মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা
সারা বিশ্বের আধুনিকতার ছোঁয়া যত বেশি লাগছে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন মোবাইল ফোনের ব্যবহার তত বেশি বেড়ে চলেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে মোবাইল ফোনটি। দিনের শুরু থেকে দিনের শেষ পুরোটাই আমরা মোবাইল ফোনে আসক্তি।
অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও হচ্ছে ব্যাপক। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সহ মোবাইল ফোনের সব কিছু আলোচনা করব।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক
মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনেক অজানা তথ্য সম্পর্কে জানাবো। আপনি যদি মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আরোও পড়ুন: ড্রাগন ফলের কার্যকরী ২০ টি উপকারিতা। গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা।
বর্তমানে মোবাইল আমাদের একটি নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছুক্ষণ পাশে মোবাইল না থাকলে আমাদের মনের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়। দিন দিন মোবাইল ফোন ব্যবহারের আসক্তি বেড়েই চলেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের দিনটাই শুরু হয় মোবাইলের এলার্ম এর মাধ্যমে এবং রাত শেষ হয় মোবাইলের বিভিন্ন ভিডিও দেখে, গান শুনে, গেম খেলে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করে।
কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না যে এই মোবাইল ফোন আমাদের কি পরিমাণ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিকতার নাম করে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের শারীরিক এবং মানসিক নানা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মোবাইল ফোন। যা আমাদেরকে দিন দিন ঝুঁকির মুখে নিয়ে যাচ্ছে। চলুন জেনে নিই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ১৫ টি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।
- ঘাড় ব্যথা
- কানে কম শোনা
- চোখে কম দেখা
- অতিরিক্ত সেলফি আসক্তি
- অস্থির সন্ধি গুলোর ক্ষতি
- শুক্রাণু কমে যাওয়া
- মা বাবার সাথে খারাপ আচরণ
- হঠাৎ রিংটোন শোনা
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া
- ঘুম কমে যাওয়া
- নমোফোবিয়া
- দুর্ঘটনা এবং আর্থিক সমস্যা বৃদ্ধি
- পর্নো আসক্তি
- সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়া
- স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া
ঘাড় ব্যথা: মোবাইল ফোনে আসক্তির একটি অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ঘাড় ব্যথা। মোবাইল দেখার সময় দীর্ঘক্ষণ ঘাড় বাঁকিয়ে থাকার কারণে এই ঘাড় ব্যথা জনিত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অত্যাধিক গেমে আসক্তি, স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ভিডিও দেখা, সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করা, দীর্ঘ সময় মুভি রেখা ইত্যাদির কারণে অনেক সময় মোবাইল ব্যবহারে সঠিক দূরত্ব এবং বডি পজিশন ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। হলে মাথা স্বাভাবিক এর চেয়ে অনেক সময় বেশি নিচের দিকে ঝুঁকে থাকার কারণে ঘাড় ব্যথা দেখা দেয়।
কানে কম শোনা: বর্তমানে দীর্ঘ সময় ধরে ফোনে কথা বলা, দীর্ঘ সময় হাই ভলিউম এ গান শোনা, কানে হেডফোন ব্যবহার করা ইত্যাদি কারণে কানের শ্রবন শক্তি কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের শ্রবণশক্তি কমার হার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। দৈনিক দুই তিন ঘণ্টার বেশি মোবাইল ব্যবহারকারীদের তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে আংশিক বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
চোখে কম দেখা: মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম দিক হচ্ছে চোখে কম দেখা। দীর্ঘ সময় ধরে চোখের খুব কাছে থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন হওয়া এক ধরনের জিনগত সমস্যা বলে দাবি করছেন চিকিৎসকরা। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দৃষ্টিহীনতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
"মার্কিন ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন অ্যাসোসিয়েশন" এর মতে, মোবাইলের নীলাভ আলো চোখের রেটিনার দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মাধ্যমে অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। তাই মোবাইল ব্যবহার করার সময় অবশ্যই লিখার ফন্ট বড় করে চোখ থেকে অন্তত ১৬ ইঞ্চি দূরে রেখে ২০ সেকেন্ড পর পর স্কিন থেকে চোখ ফিরিয়ে সবুজ গাছপলার দিকে তাকানোর মাধ্যমে এই সমস্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। মনে রাখবেন মোবাইল ব্যবহারের সময় স্কিনের ব্রাইটনেস যত কমিয়ে রাখবেন চোখের জন্য তত বেশি ভালো।
অতিরিক্ত সেলফি আসক্তি: মোবাইল যারা ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে বর্তমানে সেলফি আসক্তি টা অতিরিক্ত মাত্রায় রূপ নিয়েছে। সেলফি আসক্তি যেন মানুষের মধ্যে একটি রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেকোনো কিছু হলেই বাজে কোন কারনে সেলফি তোলা মানুষের মধ্যে একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
অস্থি সন্ধি গুলোর ক্ষতি: বিভিন্ন গবেষণা করে দেখা গেছে একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী স্কিনের ট্যাব ক্লিক এবং শোয়াইব এর পরিমাণ গড়ে প্রায় ২৬১৭ বার এবং সর্বোচ্চ ৫৪২৭ বার। এতবার মোবাইল স্ক্রিনের টাইপের ফলে আঙ্গুলের জয়েন্টে ব্যথা এবং এটি পরবর্তীতে আর্থ্রাইটিসের সমস্যার রূপ নেওয়া সম্ভব না রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। এছাড়া অনেকেই বসার ভঙ্গি কাত ও কানের মাঝামাঝি ফোন রেখে কথা বলে এবং অতিরিক্ত ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ মেসেজ টাইপিং করে ফলে শারীরিক সমস্যা ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে অস্থিসন্ধি গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শুক্রাণু কমে যাওয়া: বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন মোবাইল ফোন থেকে নির্গত হওয়া হাই সিকোয়েন্সির ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিশন শরীরের বিভিন্ন কোষ এবং পুরুষদের প্রজনন অন্ত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। মোবাইলের ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে শুক্রাণু পাতলা করে দেই এবং পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ছেলেরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার পর সেটি তাদের প্যান্টের পকেটে রেখে দেওয়ার সময় মোবাইল যথেষ্ট গরম থাকার ফলে অন্ডকোষের চারপাশের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে শুক্রাণু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এইজন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ছেলেরা প্যান্টের পকেটে বা শরীরের স্পর্শকাতর কোন জায়গায় মোবাইল ফোন রাখবেন না।
মা বাবা সাথে খারাপ আচরণ: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে বাচ্চারা বাবা-মা চেয়ে ফোনে সময় দেওয়া বেশি পছন্দ করে। এর ফলে বাবা মায়ের সাথে বাচ্চাদের ঘনিষ্ঠতা কমে যাচ্ছে এবং দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। যার ফলে বাচ্চারা বাবা মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করছে। বাবা-মায়ের সাথে খারাপ আচরণের মূল কারণ অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার বলেই দাবি করেন অনেক বাবা মায়েরা।
হঠাৎ রিংটোন শোনা: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে মনের মধ্যে সব সময় একটা উদ্বিগ্নতা এবং বিষন্নতা কাজ করতে থাকে এই বুঝি রিংটোন বা ভাইব্রেশন হচ্ছে। এই বুঝি ফোনে কারো কল বা নোটিফিকেশন আসলো। অথচ বাস্তবে এমন কিছুই হয়নি কিন্তু মোবাইল থেকে বেশিক্ষণ দূরে থাকলে এরকম মনে হতে থাকে অনেকের। তাই চিৎসকরা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলেন মানুষজনকে।
মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে যার ফলে একাকীত্ব বেড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় সামাজিক অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে ফলে দিন দিন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাই একটা সময় তাদের কোন কিছুই আর ভালো লাগেনা।
ঘুম কম হওয়া: দীর্ঘ সময় রাত জেগে মোবাইল দেখা যেন বর্তমান সমাজে একটি নেশায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ রাত জেগে মোবাইল দেখার কারণে রাতে ঘুম কম হয়। ফলে মানুষের শারীরিক জটিলতা এবং মানসিক অস্থিরতা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
নমোফোবিয়া: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে বর্তমানে মানুষের মনের মধ্যে সব সময় মোবাইল আছে কিনা, নাকি হারিয়ে গেল কিনা এমন একটি রোগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই রোগের নাম দিয়েছেন নোমোফোবিয়া বা মোবাইল ফোন ফোবিয়া। গবেষণা করে দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের ও ভারতের তরুণরা যথাক্রমে ৫৩ ও ২৯ শতাংশ লোকজন বর্তমানে এ রোগের শিকার
দুর্ঘটনা এবং আর্থিক সমস্যা বৃদ্ধি: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে রাস্তাতেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। হলে অসতর্কতার বসত খুব সহজেই বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। অপরদিকে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে অনলাইনে প্রতারণা, হ্যাকিং, সাইবার বোলিং এমনকি গেম খেলেও অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে। যার ফলে পরবর্তীতে তারা আত্মহত্যার মতেও জঘন্য পাপের কাজও বেছে দিচ্ছে।
পর্নো আসক্তি: বর্তমানে মোবাইল ফোন হাতের মুঠোয় হয়ে যাওয়ায় সব বয়সই মানুষেরাই খুব সহজে পর্নো আসক্তি হয়ে পড়ছে। যার ফলে অল্প বয়সেই অনেক ছেলেমেয়েরা অনৈতিক কাজকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নামক একটি সংগঠন গবেষণা করে প্রতিবেদন করেছেন যে, "রাজধানী ঢাকার ৭৭ শতাংশ স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পর্নোগ্রাফি আসক্তি তৈরি হয়েছে।"
যার ফলে বর্তমান সমাজে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি তরুণদের মধ্যে বিকৃত যৌনাচারের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এর ফলস্বরূপ আমাদের দেশে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এসব অপকর্মের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পর্ণোগ্রাফি আসক্তি এর মূল কারণ।
সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়া: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে দিন দিন সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস এবং ওয়েবসাইটে ভিজিট করার ক্ষেত্রে ইমেইল বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। যার ফলে খুব সহজেই বিভিন্ন হ্যাকিং গ্রুপ আপনার ফোনে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে আপনার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে। যার ফলে সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাচ্ছে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া: অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে। ফলে অনেক সৃজনশীল মেধার ক্ষতি হচ্ছে। অনেক ভালো ভালো শিক্ষার্থীরা প্রতারণা এবং নকলের আশ্রয় নিয়ে দিন দিন দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা খারাপ কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মোবাইলে গেমস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তির ফলে শিশু কিশোররা পানাহার ও দৈনন্দিন কাজ কর্মে দিন দিন অমনোযোগী হয়ে উঠছে।
"জাপানের ডাকোমো ফাউন্ডেশন" পাঁচটি দেশে জরিপ করে শত শতাংশ শিশুর পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতার কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনকে দায়ী করেছেন। তাই পর্যাপ্ত বয়স হওয়ার আগে কোন মতেই শিশুদের হাতে মোবাইল এর মত ক্ষতিকর ডিভাইস তুলে দেওয়া যাবে না।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা
মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করব। এই আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন মোবাইল ফোন ব্যবহারে শুধু ক্ষতিকর দিকই নয় এতে রয়েছে কিছু সুবিধাও। এটি আমাদের জীবনযাত্রার মানকে অনেক সহজ করে তুলেছে।
বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার গুলোর মধ্যে মোবাইল ফোন আবিষ্কারের স্থান সবার প্রথমে। কেননা মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে অনেক বেশি সহজ এবং অনেক বেশি উন্নত করে তুলেছে। মোবাইল ফোনে কিছু অপকারিতা থাকলেও এতে রয়েছে ব্যাপক সুবিধা। চরণ জেনে নিই মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে।
- যোগাযোগের ক্ষেত্রে
- শিক্ষা ক্ষেত্রে
- তথ্য আহরণের ক্ষেত্রে
- কর্মজীবনের ক্ষেত্রে
- সামাজিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে
- ছবি তোলা এবং ভিডিও করার ক্ষেত্রে
- টিউশনের ক্ষেত্রে
- বিনোদন ক্ষেত্রে
- ব্যবসা প্রসারের ক্ষেত্রে
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে
- অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে
যোগাযোগের ক্ষেত্রে: যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এক অভাবনীয় পরিবর্তণ এনেছে। মোবাইল ফোনের ফলে গোটা বিশ্বই যেন আজ মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। এখন মানুষ চাইলেই এক দেশ থেকে আরেক দেশের খবর এক নিমেষের মধ্যে। ঘরে বসেই আজ মানুষ বিভিন্ন দেশের খোজ খবর খুব সহজেই নিতে পারে।
মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পূর্বে কোন সংবাদ নিজেদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যেত। কিন্তু মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পর যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই সহজ হয়েছে যে এক মিনিটের মধ্যেই যে কোন খবর পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। তাই বলা যায় যোগাযোগ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অতুলনীয়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে: শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পূর্বে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে বসে ব্লাকবোর্ড, চক, পেন্সিল ইত্যাদি দিয়ে ক্লাস করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ফোন আবিষ্কারের ফলে একটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে এখন আর শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে বসে ক্লাস করতে হয় না তারা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে যে কোন ক্লাস করতে পারে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বেঁচে যায়।
মাঝে মাঝে কোন শিক্ষার্থী স্কুল বাদ দিলে তারা খুব সহজেই তাদের সহপাঠী বা শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করে পড়া জেনে নিতে পারে। এমনকি ক্লাসের বিভিন্ন প্রজেক্ট বা ডিজাইন এগুলো কম্পিউটারের পাশাপাশি বর্তমানে স্মার্টফোন গুলোতে মোবাইলের মাধ্যমেই সবকিছু হয়ে যায়। যার ফলে শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বেঁচে যায় এবং অনেক বেশি সুবিধা হয়। কারণ কম্পিউটার চালানো চেয়ে মোবাইল ফোন চালানো অনেক বেশি সহজ।
তথ্য আহরণের ক্ষেত্রে: মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বর্তমানে তথ্য আহরণ করা অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে। কোন অজানা জিনিস সম্পর্কে জানতে খুব বেশি দূরে নয় নিজের হাতে থাকা মোবাইলে সার্চ দেওয়ার মাধ্যমে যে কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় খুব সহজে। এমনকি কারো লোকেশন জানার জন্য এখন আর কষ্ট করতে হয় না। হাতে থাকা মোবাইল ফোনে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজেই লোকেশন খুঁজে বের করা যায়।
কর্মজীবনের ক্ষেত্রে: কর্মজীবনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে এসেছে। বর্তমানে এমন অনেক কাজ পাওয়া যায় যার করার জন্য অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না ঘরে বসেই মোবাইল ব্যবহার করে সেইসব কাজ করা যায়। অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজ করার জন্য গুগল সিট, পাওয়ারপয়েন্ট, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট অফিস ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। মোবাইল ফোনে এত বেশি উন্নক্ত হয়েছে যে এই অ্যাপস গুলো এখন বর্তমানে মোবাইল ভার্সনেই পাওয়া যায়। তাই এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে মোবাইল ফোন দিয়েই অফিশিয়াল কাজ ঘরে বসেই করা যায়।
অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন ধরনের লিখালেখির কাজ করেন। কম্পিউটারের চেয়ে মোবাইল ফোনে কাজ করা অনেক বেশি সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়। যেখানে সেখানে মোবাইল ব্যবহার করা যায় বলে এটি দ্বারা লেখালেখির কাজ করা যাই খুব সহজে। অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটাররা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাইপিং এর কাজ করে অর্থ উপার্জন করে।
বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক যুবক নিজেদের খরচ চালিয়ে থাকে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের লোগো ডিজাইন, ইনস্টলেশন ইত্যাদি কাজের উপর ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে।
অফিসে যেকোনো ইমেইল পাঠাতে মোবাইল ফোন অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অফিসে না থেকেও যেখান সেখান থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজে ইমেইল পাঠানো যায়। আবার অফিসের বাইরে অবস্থান করলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইমেইল চেক করা যায়। যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল পাঠাতে বা চেক করতে মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছে।
বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চাকরির অনুসন্ধান করা যায়। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এসব চাকরির আবেদন করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারা চাকরির প্রাথমিক ইন্টারভিউ দিতে পারে।
অফিসিয়াল কাজ থেকে শুরু করে অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই যেকোনো তথ্য সবার কাছে খুব দ্রুত পৌঁছে দেওয়া যায়।
সামাজিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে: সামাজিকতা রক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে যোগাযোগ। আর যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পূর্বে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে চিঠি ব্যবহার কথা হতো। যা অনেকটা সময় সাপেক্ষ এবং ঝামেলার বিষয় ছিল।
আরোও পড়ুন: চুইঝালের যত পুষ্টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম
কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পরে এটি সব ঝামেলা দূর করে এক মিনিটের মধ্যেই একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যেকোন ইভেন্টের আয়োজন খুব সহজে করা যায় আবার সে আয়োজনে যোগদান ও করা যায় খুব সহজে। তাই বলা যায় সামাজিকতা রক্ষায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার অভাবনীয়।
ছবি তোলা ও ভিডিও করার ক্ষেত্রে: একটা সময় ছিল যখন ছবি তোলা হত ক্যামেরার মাধ্যমে। সবার ক্যামেরা না থাকায় চাইলেই ছবি তুলতে পারত না। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ফোন আবিষ্কার হওয়ার ফলে এখন আর স্টুডিওতে যেয়ে ছবি তোলার প্রয়োজন পড়ে না। ঘরে বসেই বা দেশের বিভিন্ন জায়গায় মন চাইলেই নিজের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ছবি তুলতে পারে। এমনকি নিজেদের জীবনের সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলো এবং সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো মানুষ মন চাইলেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে রাখতে পারে।
টিউশনের ক্ষেত্রে: বর্তমানে মোবাইল ফোন আবিষ্কারের ফলে ঘরে বসেই ছাত্র-ছাত্রীরা টিউশন করতে পারছে। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের সময় যেমন বেঁচে যাচ্ছে তেমনি শিক্ষকরাও একসাথে অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের শিক্ষা পৌঁছে দিতে সম্ভব হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে এসেছে এক আমুল পরিবর্তন। শিক্ষার্থীরা খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে একের অধিক শিক্ষকের ক্লাস অল্প সময়ের মধ্যে করতে পারছে।
বিনোদনের ক্ষেত্রে: বর্তমানে মোবাইল ফোন অন্যান্য কাজের পাশাপাশি মানুষের জীবনে বিনোদনের চাহিদা ও পূরণ করে থাকে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এখন যে কোন জায়গায় বসে লাইভ খেলা দেখার, সিনেমা দেখা, গান শোনা, গেম খেলা সহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কাজকর্ম করা যায়। যা মানুষের মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। বর্তমানে হাতে থাকা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ওটিটি প্লাটফর্মের কনটেন্ট উপভোগ করা যায় যা মানুষের আরও একটি বিনোদনের বড় মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ব্যবসা প্রসারের ক্ষেত্রে: ব্যবসার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এনেছে অভাবনীয় পরিবর্তন। এখন ব্যবসায়ী হিসাব নিকাশ করার জন্য আর খাতা কলমের প্রয়োজন পড়ে না। ব্যবসায় আয় ব্যয়ের হিসাব, কার কাছে কত টাকা পাওয়া যাবে, যেকোনো ধরনের খরচের হিসাব ইত্যাদি সবকিছুই ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব সহজেই বের করা সম্ভব হচ্ছে। এখন বর্তমানে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস বের হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে খুব সহজে এবং সুন্দরভাবে হিসাব করা যাচ্ছে। এসব হিসেব করার জন্য খাতা কলম ব্যবহার করে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।
বর্তমানে ব্যবসা ক্ষেত্র গুলো হয়ে উঠেছে অনলাইন ভিত্তিক। তাই যে কোন ব্যবসার বড় দিক এখন বর্তমানে মার্কেটিং এর উপর নির্ভর করে। আপনি যত সুন্দর ভাবে মার্কেটিং করতে পারবেন আপনার ব্যবসা ঠিক তত উন্নত হবে। মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন হওয়ায় বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যে কোন পণ্যের মার্কেটিং করা এত সহজ হয়ে গেছে যে খুব সহজেই পণ্য সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের সময় বেঁচে যাচ্ছে, টাকা বাড়ছে সেই সাথে ব্যবসার উন্নতি হচ্ছে অনেক।
বর্তমানে ব্যবসার অনেক প্লাটফর্ম গুলোই অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে। তাই ব্যবসায়ীরা অফলাইনে পণ্য বিক্রয় এর সাথে সাথে অনলাইনের মাধ্যমেও পন্য বিক্রয় করতে পারছে। এতে মুনাফা লাভ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছে এবং ঘরে বসেই তারা অন্য পেয়ে যাচ্ছে। এটি সম্ভব হয়েছে মোবাইল ফোনের অভাবনীয় আবিষ্কারের মাধ্যমেই।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে: চিকিৎসা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার আরো একটি অভাবনীয় আবিষ্কার। বর্তমানে অনেক রোগীরা ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে দেশ তথা দেশের বাইরেও অনেক ভালো ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে। এর ফলে রোগীরা দ্রুত আরাম পাচ্ছে এবং তাদের যাতায়াত খরচ বেঁচে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে: অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোনের ভূমিকা অনেক। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছে। যা সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র মোবাইল ফোন আবিষ্কারের মাধ্যমেই।
মোবাইল ফোন কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
মোবাইল ফোন স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর তা আপনি জানলে নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে সেলফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সময় নিম্ন স্তরের নন আয়নাইজিং বিচরণ প্রতিনিয়ত নির্গত হতে থাকে। সেল ফোন দ্বারা নির্গত বিকিরণের ধরনকে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে এটি কাজ করে। ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট থেকে জানা যায় "বর্তমানে এমন কোন সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রমাণ নেই যে নন আয়নাইজিং বিকিরণ মানুষের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।" উল্লেখিত এই উক্তি থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে, মোবাইল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর।
মোবাইল টাওয়ার কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা আর্টিকেলের এ অংশে আমরা আপনাদের মোবাইল টাওয়ার কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটি সম্পর্কে আলোচনা করব। মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়লে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারবেন মোবাইল টাওয়ার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর।
- পুরা বিশ্বের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এবং দেশের মধ্যেও একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল টাওয়ার অপরিহার্য। মোবাইল টাওয়ারের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন এর দীর্ঘায়িত এক্সপোজার আমাদের শরীরের স্নায়বিক সমস্যা, ক্যান্সার এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহ আরো নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে।
- এটি শুধু মানুষের শরীরেই প্রভাব ফেলছে তা নয় মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্ষতিকর প্রভাব বন্যপ্রাণী সহ গাছপালাকেও প্রভাবিত করছে। যার ফলে বিস্তৃত পরিবেশগত বিভিন্ন ঘটছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। মানবজীবন এবং পরিবেশের সুরক্ষা বজায় রাখার পাশাপাশি শক্তিশালী যোগাযোগ পরিকাঠামোর প্রয়োজনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ব্যাপক কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন।
- নিরাপদ টাওয়ার ডিজাইন গ্রহণ করা, শিল্ডিং কৌশল প্রয়োগ করা, নিরাপদ প্রযুক্তি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুষম নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি বিতর্কগুলো মোকাবেলা করার কৌশলগুলো অবলম্বন করা সহ মোবাইল টাওয়ারের ক্ষতিকর দিকগুলো এড়াতে আরো ব্যাপক পরিমাণ গবেষণার প্রয়োজন।
শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ভয়াবহতা
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কিন্তু এই কথাটি তখনই কার্যকর হবে যখন শিশুটিকেসুস্থ স্বাভাবিক ভাবে গড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সমাজের মানুষ সচেতনতার অভাবে কোনরকম চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই একটি কোমলমতি ছোট্ট শিশুর হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিচ্ছে।
- শিশুদের ব্যাপারে পিতা-মাতা বড়ই উদাসীন, যা একটি শিশুর সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায়। আধুনিকতার নামে তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সুপ্রভাত পড়ে এমন প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছে পিতা-মাতা নিজেই। ফলে শিশুরা আর খেলাধুলায় অভ্যস্ত না হয়ে তারা সব সময় ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে গেম খেলায় আসক্তি হয়ে যাচ্ছে। যা শিশুদের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
- অনেক বাবা মা আবার দুই জনই চাকরি করার কারণে শিশুর হাতে মোবাইল দিয়ে সারাদিন বাড়িতে তালা বন্দি অবস্থায় রেখে কাজে চলে যাচ্ছে। যার ফলে শিশুটির নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। বর্তমানে শিশুরা একবেলা না খেয়ে থাকতে পারলেও মোবাইল ছাড়া এক মিনিটও থাকতে পারে না। শিশুদের খাওয়ানোর সময় বা ঘুম পাড়ানোর সময় বাবা-মা নিজেরাই শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিচ্ছে।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের কার্যকলাপের ওপর প্রভাব ফেলছে যা শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকির পরিমাণ দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে। শুধুমাত্র মোবাইল ফোনে আসক্তির কারণে শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে শিশুদের মস্তিষ্ক এবং কানে নন-ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হওয়া সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।
- আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ৭ শতাংশের বেশি বিকিরণ মস্তিষ্কে শোষণ করে। মস্তিষ্কের পাতলা ত্বক, টিস্যু এবং হাড় গুলো বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের দ্বিগুণ বিকিরণ শোষণের জন্য আরও দুর্বল করে তুলতে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে শিশুদের মেজাজ রুক্ষ এবং খিটমিটে হয়ে যাচ্ছে।
- তারা মানুষের সাথে মিশতে শিখছে না বরং সারাক্ষণ মোবাইল ফোনে কার্টুন দেখা, ভিডিও গেম খেলা, গান শোনা, মুভি দেখা, বন্ধুদের সাথে চ্যাট করা ইত্যাদিতে আসক্ত হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসকরা বলছেন, সন্তানদের স্মার্ট ফোন দেওয়ার অর্থ হল তাদের হাতে এক বোতল মদ কিংবা ১ গ্রাম কোকেন তুলে দেওয়া। কারণ তারা মনে করেন স্মার্টফোনের আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই বিপদজনক।
- দুই মিনিট স্থায়ী একটি মোবাইল কল শিশুদের মস্তিষ্কের হাইপার অ্যাক্টিভিটি সৃষ্টি করে যা পরবর্তীতে এক ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের মস্তিষ্কে বিরাজ করে। যার ফলে যে সব শিশুরা বেশি বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা দ্বিগুণ পরিমাণ বেড়ে যায়, স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, রক্তের চাপ বেড়ে যায় এমনকি শিশুদের দেহ ধীরে ধীরে ক্লান্ত এবং নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
- মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের রেডিওসন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু এটি শিশুদের জন্য আরও বেশি মারাত্মক ক্ষতিকর যা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে ব্যাহত ঘটায়। অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল আসক্তির ফলে শিশুদের ক্যান্সারের মতো জটিল অসুখে ঘিরে ধরছে। এমনকি শিশুদের কায়িক পরিশ্রম না থাকার ফলে তাদের স্থূলতাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। মোবাইলের স্কিনে দীর্ঘক্ষণ চোখ রাখার কারণে দিন দিন শিশুদের চোখের সমস্যা ব্যাপক আধার ধারণ করেছে।
তাই শিশুদের মোবাইলে আসক্তি না করে তাদের খেলাধুলার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেন। বাবা মার উচিত শিশুদের পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দেওয়া। তবে একটি শিশু স্বাভাবিক সুস্থভাবে বেড়ে উঠে দেশ ও জাতির কল্যানে কাজ করার মত যোগ্য ভাবে গড়ে উঠবে।
পারিবারিক জীবনে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রভাব
কিছুদিন আগেও একটা সময় ছিল যখন পরিবারের প্রত্যেকের অবসর সময় কাটতো একে অপরের সাথে গল্প করে বা বিভিন্ন ধরনের আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া সাথে সাথে আমরা এমন একটি বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছি যে বর্তমানে পারিবারিক কোনো সমস্যা ছাড়া বা প্রয়োজন ছাড়া একে অন্যের সাথে কথা বলি না। যা একটি সুখী সুন্দর পরিবারের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলা গল্প করা আড্ডা দেওয়া সবকিছুই কমে গেছে। যার ফলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বোঝাপড়ার দ্বিমত ঘটছে এমনকি একে অন্যের সাথে আন্তরিকতা কমে গিয়ে দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। যার কারনে পরিবারের মধ্যে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিবারের কোন আলোচনা সময়, খাবার খাওয়ার সময় বা কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময় অনেকেই ফোন ব্যবহার করে যার ফলে এটি পরিবারের থাকা অন্য ব্যক্তিদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পরিবারের সুখ শান্তি নষ্ট হচ্ছে। বড়দের থেকে ছোট রাও এমন নেতিবাচক আচরণ শিখছে। যা পরবর্তীতে সংসারের ফাটল ধরে একে অন্যের সাথে আলাদা হয়ে যাওয়ার বিষয়গুলো বেড়ে যাচ্ছে।
উপরের এই উল্লেখিত কারণ গুলো থেকে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুধু শারীরিক ক্ষতি নয় এটি আমাদের পারিবারিক জীবনের উপরেও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
মোবাইল ফোনটি যেন ছাত্রদের জন্য একটি নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি একজন ছাত্রের জন্য উপকারের পাশাপাশি ক্ষতির পরিমাণটাই বেশি করছে। বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা এই আর্টিকেলের এই অংশে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে।
- একজন ছাত্রের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়ন করা। কিন্তু ছাত্রদের জীবনে মোবাইল ফোন একটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি পড়াশোনার ক্ষতি করছে। মোবাইল ফোনে আসা নোটিফিকেশন, সোশ্যাল মিডিয়ার অধিক ব্যবহার, বিভিন্ন ধরনের গেম ছাত্র-ছাত্রীদের মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটিয়ে পড়াশুনার ব্যাপক ক্ষতি করছে। মোবাইল ফোনে ছাত্ররা যে পরিমাণ সময় নষ্ট করছে তা পড়াশোনায় ব্যবহার করলে অনেক কিছু শেখা যায়।
- একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে এক ধরনের আসক্তিই জন্মে যায়। আর এই আসক্তির ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা তারা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে পার করে দেয়। যার ফলে মাথা ব্যথার মত সমস্যা দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে তারা পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে পারে না। তাই তাদের পড়াশোনা করার ইচ্ছা শক্তি হারিয়ে যায়।
- অল্প বয়স থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে কৌতূহলের বসত তারা বিভিন্ন ডার্ক ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইটে সাথে পরিচিত হয়। যা একটা সময় পর তাদের আসক্তিতে রূপান্তর হয়। ফলে নিজেদের অজান্তেই ছাত্র বয়সেই তারা সাইবার অপরাধীদের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। যার ফলে তাদের শুধু পড়াশোনার ক্ষতি করে এমনটি নয় তাদের আর্থিক দিক থেকেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
- দীর্ঘ সময় রাত জেগে মোবাইল দেখার কারণে আস্তে আস্তে এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। ফলে তাদের ঘুম কম হয় এবং শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তারা পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে পারে না ফলে পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করে। এভাবে অনেক ছাত্রই তাদের ছাত্র জীবন থেকে ঝরে পড়ে।
- যে সময় ছাত্রদের খেলাধুলার করার বয়স, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার বয়স সেই সময় তারা ফুটবল ক্রিকেট মাঠে না খেলে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে সময় পার করে। এর ফলে শারীরিক পরিশ্রম না হওয়াই শারীরিক স্থূলতা বেড়ে যায় এবং বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়। সেই সাথে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল দেখার কারণে চোখের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তাদের পড়াশোনায় বিঘ্নতি ঘটে।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অল্প বয়সে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে তাদের মাথার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে যার কারণে তারা পড়াশোনা মনে রাখতে পারে না। এভাবে তাদের রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে এবং এর প্রভাব হচ্ছে কর্মজীবনে। অনেক চেষ্টার পরেও তারা কোন চাকরি পাচ্ছে না।
মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে সৃষ্ট রোগের নাম
বর্তমানে মোবাইল ফোনে আসক্তি থেকে এক ধরনের নতুন রোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা দিন দিন সব ধরনের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে মানুষের মনের মধ্যে মোবাইল ফোনটি আছে, নাকি হারিয়ে গেছে, বা ভুল করে ফেলে এসেছে কিনা এমন ভয় তৈরি হচ্ছে। এই রোগের নাম হচ্ছে নোমোফোবিয়া বা মোবাইল ফোন ফোবিয়া।
আরোও পড়ুন: দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত। খালি পেটে কলা খেলে কি হয় জানুন
এছাড়াও অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মানুষের মানসিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে উত্তেজনা বেড়ে হার্ট অ্যাটাক সহ আরো নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ক্যান্সারের আশঙ্কাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আমাদের গোটা বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর এবং হুমকি স্বরূপ।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
মোবাইল ফোনে উপকার যেমন আছে তেমন রয়েছে এর মারাত্মক ক্ষতিকর দিক। যা আমাদের শরীরকে দিন দিন অকেজো করে তুলছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সাথে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন জেনে নিই মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে কয়েকটি বাঁচার উপায় সম্পর্কে।
- প্রতিদিন কতটুকু সময় আপনি মোবাইলে ব্যবহার করছেন সেইদিকে নজর রাখুন। সময় দেখে মোবাইল ব্যবহার করুন।
- প্রতি ২৪ ঘন্টায় কোন অ্যাপে আপনি কত সময় ব্যয় করছেন তার জন্য স্কিন টাইম ফিচার ব্যবহার করুন।
- বিশেষ করে ঘুমানোর আগে, খাওয়ার সময়, রাস্তায় হাঁটার সময় এবং গাড়ি চালানো সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
- অবসর সময় কাটানোর জন্য বই পড়া বা বাগান তৈরি করা হতে পারে মোবাইল আসক্তি কাটানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
- বাড়ির লোকজনের সাথে, বন্ধুদের সাথে এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে বেশি বেশি সময় পার করুন, তাদের সাথে গল্প করুন এতে আপনার মোবাইলে আসক্তি অনেকটা কমে যাবে।
- অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কুফল সম্পর্কে আপনি নিজে অবগত হন এবং পরিবারকে অবগত করুন।
- অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে নিজেকে বিরক্ত রাখতে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করুন, সুষম খাবার গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- মোবাইল ফোন বাদ দিয়ে আপনার আনন্দ এবং বিনোদন উপভোগ করার জন্য অন্য উপায় খুঁজে বের করুন।
- ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন দূরে রেখে ঘুমাবেন। পাশে মোবাইল রেখে ঘুমালে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে এবং মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন আপনার মস্তিষ্ক অচল করবে।
- মোবাইলে কথা বলার সময় অল্প কথা বলুন। অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইলে কথা বললে মোবাইলের হাই রেডিয়েশন বেশি নির্গত হয়। যা মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর।
- অন্ধকারে ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। অন্ধকারে ফোন ব্যবহার করলে মোবাইল স্ক্রিনের আলোতে চোখের সমস্যা দেখা দেয়।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের আইনগত দিক সমূহ
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ব্যাপারেও কিছু আইনগত নির্দেশনা রয়েছে যেগুলো প্রতিটা নাগরিককে মেনে চলতে হয়। কোন ডিজিটাল তথ্য ভান্ডারে বেআইনি প্রবেশ এবং এর ক্ষতি করা সাইবার ক্রাইমের আওতায় পড়ে। যদি কেউ কোন ডিজিটাল তথ্য ভান্ডারে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে তাহলে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল এবং ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং সেই সাথে এর কোন ক্ষতি সাধন করলে ১৪ বছরের জেল এবং এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এই অপরাধ পুনরায় করলে অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা উভায়দন্ডে দণ্ডিত হতে পারে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের অবশ্যই এসব আইনগত তথ্য মেনে চলতে হবে এবং এগুলো জেনে রাখা জরুরী।
শেষ কিছু কথা
আজ আপনাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা আর্টিকেল এর মাধ্যমে মোবাইল ফোন ব্যবহারের মারাত্মক ১৫ টি ক্ষতিকর দিক-মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। এরকম ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে www.digitalabida.com এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url