শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের ১০টি উপকারিতা ও ৬ টি অপকারিতা

আপনি কি শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি ছাগলের দুধের অনেক অজানা বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবেন। 

শিশুদের-জন্য-ছাগলের-দুধের-১০-টি-উপকারিতা

শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা অনেক বেশি। তবে আমাদের দেশের মানুষ গরুর দুধ খাওয়ায় বেশি অভ্যস্ত বলে ছাগলের দুধ খুব বেশি আগ্রহ সহকারে খায় না বললেই চলে। আপনি জানলে অবাক হবেন ছাগলের দুধে গরুর দুধের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টিগুণ থাকে। 

শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের ১০ টি উপকারিতা 

শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। শিশুর যত্নে এবং শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাবা-মা সব সময় দুশ্চিন্তায় ভোগে। কারণ শিশুকে আমরা যেসব খাবার খাওয়াই সেগুলো দ্বারা তারা সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা অবশ্যই জরুরী। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকে শুরু করে ব্রেনের গঠন সহ আরো সমস্ত কিছু তাদের শিশুকাল থেকেই শুরু হয়। ক্যালোরি, প্রোটিন থেকে শুরু করে ফ্যাটের একটি দারুন কার্যকরী উৎস হচ্ছে ছাগলের দুধ। তাই শিশু অবস্থা থেকেই তাদের খাবারের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। 

আরোও পড়ুন: পটল বীজের ১০ টি উপকারিতা ও ২ টি অপকারিতা 

আমাদের দেশে গরুর দুধ খাওয়ার প্রচলন সবচেয়ে বেশি থাকলেও বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যে পরিমাণ দুধ বা দুধের তৈরি যে কোন ধরনের পুষ্টিকর খাবার বিক্রি করা হয় তার প্রায় ৬২-৭২ শতাংশই সাধারণত তৈরি করা হয় ছাগলের দুধ থেকে। ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণের কথা বিবেচনা করেই উন্নত দেশগুলো শিশুদের প্রথম থেকেই ছাগলের দুধ এবং ছাগলের দুধে তৈরি খাবার খাওয়ান। এছাড়াও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গরুর তুলনায় ছাগল বেশি পোষা হয়। কারণ এটি সহজে পরিচর্যা করা যায়। তাই গরুর দুধের তুলনায় ছাগলের দুধ বেশি পাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারী ১০ টি উপকারিতা সম্পর্কে।

  • শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের ১০ টি উপকারিতা
  • প্রায় মায়ের দুধের সমকক্ষ 
  • হাড় ও দাঁত মজবুত করে 
  • শরীরে শক্তি যোগায়
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • এলার্জির ঝুঁকি কম 
  • ভালো ফ্যাট 
  • অন্ত্রের জন্য ভালো
  • কোলেস্টেরল কম 
  • শিশুদের ডায়রিয়া কমায়
  • প্রিবায়োটিক

প্রায় মায়ের দুধের সমকক্ষ: আমরা জানি পৃথিবীতে মায়ের দুধের সমকক্ষ কোন কিছুই নেই। তবে পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে বিবেচনা করে দেখলে বোঝা যায় ছাগলের দুধ শিশুদের জন্য প্রায় মায়ের দুধের সমকক্ষই বলা যায়। কারণ মায়ের দুধে যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে প্রায় সেই পরিমাণ পুষ্টিগুণ ছাগলের দুধেও রয়েছে। 

হাড় ও দাঁত মজবুত করে: ছাগলের দুধে থাকা প্রোটিন ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য সকল পুষ্টি উপাদান আপনার বাচ্চার হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

শরীরে শক্তি যোগায়: নিয়মিত শিশুদের ছাগলের দুধ খাওয়ালে এটি শিশুদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি এবং পুষ্টি যোগান দেয়। যার ফলে বাচ্চা সুস্থ স্বাভাবিক থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: একটি বাচ্চার শরীরে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কারণ বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি হবে বাচ্চা তত বেশি সুস্থ থাকবে। নিয়মিত ছাগলের দুধ খাওয়ালে বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

এলার্জির ঝুঁকি কম: গরুর দুধে এক ধরনের প্রোটিন থাকায় এটি অনেক বেশি অ্যালার্জেনিক। এছাড়াও এই দুধে ল্যাক্টোজেন উপস্থিত রয়েছে। গরুর দুধের সাথে এলার্জি যুক্ত ল্যাকটোজেন। এমনকি এটি বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক অস্বস্তির সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ছাগলের দুধে গরুর দুধের তুলনায় অনেক কম ল্যাকটোজেন রয়েছে। তাই এতে এলার্জির পরিমাণ কম। ছাগলের দুধে গরু এবং মরিচের দুধের তুলনায় এলার্জির পরিমাণ কম থাকায় এটি শিশুদের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ।

ভালো ফ্যাট: ছাগলের দুধে প্রচুর পরিমাণ পলিআনস্যাচুরেটেড জাতীয় ভালো ফ্যাটের অনেক উচ্চ উপাদান রয়েছে। যার ফলে বাচ্চারা এটি গরুর দুধের তুলনায় খুব সহজে হজম করতে পারে। ছাগলের দুধ বাচ্চারা খুব সহজে হজম করতে পারে বলে তাদের দেহে অনেক ভালো ফ্যাট শোষণ করতে পারে। ছাগলের দুধ থেকে উৎপাদন হওয়া ভালো ফ্যাট গুলি শিশুদের মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

অন্ত্রের জন্য ভালো: ল্যাকটোজেন ভাঙ্গা অনেক কষ্টকর একটি ব্যাপার যার ফলে আমাদের হজম প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতিতে হয়। ল্যাকটোজেনের আরো একটি ক্ষতিকার দিক হলো এটি আমাদের অন্তরের অনেক বেশি ক্ষতি করে। গরুর দুধের পরিবর্তে আপনি আপনার বাচ্চাকে ছাগলের দুধ দিলে এতে থাকা কম ল্যাকটোজেন আপনার শিশুর অন্ত্রের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

কোলেস্টেরল কম: অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে ভারসাম্যহীন উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপার টেনশনের মত জটিল সমস্যার মূল কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার খেতে হবে। ছাগলের দুধে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম থাকে এবং এতে খারাপ কোন ধরনের কোলেস্টেরল থাকে না। তাই এটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের জন্য অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রিবায়োটিক: বেশিরভাগ দুধে অনেক স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে যা প্রিবায়োটিক নামে পরিচিত। গরুর দুধসহ অন্যান্য যেকোনো দুধের সাথে তুলনা করলে ছাগলের দুধে অনেক পরিমাণ প্রিবায়োটিক থাকে। আর এই প্রিবায়োটিক আপনার শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং অন্ত্রের হজম প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

শিশুদের ডায়রিয়া কমায়: বাচ্চার মায়ের দুধের পরিবর্তে ছাগলের দুধ অনেক ভালো একটি বিকল্প। ছাগলের দুধে একটু বেশি পরিমাণ পানির মিশিয়ে খাওয়ালে এটি মায়ের দুধের মতই স্বাস্থ্যকর হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও এটি বাচ্চাদের ডায়রিয়ার ভাব কমাতে সহায়তা করে।

ছাগলের দুধের ৬ টি অপকারিতা 

ছাগলের দুধের অপকারিতা কিছুটা হলেও অন্যান্য দুধের তুলনায় কম। আমরা জানি, শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা অনেক তবে বেশি পরিমাণ খেলে এটি শিশুদের শরীরে কিছুটা ক্ষতি করতে পারে। তাই বাচ্চাদেরকে ছাগলের দুধ খাওয়ানোর পূর্বে কিছু কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চলুন জেনে নিই ছাগলের দুধের ৬ টি অপকারিতা সম্পর্কে। 

ছাগলের দুধের ৬ টি অপকারিতা 

  • আপনার যদি প্রচুর পরিমাণ এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে ছাগলের দুধ এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবে খাবেন। 
  • বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ছাগলের দুধে এক ধরনের ভাইরাস বা ছত্রাকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটির নাম হল কম্বুজা। ছাগলের দুধ খাবার পূর্বে এটি ভালোভাবে না ফোটালে এ ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং মানুষ অসুস্থ হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। 
  • ছাগলের দুধ গরুর দুধের তুলনায় অনেক বেশি মোটা। তাই এতে প্রচুর পরিমাণ পানি মিস না দিলে শরীরের জন্য ক্ষতি করতে পারে। 
  • ছাগলের দুধ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর কিনা তার সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই গর্ভবতীরা এই দুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
  • অতিরিক্ত পরিমাণ ছাগলের দুধ খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা পেট ব্যথা বদহজম বমি বমি ভাবসহ আর অন্যান্য ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • ছাগলের দুধ খাওয়ার পর আপনি যদি কোন ধরনের অস্বস্তিকরবোধ মনে করে থাকেন তাহলে এই দুধ পরিহার করুন। এছাড়াও আপনি যদি অতিরিক্ত ডায়রিয়ায় ভোগেন তাহলে এই দুধ পরিহার করায় আপনার জন্য উত্তম।

ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ 

ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। পুষ্টিগুণ অনেক বেশি বলে শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা অনেক বেশি। ছাগলের দুধকে প্রোটিন, ক্যালরি এবং ফ্যাটের খুব ভালো উৎস বলে নির্ধারণ করেছেন চিকিৎসকরা। আমাদের শরীরের হাড়ের জন্য যে পরিমাণ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন তার বেশির ভাগই রয়েছে ছাগলের দুধে। তাই ছাগলের দুধ শুধুমাত্র শিশুদের জন্য নয়। এটি যে কোন বয়সের মানুষের জন্য অনেক উপকারী। একটি নির্ধারিত বয়সের পর যখন মানুষের শরীরের ক্যালসিয়াম কমে যায় তখন ছাগলের দুধ একটি সুন্দর সমাধান। 

ছাগলের-দুধের-পুষ্টিগুণ

নিয়মিত ছাগলের দুধ খেলে ক্যালসিয়ামের সেই অভাব পূরণ হয়ে যায়। আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন এক গ্লাস ছাগলের দুধ পান করেন তাহলে আপনার সারাদিনের সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও এটি আপনার শরীরের সারা দিনের ভিটামিন সরবরাহ করবে। তাই অন্য যেকোনো দুধের তুলনায় ছাগলের দুধ অনেক বেশি উপকারী বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। ছাগলের দুধে প্রতি এক কাপে প্রায় ১২ শতাংশ ল্যাকটোজ উপাদান থাকে। আর এই উপাদান আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে শুরু করে এলার্জি সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। এটি আমাদের হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নিই প্রতি ১০০ গ্রাম ছাগলের দুধের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।

  • পানি ৮৮.৯ শতাংশ 
  • প্রোটিন ৩.১ গ্রাম 
  • কার্বোহাইড্রেট ৪.৪ গ্রাম 
  • মোটা ৩.৫ গ্রাম 
  • শক্তি ৬০ কিলো ক্যালরি 
  • চিনি ৪.৪ গ্রাম 
  • কোলেস্টেরল ১০ মিলিগ্রাম 
  • স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ২.৪ গ্রাম 
  • মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ১.১ গ্রাম
  • পলিআনস্যাচুরেটেড ০.১ গ্রাম 
  • ক্যালসিয়াম ১০০ আইইউ

ছাগলের দুধ খাওয়ার নিয়ম 

ছাগলের দুধ খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেকেই ছাগলের দুধ খেতে পছন্দ করেন কিন্তু এই দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন না। তাই ছাগলের দুধ খাওয়ার নিয়ম না জানার ফলে এটি খেয়ে আমাদের উপকারের বদলে অপকার বেশি হয়। আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাকে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ছাগলের দুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নিই ছাগলের দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। 

  • প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে 
  • শিশুদের ক্ষেত্রে 

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি একদিনে ২৫০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত দিনে দুইবার ছাগলের দুধ খেতে পারেন। তবে এর থেকে বেশি পরিমাণ খাবেন না। অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। ছাগলের দুধে বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে তারপর খাবেন। 

শিশুদের ক্ষেত্রে: একটি ৫ বছর বয়সী শিশু একদিনে ১৫০ গ্রাম এবং একজন ১০ বছর বয়সের শিশু একদিনে ২০০ গ্রাম করে ছাগলের দুধ খেতে পারবে। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন ছাগলের দুধে বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে তারপর বাচ্চাদের দিতে হবে।

ছাগলের দুধ কি শিশুর জন্য নিরাপদ? 

ছাগলের দুধ কি শিশুর জন্য নিরাপদ এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান অনেকেই। এ প্রশ্নের উত্তর দেব আজ। অন্যান্য দুধের তুলনায় আপনার শিশুর জন্য ছাগলের দুধ অনেক বেশি নিরাপদ। কারণ অন্যান্য দুধে ল্যাক্টোজ এর নামক এক ধরনের উপাদান থাকে যা শিশুদের পচন তন্ত্রকে বিভক্ত করার জন্য যেকোনো ধরনের খাদ্য গ্রুপের অন্যতম শক্ত উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। দুধ ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস হলেও এতে প্রচুর পরিমাণ ল্যাক্টোজেন থাকে যার ফলে এটি বাচ্চাদের হজম ক্ষমতাকে অনেক বেশি কঠিন করে তোলে। 

আরোও পড়ুন: প্যাশন ফলের ২০ টি উপকারিতা ও ৫ টি অপকারিতা

সেই ক্ষেত্রে ছাগলের দুধ শিশু দের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ কারণ এই দুধে ল্যাকটোজেনের পরিমাণ অনেক কম থাকে। যার ফলে শিশুরা সহজেই খাবার হজম করতে পারে এবং সব ধরনের পুষ্টিগুণ পেয়ে থাকে। শিশুদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণেও ছাগলের দুধ ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি শুধু শিশুদের জন্যই নয় এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও অনেক বেশি নিরাপদ। তাই আপনি আপনার শিশুকে নির্ভয়ে ছাগলের দুধ একটু বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে খাওয়াতে পারেন। অনেক নিরাপদ একটি খাবার।

কখন থেকে বাচ্চাকে ছাগলের দুধ দেওয়া শুরু করা যায়?

কখন থেকে বাচ্চা কে ছাগলের দুধ দেওয়া শুরু করা যায় এই চিন্তায় অস্থির প্রায় প্রতিটা শিশুর মা বাবা। তবে জেনে থাকা ভালো একটি শিশু জন্ম লাভের পর তার মায়ের দুধ খাওয়ানোর কোন বিকল্প নেই। জন্ম লাভের পথ থেকে ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাবে। এরপর মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য কোন খাবারের প্রয়োজন হলে বাচ্চার বয়স ৯ মাস হওয়ার পর বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে ছাগলের দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ৯ মাস বয়সের পূর্বে বাচ্চাদের ছাগলের দুধ দিলে শিশুর পুষ্টির নানা ধরনের ভারসাম্য গত সমস্ত সৃষ্টি হতে পারে। তাই ৯ মাস পর বাচ্চাদেরকে ছাগলের দুধ দেওয়া যায়।

ছাগলের দুধে কি এলার্জি আছে?

ছাগলের দুধে কি এলার্জি আছে এই সম্পর্কে বিজ্ঞান কি বলে চলুন জেনে নি। ছাগলের দুধ কিছুটা হলেও মায়ের দুধের সমকক্ষ। মায়ের দুধে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে প্রায় একই পরিমাণ পুষ্টি উপাদান ছাগলের দুধেও রয়েছে। ছাগলের দুধে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। ফ্যাটের পরিমাণ অনেক কম। পুষ্টিগুণের কথা বিবেচনা করলে গরুর তুলনায় ছাগলের দুধে বেশি পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে।

ছাগলের দুধে এলার্জি আছে কিনা এ নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় কাজ করে। আপনি যেন অবাক হবেন যে ছাগলের দুধে তেমন কোনো এলার্জি সমস্যা নেই। বিভিন্ন গবেষণা করেও এতে কোন এলার্জি যোনিতে উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি কারোর অতিরিক্ত অ্যালার্জি হয়ে থাকে তাহলে এই দুধ খাওয়ার পর কিছুটা এলার্জি সমস্যা হতে পারে। তাই আপনারও যদি ছাগলের দুধ খেয়ে এলার্জি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এই দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

ছাগলের দুধ খেলে কি শ্লেষ্মা হয়?

ছাগলের দুধ খেলে কি শ্লেষ্মা হয় এটা নিয়ে প্রতিটি বাচ্চার মা বাবার মনে প্রশ্ন জাগে। কারণ বাচ্চারা খুব অল্পতেই ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। তাই যে কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে তারা অনেক দুশ্চিন্তায় থাকে। শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা অনেক বেশি। এটি বাচ্চাদের শ্লেষ্মা তৈরি করে না বরং শ্লেষ্মা নিরাময় করতে অনেক সাহায্য করে। ছাগলের দুধ নয়, গবেষণা করে দেখা গেছে গরুর দুধ অনেক লোকের শ্লেষ্মা গঠন করতে সাহায্য করে। তাই শ্লেষ্মা রোগীরা নিঃসন্দেহে ছাগলের দুধ খেতে পারেন এবং গরুর দুধ এড়িয়ে চলবেন।

ছাগলের দুধ কোন রোগের প্রতিশোধক?

ছাগলের দুধ কোন রোগের প্রতিশোধক সেটি জেনে থাকা প্রতিটা মানুষের জন্য উপকারী। কারণ আমাদের দেশে অনেক মানুষ প্রতিদিন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসকদের মতে ছাগলের দুধ সহজপাচ্য বলে এটি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা খুব সহজেই হজম করতে পারে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা ছাগলের দুধকে ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিরোধক হিসেবেও বিবেচনা করেছেন। এটি ডেঙ্গু জ্বরের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে।

ছাগলের দুধ খেলে কি বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়?

ছাগলের দুধ খেলে কি বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয় কিনা এটা মায়েরা অনেক সময় চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করে থাকে। কারণ প্রায় বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। খুশির কথা এই যে ছাগলের দুধে থাকা চর্বি অন্যান্য যে কোন দুধের তুলনায় সহজে শোষণ করতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য বা শক্ত মলত্যাগের সাথে লড়াই করার যে কোন শিশুর জন্য পাশ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কিন্তু নিয়মিত ছাগলের দুধ খেলে হজমের সমস্যা করবে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকবে। ছাগলের দুধ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না বরং এটি নিরাময় হয়।

ছাগলের দুধ খেলে কি বাচ্চাদের গ্যাস হয়?

ছাগলের দুধ খেলে কি বাচ্চাদের গ্যাস হয় এটা নিয়ে আপনার মধ্যে সংশয় কাজ করছে কি? ভয় পাবেন না ছাগলের দুধ খেলে গ্যাস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন ধরুন আপনার বাচ্চার যদি গরুর দুধে মারাত্মক এলার্জি থাকে তাহলে ছাগলের দুধ খেলেও তাদের এলার্জি সমস্যা হতে পারে। আর যদি বাচ্চাদের অ্যালার্জি সমস্যা থাকে তবেই এটি পেটে অতিরিক্ত গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সহ কাশি ও শিশুদের ত্বকে ফুসফুরির মত কিছু লক্ষণ দেখা যায়। তাই খাওয়ানোর সময় বাচ্চাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা সেটি খেয়াল করুন।

গর্ভবতীদের জন্য এবং ভ্রুনের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা 

গর্ভবতীদের জন্য এবং ভ্রুনের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা অনেক বেশি। আপনি যদি গর্ভবতী এবং ভ্রুনের জন্য উপকারিতার সঠিক তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তবে আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনার জন্য। শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা এই আর্টিকেলের এই অংশের আমরা আপনাকে গর্ভবতীদের জন্য এবং ভ্রুনের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নিই গর্ভবতীদের জন্য এবং ভ্রূণের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা সম্পর্কে। 

আরোও পড়ুন: পান্তা ভাতের অবিশ্বাস্য উপকারিতা-পান্তা ভাতের ক্ষতিকর দিক

  • গর্ভবতী মা এবং গর্ভে থাকা ভ্রুনের জন্য ছাগলের দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন সরবরাহ করে এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি হতে সাহায্য করে। 
  • গর্ভবতী মহিলা এবং গর্ভে থাকা ভ্রুনের ভবিষ্যতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করতে অর্থাৎ জন্ম প্রক্রিয়ার পর কৈশোর বয়সে প্রতিফলন ঘটাতে ছাগলের দুধের কোন বিকল্প নেই। 
  • ছাগলের দুধ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের পেশি বৃদ্ধির ধারা উৎপাদনের ফলে প্রোটিনের ক্ষতিপূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  • গর্ভে থাকা ভ্রূণের হাড়ের বৃদ্ধি হওয়ার ফলে মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করতে ছাগলের দুধের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। 
  • গর্ভবতী মা এবং ভ্রূণের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করে শিশুকে রিকেট রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করতে ছাগলের দুধের জুড়ি মেলা ভার। 
  • ভ্রুনের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ছাগলের দুধ অনেক সহায়তা করে।
  • ছাগলের দুধ নিয়মিত খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলারা ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পায়।
  • গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন মানসিক প্রফুল্ল এবং শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি সাধন করতে ছাগলের দুধ অনেক উপকারে।

ছাগলের দুধের দাম

ছাগলের দুধের দাম আমাদের দেশে জায়গা ভেদে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হয়। ছাগলের দুধ অল্প পরিমাণে উৎপাদন হলেও এটি অনেক লাভজনক। এই দুধের দাম অনেক বেশি হওয়ায় প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে ছাগলের খামারিরা প্রচুর পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে। কারণ ছাগল পালনে খরচ অনেক কম।

ছাগলের দুধের দাম বেশি কেন? 

ছাগলের দুধের দাম বেশি কেন এটা প্রায় অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। কারণ অন্যান্য যে কোন ধরনের দুধের তুলনায় ছাগলের দুধের দাম অনেক বেশি। ছাগলের দুধের দাম বেশি হওয়ার কারণ হলো, একটি হলস্টেইন জাতের গাভী সমান দৈনিক দুধ উৎপাদন করতে  ৯ থেকে ১০ টি উৎপাদনশীল ছাগলের প্রয়োজন হয়। ছাগলের দুধ পরিমাণে অনেক কম উৎপাদন হয়। তাই এই দুধের দাম অনেক বেশি হয়।

ত্বকের যত্নে ছাগলে দুধের উপকারিতা

ত্বকের যত্নে ছাগলের দুধের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। কারণ এটি শুধুমাত্র আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এমনটি কিন্তু নয় এটি আমাদের ত্বকের জন্যও দারুন কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। সেই আদিকাল থেকে রূপচর্চায় ছাগলের দুধ ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ এটি রূপচর্চায় বেশ অতুলনীয়। ছাগলের দুধ আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে। 

ত্বকের-যত্নে-ছাগলে-দুধের-উপকারিতা

নিয়মিত ছাগলের দুধ ব্যবহার করলে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেশ উপকারী। তাই আপনার ত্বকের যত্ন নিতে আপনি নিয়মিত ফেসপ্যাক অথবা ফেস ক্লিনজার হিসেবে ছাগলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এটি আমাদের ত্বক সতেজ রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নি ই ত্বকের যত্নে ছাগলের দুধের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।

  • ত্বক নরম করে 
  • ত্রিবায়োটিক এবং ভিটামিনের পরিপূর্ণ 
  • ত্বকে মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে 
  • সিরামাইড রোল 
  • ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে

ত্বক নরম করে: আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয়ে যায় অথবা ত্বকের আদ্রতা কমে যায় তাহলে ছাগলের দুধ হতে পারে একটি সুন্দর সমাধান। কারণ ছাগলের দুধ আপনার ত্বকে নরম তুলতুলে করতে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বকের নরম এবং সতেজ ভাব ধরে রাখবে। কারণ ছাগলে দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং ফ্যাটি এসিড। এছাড়াও এই দুধে পিএইচ থাকায় এটি আমাদের ত্বকের মাইক্রোবায়মের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ছাগলের দুধে থাকা ভিটামিন, ফ্যাট, প্রোবায়োটিক আমাদের ত্বকের জন্য দারুন কার্যকরী। এটি ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করে।

প্রোবায়োটিক এবং ভিটামিনের পরিপূর্ণ: ছাগলের দুধে থাকা প্রোবায়োটিক আমাদের ত্বকের মেরামতের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের ত্বকের যে কোন ক্ষতিকারক ফ্রী রেডিকেলগুলো যে ক্ষতি করে তা দ্রুত মেরামত করতে ছাগলের দুধ কাজ করে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েশনে সহায়তা করেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বকের মৃত কোষগুলো দূর করে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার এবং ঝলমলে করতে সহায়তা করে। 

ত্বকে মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে: ছাগলের দুধ আমাদের ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে মশ্চারাইজিং করে। ছাগলের দুধে থাকা হিউমেকট্যান্ট পরিবেশ থেকে  আদ্র ভাব টেনে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বল ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও ছাগলের দুধে থাকা ল্যাকটিক এসিডের অতিরিক্ত পরিমাণের ঘনত্ব আমাদের ত্বকের স্কিন কেয়ারের জন্য কার্যকরী একটি উপকরণ। ছাগলের দুধে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে এটি হলো আলফা হাইড্রেক্সি অ্যাসিড। এটি আমাদের ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল মসৃণ এবং কোমল করে।

সিরামাইড রোল: বিভিন্ন সময় ত্বকের মৃত কোষগুলোর মধ্যে থাকা সিরামাইড এর পরিমাণ অনেক ভালো থাকে। যার ফলে আমাদের ত্বক অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর এবং আকর্ষণীয় দেখায়। ছাগলের দুধে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড আমাদের ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে হিউমেকট্যান্ট করে। ফলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা অনেক বেড়ে যায়। যেটি ত্বকের জন্য অনেক বেশি উপকারী।

ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে: অনেক সময় আমাদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। একেকজনের স্কিন একেক রকম যার ফলে একেক জনের ত্বকে একেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শুষ্ক ত্বক থেকে শুরু করে ত্বকের যাবতীয় সমস্যায় জাদুর মত কাজ করে এই ছাগলের দুধ। ছাগলের দুধে থাকা ফাটি এসিড, এন্টিফাঙ্গাল, এন্টি ইনফ্লামেটরি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য আমাদের ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাব, চুলকানি, ব্রণের সমস্যা এছাড়াও ত্বকের আরো নানা ধরনের সমস্যায় দারুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ছাগলের দুধ খেলে কি মোটা হয়? 

ছাগলের দুধ খেলে কি মোটা হয় এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন? হ্যাঁ ছাগলের দুধ খেলে মানুষ কিছুটা মোটা হতে পারে। কারণ অন্য যেকোনো দুধের তুলনায় সাধারণত ছাগলের দুধে অনেক বেশি ক্যালরি থাকে। আর আমরা জানি, অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধি হতে সাহায্য করে। আপনি যদি অতিরিক্ত ওজনের অধিকারই হয়ে থাকেন এবং ক্যালোরি কমানোর জন্য চেষ্টা করেন তাহলে অন্য যেকোনো ধরনের দুধ খেতে পারে। এক্ষেত্রে ছাগলের দুধ এড়িয়ে চলাই ভালো বা একান্তই খেতে চাইলে পরিমাণে অনেক কম খেতে পারেন।

শেষ কিছু কথা 

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা সহ ছাগলের দুধের আরও অনেক অজানা বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url