুর জন্য অনেক উপকারী। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা ডাবের পানি খেলে গর্ভবতীদের শারীরিক জটিলতা যেমন কমে যায় ঠিক তেমনি গর্ভে থাকা শিশুটির মস্তিষ্ক ভালো রাখতে ডাবের পানি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ডাবের পানি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

    ত্বক ফর্সা করতে ডাবের পানির কার্যকারিতা 

    গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীদের দুশ্চিন্তার আরও একটি বিষয় হচ্ছে গর্ভে থাকা সন্তানটি দেখতে কেমন হবে সেটি নিয়ে। যদিও এটি সম্পূর্ণ সৃষ্টিকর্তার হাতে নির্ধারিত। এতে কারোর কোন হাত নেই। সৃষ্টিকর্তা যাকে খুশি তাকে তেমন সন্তান দেন। তবে বৈজ্ঞানিক অনেক গবেষণার ফলে দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় গর্ভে থাকা শিশুর গায়ের রং ফর্সা হতে নারিকেল বেশ কার্যকরী। 

    বাচ্চা গর্ভে থাকার সময় গর্ভবতী মা যদি ডাবের পানি নিয়মিত খান এবং ডাবের মধ্যে থাকা নারিকেল খান তাহলে গর্ভে থাকা শিশুটির গায়ের রং ফর্সা হয় বলে ধারণা করেছেন গবেষকরা। এছাড়াও গর্ভকালীন সময় বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হতে দুধ এবং জাফরান বেশ কার্যকরী বলে দাবি করেন তারা। তাই তারা দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

    গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়া উপকারিতা 

    আপনাদের মধ্যে অনেকেই ডাব খাওয়ার পর ডাবের শাঁস ফেলে দেয়। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে এটা ডাবের শাঁসে রয়েছে ডাবের মতই পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরে অনেক ধরনের পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই অংশে গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব। চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

    • গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা ডাবের শাঁস খেলে তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
    • গর্ভবতী মহিলাদের ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু গর্ভবতী মহিলারা ডাবের শাঁস খেলে দীর্ঘক্ষণ পেটভরা থাকে যার ফলে ঘনঘন খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। 
    • গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভে থাকা সন্তানের সোডিয়াম ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে ডাবের শাঁসের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
    • গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খেলে এতে ডাবের মতোই পুষ্টি উপকার পাওয়া যায়।
    • গর্ভাবস্থায় ডাবের শাঁস খেলে গর্ভে থাকা সন্তানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 
    • গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে ডাবের শাঁসের কার্যকারিতা অনেক বেশি।

    গর্ভাবস্থায় নারিকেল খাওয়া যাবে কি

    গর্ভাবস্থায় নারিকেল খাওয়া গর্ভবতী মা এবং গর্ভে থাকা শিশুর জন্য অনেক উপকারী। নারিকেল গর্ভে থাকা শিশুর অনেক উপকার করে থাকে। গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের নারিকেল খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরে নানা ধরনের সুবিধা সরবরাহ করে থাকেন। তবে মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় নারিকেল বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না। অতি অল্প পরিমাণ খেতে হবে।

    সকালে ডাবের পানি খেলে কি হয় 

    গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের সকালে ডাবের পানি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানাবো। অনেকেই মনে করেন সকালে ডাব খেলে সেটি ক্ষতিকর কিন্তু এই ধরনের কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ডাবের পানি অনেক বেশি কার্ব থাকে যার ফলে ডাব খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। 

    কিন্তু ডাবের পানিতে রয়েছে এর চেয়েও অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান। পুষ্টিবিদদের মতে ডাবের পানি খেলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। ডাবের পানি হজমে ব্যাপক সহায়তা করে। এটি আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম সঠিকভাবে সরবরাহ করে থাকে।

    ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো 

    ডাবের পানি খাওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় কাজ করে। ডাবের পানি খাওয়ার সময় অনেকের মধ্যেই এই চিন্তাভাবনা কাজ করে যে ডাবের পানি কখন খেলে তা আমাদের শরীরের জন্য ভালো। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো সেই সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নি ডাবের পানি কখন খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী।

    আপনি জেনে খুশি হবেন যে ডাবের পানি যে কোন সময় খেলেই তা আমাদের জন্য উপকারী। তবে সকালবেলায় খালি পেটে ডাবের পানি খেলে সেটি বেশি কার্যকরী। পুষ্টিবিদদের মতে সকাল বেলায় শুধু পানি না খেয়ে তার বদলে ডাবের পানি খেতে পারলে সেটি বেশি উপকার দেবে বলে মনে করেন তারা। সকাল এটি দ্রুত হজমে সহায়তা করে। তাই সকালে ডাবের পানি পান করলে তা আপনার শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী হতে পারে।

    ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতে ডাবের পানি কোমল এবং সতেজ পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে ডাবের পানি চাহিদা ব্যাপক। কচি ডাবের পানি আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং আমাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ডাবের পানি ডায়রিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি, বৃদ্ধ ব্যক্তি এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেশ কার্যকরী একটি পানীয়।

    বর্তমানে আমাদের দেশে প্রক্রিয়া জাতকৃতভাবে ডাবের পানি বাণিজ্যিক আকারে প্রসেসিং করা হয়। ডাবের পানি প্রক্রিয়াজাত করার জন্য প্রথমে ভালো মানের কচি ডাব ভালভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে এর পানি বের করতে হবে। এরপর পরিষ্কার মসৃণ কাপড় দিয়ে সেই পানি ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে যেন কোন শাঁস বা ময়লা না থাকে। এরপর একটি পরিষ্কার কাচের বিকার বা কন্টেইনারে ৯৫ থেকে ১০০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় দশ মিনিট ওয়াটার বাথে রেখে প্রস্তুরাইজেশন করতে হবে।

    প্রস্তুরাইজেশনকৃত ডাবের পানির সাথে ১০০ পিপিএম পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট এবং ০.০৫ শতাংশ কার্বক্সিমিথাইল একসাথে যুক্ত করতে হবে। গরম পানিতে ফুটানো কাঁচের বোতলে গরম অবস্থায় ডাবের পানি ভর্তি করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শুষ্ক এবং ঠান্ডা জায়গায় রেখে সংরক্ষণ করতে হবে। মনে রাখবেন এই প্রক্রিয়ায় ডাবের পানি প্রায় ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত সহজেই সংরক্ষণ করা যায়।

    গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি ঠান্ডা লাগে 

    গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা তাদের খাবারদাবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকে। কোনটি খেলে ভালো এবং কোনটি খেলে খারাপ সেটি নিয়ে সব সময় তারা চিন্তিত। একইভাবে অনেক গর্ভবতী মায়েরা দুশ্চিন্তা করে গর্ভ অবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি ঠান্ডা লাগে এটা নিয়ে। ডাবের পানির উপকারিতার কথা আমরা সকলেই জানি কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে ডাবের পানি খেলে আমাদের কোন ঠান্ডা লাগে না। 

    ডাবের পানি ঠান্ডা মনের হতে পারে অনেকের কারণ এটি আমাদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ডাবের পানিকে শারীরিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক বলে বিবেচনা করা হয়। তবে ডাবের পানিতে ঠান্ডা লাগার কোন ব্যাপার নেই। এটিকে গর্ভবতী মা বা গর্ভের শিশুর ঠান্ডা লাগে না বরং এটি গর্ভবতী মায়েদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শারীরিক ভাবেই স্থিতিশীল থাকতে সাহায্য করে।

    ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

    প্রতিটা খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই তার কিছু নিয়ম থাকে। নিয়ম মেনে খেলে তা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হয় কিন্তু নিয়ম মেনে না খেলে সেটি শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। নিয়ম মেনে ডাবের পানি খেলে আপনি পেতে পারেন অনেক পুষ্টিগুণ। চলুন জেনে নিই ডাবের পানি খাওয়ার কয়েকটি নিয়ম সম্পর্কে। 

    ডাবের-পানি-খাওয়ার-নিয়ম

    • ডাবের পানি খাওয়ার পূর্বে সবসময় মনে রাখতে হবে ডাবটি যেন কচি হয়। কারণ ডাবের বয়স যত বেশি হবে এতে চিনির পরিমাণ তত বাড়তে থাকবে। যা শরীরে উপকারের বদলে ক্ষতি বেশি করবে। তাই কচি ডাব খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। 
    • মনে রাখবেন ডাব কাটার সঙ্গে সঙ্গেই পানি খেয়ে নিতে হবে। ডাব কাটার পর বেশিক্ষণ রাখা ঠিক নয়। 
    • ডাবের পানি খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই এটি যে কোন সময় খাওয়া যায়। তবে মনে রাখবেন খুব রোদ থেকে এসে সঙ্গে সঙ্গেই ডাবের পানি না খাওয়ায় ভালো। রোদ থেকে আসার পর একটু জিরিয়ে নিয়ে তারপর ডাবের পানি খেতে হবে। 
    • ডাবের পানি খাওয়ার সময় এতে আলাদাভাবে চিনি, লবণ, গুড় ইত্যাদি মেশানোর প্রয়োজন নেই।

    গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি প্রেসার বাড়ে

    যাদের উচ্চ ব্লাড প্রেসার আছে তারা যেকোনো কিছু খাওয়ার আগেই প্রেসার বাড়ার চিন্তা করে। গর্ভাবস্থায় কোন নারী যদি উচ্চ ব্লাড প্রেসারের সমস্যায় ভুগে তবে তার জন্য ডাব অনেক উপকারী একটি পানীয়। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি প্রেসার বাড়ে সেই সম্পর্কে গর্ভবতীদের উত্তর দিব।

    আরোও পড়ুন: চুইঝালের যত পুষ্টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম

    আপনি জেনে অবাক হবেন যে, গর্ভাবস্থায় বা যে কোন ব্লাড প্রেসারের রোগী ডাবের পানি খেলে তার প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। ডাবের পানিতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি আমাদের উচ্চ ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই ব্লাড প্রেসারের রোগীদেরকে এবং গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদেরকে নিয়মিত ডাব খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে তাদের প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

    শেষ কিছু কথা 

    গর্ভাবস্থায় ডাবর পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। আজকের গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার ২০টি উপকারিতা ও ৭টি অপকারিতাসহ আরো অজানা অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে www.digitalabida.com এই ওয়েবসাইটটির সঙ্গে থাকুন।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url