দ্রুত কোমরের ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
কোমর ব্যথা অনেক যন্ত্রণাদায়ক একটি অসুখ। এই অসুখে পুরুষের চেয়ে মহিলারা বেশি ভোগে। আপনি কি দ্রুত কোমরে ব্যথা সারানোর উপায় খুঁজছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের দ্রুত কোমরের ব্যথা সারানোর উপায় সম্পর্কে জানাবো।
হাড়ের ক্ষয়, স্নায়ুর সামঞ্জস্য নষ্ট হলে, মেরুদন্ডে টিউমার ও ইনফেকশন হলে রোগীরা কোমর ব্যথায় ভোগে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে দ্রুত কোমরের ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করব।
দ্রুত কোমরের ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়
- বিশ্রাম
- অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ
- ভারী জিনিস না তোলা
- ম্যাসাজ বা হিট থেরাপি
- তেল মালিশ
- অভ্যাস পরিবর্তন
- দীর্ঘ সময় বসে কাজ না করা
- নরম ফোমের বিছানায় না ঘুমানো
- আদা
- দুধ হলুদ
- মেথি বীজ
- অ্যালোভেরা
- লেবু শরবত
- ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
বিশ্রাম: কোমর ব্যথার একটি বিশেষ চিকিৎসা হচ্ছে বিশ্রাম নেওয়া। কোমরে ব্যথা হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে তাহলে কোমর ব্যথা দূর হবে।
অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ: সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। আপনার যদি প্রায়ই কোমর ব্যথা হয় তাহলে অবশ্যই ওজনের দিকে খেয়াল করতে হবে। বাড়তি ওজনের কারণে অনেক সময় কোমর ব্যথা হয়। কারণ ওজন বেড়ে গেলে কোমর এবং পায়ের উপর চাপ বেশি পড়ে যার ফলে কোমরে এবং পায়ে যন্ত্রণা বোধ হয়। তাই কোমর ব্যথা অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী।
ভারী জিনিস না তোলা: অনেকেই হঠাৎ করে যেকোনো ভারী জিনিস সঠিক নিয়মে না তোলার কারণে মেরুদন্ডে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে এবং এর ফলস্বরূপ কোমর ব্যথা হতে পারে। তাই ভারী জিনিস তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর ভারী জিনিস তুললে অবশ্যই সঠিক নিয়ম ব্যবহার করে তুলতে হবে।
ম্যাসাজ বা হিট থেরাপি: ম্যাসাজ হিট থেরাপি কোমর ব্যথার জন্য অনেক উপকারী। কোমরে ব্যথা হলে প্রাথমিক অবস্থায় সেক দিলে অনেকটা আরাম বোধ হয়। এজন্য কোমরে ব্যথা হলে প্রাথমিকভাবে সেক দিতে পারেন। প্রয়োজনে হিট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।
তেল মালিশ: কোমরের ব্যথায় তেল মালিশ করলে আরাম বোধ হয়। সরিষার তেলের সাথে কয়েক টুকরা রসুন কুচি করে মিশিয়ে গরম করতে হবে। গরম করা সেই তেল গরম গরম অবস্থায় ব্যথার জায়গায় মালিশ করলে ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।
অভ্যাস পরিবর্তন: আমাদের অভ্যাস জনিত কারণেই কোমরে ব্যথা হয়। উঠা, বসা, খাওয়া, শুয়া কোন কিছুই আমরা নিয়ম অনুযায়ী করি না যার ফলে এই ব্যথা সৃষ্টি হয়। তাই এসব কিছুর অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী উঠা, বসা এবং ঘুমাতে হবে
দীর্ঘ সময় বসে কাজ না করা: দীর্ঘ সময় একটানা দীর্ঘদিন ধরে বসে কাজ করলে কোমরের ব্যথা হয়। তাই দীর্ঘ সময় একটানা বসে কাজ করা যাবে না মাঝে মাঝে উঠাবসা করতে হবে এবং কোমর ভাঁজ করে কিছুটা শারীরিক চর্চা করতে হবে।
নরম ফোমের বিছানায় না ঘুমানো: অনেকেই নরম ম্যাট্রেস বা ফোনের বিছানায় ঘুমাতে পছন্দ করে। কিন্তু নরম ম্যাট্রেস বা ঘুমের বিছানা কোমর ব্যথার জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই ঘুমানোর জন্য সব সময় শক্ত বিছানা নির্বাচন করতে হবে।
আদা: কোমরের ব্যথার জন্য আদা বেশ কার্যকরী। আদায় আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। আর আমরা জানি পটাশিয়ামের অভাবে নার্ভের সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে। তাই নিয়মিত আদা খেলে কোমরের ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
দুধ হলুদ: ব্যথার জন্য দুধ হল বেশ কার্যকরী একটি খাদ্য। দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে নিয়মিত খেলে কোমরের ব্যথা কমতে পারে।
মেথি বীজ: মেথি বীজের সাথে গুড়া দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই পেস্টটি ব্যথা জায়গায় নিয়মিত লাগালে ব্যথা সেরে যায়।
অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় থাকা উপাদান প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা-নাশক হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়মিত অ্যালোভেরার শরবত খেলে কোমরের ব্যথা কমে যাবে।
লেবু শরবত: লেবুর শরবতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যা কোমরের ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার: ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে কোমরের ব্যথা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। দুধ, চিজ, ঘি, শাকসবজি, বাদাম, ফল ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে। তাই কোমরের ব্যথা দূর করতে এ জাতীয় খাবার গুলো প্রতিদিন আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: কিছু কিছু ব্যায়াম আছে যেগুলো কোমরের ব্যথা রোধ করতে সাহায্য করে। কোমরের ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে কোমরের ব্যথা দূর হয়।
মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
বর্তমানে কোমর ব্যথা মহিলাদের জন্য একটি সাধারণ অসুখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়স ৪০ এর পার হলেই প্রতিটা মহিলায় কোমর ব্যথার সমস্যায় ভুগছে। তবে হালকা কিছু নিয়ম মেনে চললে এ ব্যথা সহজেই নিরাময় করা যায়। দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক মহিলাদের কোমর ব্যাথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
মহিলাদের কোমর ব্যাথার কারণ
- মাসিকের সময়
- গর্ভাবস্থায়
- পেশীর টানজনিত কারণে
- মেরুদন্ডের সমস্যায়
- মানসিক চাপের কারণে
- অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা
- অন্যান্য কারণ
- অপুষ্টিতে ভোগা
মাসিকের সময়: মাসিকের সময় অনেক মেয়েদের কোমর ব্যথা হয়। এই কোমর ব্যথা মূলত জরায়ু সংকুচিত হওয়ার ফলে হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায়: গর্ভাবস্থায় অনেক নারীদের কোমর ব্যথা হয়। গর্ভাবস্থায় শরীরের অতিরিক্ত ওজন জনিত কারণে এবং হরমোনের পরিবর্তনের ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে।
পেশীর টানজনিত কারণে: মহিলারা অনেক সময় বাড়ির কাজ করার সময় ভারী জিনিস তোলে, ভুলভাল ভঙ্গিতে উঠা, বসা, চলাফেরার কারণে, অনেকের আবার অতিরিক্ত ব্যায়াম করার কারণে পেশীতে টান পড়ে কোমর ব্যথা হয়।
মেরুদন্ডের সমস্যায়: অস্টিওথরাইটিস, ডিক্সহারনিয়েশনের মতো মেরুদন্ডের সমস্যা জনিত কারণে অনেক সময় কোমরে ব্যথা হয়।
মানসিক চাপের কারণে: মানসিক চাপ যেকোনো অসুখের মূল কারণ। অনেক সময় মানসিক চাপের কারণে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, যার মধ্যে কোমর ব্যথায় একটি মূল কারণ।
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা: অনেক মহিলাদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস, অ্যালকোহল পান, ব্যায়াম না করা এবং উৎশৃংখল জীবন যাপন করার কারণে কোমর ব্যথা দেখা দেয়।
অন্যান্য কারণ: কিডনি পাথর, ইউটিআই, এবং ফাইব্রোমিয়ালজিয়ার মত অন্যান্য অসুখের কারণেও কোমর ব্যথার মূল কারণ হতে পারে।
অপুষ্টিতে ভোগা: মহিলারা সাধারণত পুষ্টিকর খাবারের প্রতি খুব বেশি নজর দেয় না। যার ফলে তাদের হাড্ডি ক্ষয় হওয়ার মত অসুখ দেখা যায়। কোমরের হাড্ডি ক্ষয়জনিত কারণে মহিলাদের প্রচন্ড পরিমাণ কোমর ব্যথা হয়।
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার
- বিশ্রাম
- ব্যথার ওষুধ
- অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ
- ফিজিওথেরাপি
- সঠিক ভঙ্গি
- নিয়মিত ব্যায়াম
বিশ্রাম: কোমরে তীব্র ব্যথা হওয়ার একটি প্রধান প্রতিকার হচ্ছে কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়া। কিছুদিন বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা দূর হয়ে যায়।
ব্যথার ওষুধ: ব্যথার ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমিয়ে কোমর ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ: শরীরে অতিরিক্ত ওজনের কারণে কোমরে চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে ব্যথা হয়। তাই কোমর ব্যথার দূর করতে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
ফিজিওথেরাপি: কোমরে অতিরিক্ত ব্যথা হলে চিকিৎসকরা ফিজিওথেরাপি দিতে পরামর্শ দেন। কারণ ফিজিওথেরাপি ব্যথা কমাতে এবং শরীরের শক্তি ও নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
সঠিক ভঙ্গি: কোমরে ব্যথা হওয়ার আরো একটি প্রধান কারণ হচ্ছে সঠিক ভঙ্গিতে উঠাবসা হাঁটা চলাফেরা না করা। বসা উঠা দাঁড়ানো থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিস সঠিক ভঙ্গিতে বজায় রেখে করলে কোমরের উপর চাপ কমে এবং কোমরে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
নিয়মিত ব্যায়াম: শরীরের শক্তি এবং শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। কোমরের ব্যথা প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
কোমর ব্যথা সারানোর সহজ ব্যায়াম
বর্তমানে কোমরে ব্যথা একটি খুব সাধারণ অসুখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত উঠাবসা, হাঁটা, চলার অসতর্কতা জনিত কারণে এ ব্যথা হয়ে থাকে। তবে কয়েকটি নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের কোমরে ব্যথা সারানোর সহজ কয়েকটি ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই কোমরে ব্যথা সারানোর কয়েকটি ব্যায়াম সম্পর্কে।
আরোও পড়ুন: সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়।
- সমতল হালকা নরম বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত শরীরে দুই পাশে রেখে দুই পা সোজা করে প্রথমে শুয়ে যেতে হবে। এরপর হাঁটু ভাঁজ করে এক পা উপরের দিকে সোজাভাবে তুলে ১০ সেকেন্ড রাখতে হবে। ১০ সেকেন্ড পর উপরে তুলে রাখা পা নিচে নামিয়ে নিচের পা আবার উপরের উঠিয়ে ১০ সেকেন্ড রাখতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে কয়েকবার এই ব্যায়ামটি করতে হবে।
- এক পা, এক পা করে হয়ে গেলে এবার একই সাথে দুই হাঁটু ভাঁজ করে দুই পা ওপরে তুলতে হবে আগের নিয়ম অনুযায়ী।
- এবার এক হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাঁটুকে বুকের সাথে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। বুকের সাথে লাগিয়ে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। ঠিক একই ভাবে অপর হাঁটুও বুকে লাগাতে হবে এবং ১০ সেকেন্ড পার করতে হবে।
- এরপর একই সাথে দুই হাটু ভাঁজ করে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে লাগাতে হবে।
- উপরের ধাপগুলো শেষ হলে সর্বশেষ ধাপটি করতে হবে। সর্বশেষ ধাপটি হলো দুই পা সোজা করে পায়ের পাতার দিকে টানটান করে ১০ সেকেন্ড রাখতে হবে। প্রতিটি ধাপ ১০ সেকেন্ড করেই রাখতে হবে। এই ধাপগুলো অনুসরণ করে দিনে দুইবার সকালে এবং রাতে এই ব্যায়ামটি করলে কোমরের মাংসপেশী প্রদাহ কমাবে এবং শরীর শক্তিশালী করে তুলবে। এই ব্যায়ামটি নিয়মিত করলে কোমরের ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
কোমর ব্যথা কিসের লক্ষণ
অনেক সময় শরীরের পেশী এবং লিগামেন্টে হঠাৎ করে টান পেলে বা কোন কিছু দ্বারা চাপ পড়লে কোমর ব্যথা হয়। মেরুদন্ডের হাড় গুলোর মাঝে কিছু বিশেষ ডিস্ক থাকে। কোন কারনে এসব ডিস্ক সরে গেলে পিট ও কোমরের প্রচণ্ড ব্যথা হয়। অনেক সময় দুর্বলতা জনিত কারণে কোমর, নিতম্ব ও পায়ে ঝিমঝিম বা খচখচ করা, শক্তি কমে যাওয়া এসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কোমরে ব্যথা অনেক সময় কিডনির সমস্যার কারণেও হতে পারে। তাই দীর্ঘদিন ধরে কোমরে ব্যথা হলে আর দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। তবে মনে রাখবেন কিডনির সমস্যা হলেই যে শুধুমাত্র কোমরের ব্যথা হবে এমনটা নয়। অনেক সময় অস্টিওপেরোসিস এর কারণেও কোমরে ব্যথা হতে দেখা যায়।
অস্টিওপেরোসিস হলে খুব সহজে এ লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে ঘন ঘন পেট ব্যথা, কোমরে ব্যথা বা পেশীতে ব্যথা হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন যাদের বয়স ৪০ এর বেশি তাদের অস্টিওপোরোসিস হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মহিলাদের অস্টিওপোরোসিস বেশি হয়।
কোমরের ব্যথা কেন হয়
কোমরে ব্যথার একমাত্র প্রধান কারণ হচ্ছে কর্মস্থলে সঠিকভাবে বসে কাজ না করা। একমাত্র বসার ত্রুটিজনিত কারণে কোমরে ব্যথা বেশি হয়ে থাকে। দীর্ঘ সময় একটানা বসে কাজ করলে আমাদের মেরুদন্ডের সামনের দিকের মাংসপেশি সংকুচিত হয় এবং পেছন দিকের মাংসপেশী প্রসারিত হতে থাকে। যার ফলে মাংসপেশির ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। তখন মেরুদন্ডের মাঝখানে থাকা ডিস্ক এর উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ হয়। এই চাপ প্রয়োগ ধীরে ধীরে ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একটানা বসে কাজ করার কারণে অনেকের ঘাড় এবং পিঠে ব্যথা হতে দেখা যায়।
যারা তাদের কর্মস্থলে অফিস আদালতে ব্যাংক কিংবা হাসপাতালে বসে বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেন তারা সাধারণত চেয়ারে সামনের দিকে ঝুঁকে বসে থাকেন। এ সময় পেটের মাংসপেশী ও পায়ের সাম্য ভাগের মাংসপেশী সংকুচিত থাকে। এভাবে দীর্ঘদিন সংকুচিত থাকার কারণে এসব জায়গার মাংসপেশিগুলো একটা সময় শক্ত হয়ে যায়। সেই সাথে পিঠ ও কোমরের পেছনের মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়।
যার ফলে ভারসাম্যহীনতার জন্য কোমরের ডিস্কের স্থানচুতি ঘটে। আর এই স্থান চুতি কে বলা হয় প্রলাপস লামবার ইন্টারভারটিব্রাল ডিস্ক। সঠিকভাবে বসার নিয়ম না জানার কারণে পিঠের হাড়ের বক্রতা দেখা দেয়, আর একে বলা হয় কাইফোসিস। তাই এভাবে যারা ডেস্কে দীর্ঘদিন যাবত একটানা কাজ করে তাদের দীর্ঘমেয়াদী কোমর ব্যথা দেখা দেয়।
দীর্ঘদিন একটানা বসে বসে কাজ করার কারণে শুধু যে ডিস্কের সমস্যা দেখা দেয় তা কিন্তু নয় এছাড়াও কোমরের মেরুদন্ডের দুই পাশে থাকা স্যাক্রো-ইলিয়াক জয়েন্টের ব্যথাও হতে পারে। জয়েন্টের এ ব্যথা কে বলা হয় স্যাক্রোলাইটিস। আবার অনেক সময় কোমড় বা লামবারের কশেরুকার সঙ্গে নিচে থাকা স্যাকরাম অংশের কশেরুকা জোড়া লেগে যায়। যার ফলে স্যাক্রালাইজেশন হয়। মূলত এ সকল কারণেই মানুষের কোমর ব্যথা হয়।
কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট
অনেক সময় ক্যালসিয়াম এর অভাবজনিত কারণে কোমরের ব্যথা দেখা দেয়। আজকের দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলের এই অংশে আপনাকে আমি কোমরে ব্যথা কমানোর একটি ভালো ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সম্পর্কে আলোচনা করব। যেটি খেলে ক্যালসিয়াম জনিত কোমরে ব্যথা ভালো হয়। চলুন জেনে নিই কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সম্পর্কে।
Cavic-C-Plus
Cavic-C-Plus এই ওষুধটি একটি ক্যালসিয়াম এর ওষুধ। কোন কারনে যদি আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয় এবং এর ফলে কোমরে ব্যথা হয় তাহলে এই ওষুধটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই ওষুধটি হাড়ভাঙ্গা, কোমর ও জয়েন্টের ব্যথা ছাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই ওষুধটি হাড়ের গঠন মজবুত করে, শারীরিক গঠন শক্তিশালী করে, পেশী শক্তি বাড়াতে, কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে এবং অনেক সময় খাবারে রুচি বাড়াতেও সাহায্য করে।
Cavic-C-Plus খাওয়ার নিয়ম
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা এই ট্যাবলেটটি দিনে একটি করে খেতে পারবে। এই ট্যাবলেটটি এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খাবারের পর দুপুরে অথবা রাতে খেতে হবে। এক কৌটাই এই ওষুধটি ৩০ টি করে ট্যাবলেট থাকে। ভালো ফল পেতে পুরো একমাস ধরেই ওষুধটি খাবেন।গর্ভবতী মহিলারাও এ ওষুধটি খেতে পারবেন।
Cavic-C-Plus এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
Cavic-C-Plus ই ওষুধটির খুব বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে খুব কম সংখ্যাক মানুষের ক্ষেত্রে এ ওষুধটি খাওয়ার পর বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয়। তবে সে ক্ষেত্রে মনে রাখবেন যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই এ ওষুধটির সাথে একটি করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাবেন। যদি কারো কিডনির সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই এই ওষুধটি খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
কোমর ব্যথা সারানোর ঔষধের নাম
দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের কোমর ব্যথা সারানোর কয়েকটি ওষুধের নাম সম্পর্কে জানাবো। যেগুলো কোমরের ব্যথায় সচরাচর ব্যবহার করা হয়। চলুন জেনে নিই কোমর ব্যথা সারানোর ঔষধের নাম সম্পর্কে।
Anaflex max 375
কোমর ব্যথার জন্য খুব কার্যকরী একটি ওষুধ। এই ওষুধটির মূল উপাদান হলো Naproxen ও Esomeprazole. Naproxen এ ওষুধটি ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে এবং Esomeprazole এই ওষুধটি গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ব্যথার ওষুধ খেলে অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু আপনি জেনে খুশি হবেন যে Anaflex max 375 এই ওষুধটি খেলে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ আলাদাভাবে খেতে হবে না। এটি বাজারে সচরাচর যে কোন ওষুধের দোকানে Anaflex max, Sonap ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।
Anaflex max 375 খাওয়ার নিয়ম
এ ওষুধটি প্রতিদিন সকালে এবং রাত্রে একটি করে ট্যাবলেট খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তারপরে খাবেন।
Napadol
Napadol ওষুধটি প্যারাসিটামল ও ড্রামাডোল হাইড্রোক্লোরাইড এই দুটি ওষুধের সংমিশ্রণে তৈরি। Napadol ওষুধটি বিশেষ করে ব্যথা নাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যদি কোন ব্যক্তি হঠাৎ করে কোমরে ব্যথা পায় তাদের জন্য এই ওষুধটি চিকিৎসকরা সাজেস্ট করেন।
Napadol খাওয়ার নিয়ম
এ ওষুধটি দিনের দুটি করে ট্যাবলেট ভরা পেটে খেতে হবে। অবশ্যই মনে রাখবেন এ ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে।
কোমরের ব্যথা সারানোর সবথেকে ভালো ওষুধ
বাজারে কোমর ব্যথার অনেক ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে সবার মনে প্রশ্ন থাকেন এতগুলো ওষুধের মধ্যে সবথেকে ভালো ওষুধ কোনটা। চলুন জেনে নিই কোমরে ব্যথার জন্য সবথেকে ভালো কার্যকরী ওষুধ সম্পর্কে।
- আইবুপ্রোফেন
- ন্যপ্রক্সেন সোডিয়াম
উপরের এই ওষুধ দুটি ব্যথাজনিত কারণে সবথেকে ভালো কাজ করে।
কোমরে ব্যথা সারানোর আরও কিছু ওষুধের নাম
- Naprox (500mg)
- Napro (500mg)
- Napryn (500mg)
- Napro A (500mg)
- Nuprafen (500mg)
- Naspro (500mg)
- Diproxen (500mg)
- Ecless (500mg)
- Sonap (500mg)
উপরের উল্লেখিত এই ওষুধগুলো কোমর ব্যথার জন্য ভালো কাজ করে। একেকজনের ব্যথা একেক রকম হওয়ায় ব্যথার লক্ষণ এবং ধরুন অনুযায়ী একেকটা ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। তবে এসব ওষুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
গর্ভবতী মহিলাদের কোমর ব্যথার সারানোর উপায়
আমরা অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলাদের কোমরে ব্যথায় ভুগতে দেখতে পায়। মূলত এটি প্রায় সকল গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রেই ঘটতে দেখা যায়। তবে গর্ব অবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের কোমর ব্যথা সারানোর জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন সঠিক ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করা, ঘুমানো, সঠিক ভঙ্গিতে উঠবস করা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়াম করা। এ সকল নিয়ম মেনে চললে গর্ভবতী মহিলারা কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাবে। এগুলো গর্ভে থাকা শিশুটির জন্যও প্রয়োজন।
আরোও পড়ুন: পেয়ারা পাতার ১৬ টি বিশেষ উপকারিতা-চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা
শেষ কিছু কথা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সহ আরো অনেক অজানা তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছি। দ্রুত কোমর ব্যথা সারানোর ১৫ টি উপায়-মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে www.digitalabida.com এই ওয়েবসাইটির সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url