গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা
গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সহ আরো নানা বিষয়ে আলোচনা করব।
দুধ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী এ কথা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু দুধের সাথে রান্নাঘরে থাকা শুধুমাত্র অল্প একটু হলুদ মিশিয়ে দিলেই এটি হয়ে ওঠে আরও বেশি স্বাস্থ্যকর। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চলুন জেনে নিই গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা
গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব আর্টিকেলের এই অংশে। দুধ হল সেই প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মতে এর উপকারিতার কথা বিবেচনা করে এটিকে হলদি দুধ নামে পরিচিত করেছে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এটি একটি শক্তিশালী পানীয় হিসেবে প্রতিটা মানুষের অন্তরে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। দুধ হলুদের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না।
আরো পড়ুন: মাছের ডিমের ১৫ টি উপকারিতা ও ৬ টি অপকারিতা
দুধ হলুদ এমন একটি উপাদান যা সেই আদিকাল থেকে বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি শুধু আমাদের দেশেই নয় এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য উপকারী একটি অমৃত হিসেবে সম্মানিত হয়েছে। এতে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন ধরনের জটিল কঠিন সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নিই।
গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- রক্ত পরিষদের সাহায্য করে
- হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে
- প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- হজম শক্তি উন্নত করে
- এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ
- ইমিউন সিস্টেম বুস্টার
- এনটিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
- মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করে
- ত্বকের জন্য উপকারী
- শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা সমাধানে
- কার্ডিও ভাস্কুলার স্বাস্থ্য উন্নত করে
- ব্যথা উপশম করে
- লিভারের জন্য উপকার
- ক্যান্সার প্রতিরোধক
- ক্ষত নিরাময় করে
- মহিলাদের জন্য উপকারী
- স্ট্রেস কমায়
- হাড় ভালো রাখে
- রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
- ঘুমের সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: দুধ হলুদে প্রচুর পরিমাণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী কিছু বৈশিষ্ট্য আছে বলে বিশ্বাস করেন চিকিৎসকরা। তাই নিয়মিত দুধ হলুদ খেলে এটি আমাদের শরীরে এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা হয়। যার ফলে সহজে কোন সংক্রমণ আক্রমণ করতে পারেন। ফলে অসুখ বিসুখ কম হয়।
রক্ত পরিশোধনে সাহায্য করে: হলুদ রান্নাঘরের একটি অনেক পুরনো মসলা যা বহু কাল ধরে বিভিন্ন রোগে ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদের একটি সংক্রিয় উপাদান হচ্ছে টার্কি ওমেন যা হলুদের হলুদ কমলা রং থেকে আসে। এই উপাদানটি সাধারণত রক্ত পরিশোধন করতে বিশেষভাবে কাজ করে। এটি মূলত পিরিয়ডের সময় রক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। তাই এই সময় দুধ হলুদ খেলে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং শরীরে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: হলুদ আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই দীর্ঘদিন হার্ট ভালো রাখতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত দুধ হলুদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত দুধ হলুদ খেলে এটি কারকিউমিন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে এবং আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা পরিচালনায় সহযোগিতা করে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখে: দুধ হলুদে রয়েছে এন্টি স্প্যসমোডিক যা মাসিক চক্র হওয়ার সময়ের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। কারো যদি অস্বাভাবিক মাসিক চক্র হয় সে ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত উপকারী। এটি সাধারণত মেয়েদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, এন্ডোমেট্রিওসিস লিউকেরিয়া অথবা ফাইব্রয়েডের সমস্যা দূর করতে এবং সেই সাথে প্রজনন স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে বেশ কার্যকরী।
হজম শক্তি উন্নত করে: দুধ হলুদ পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই হজমে সমস্যা গুলোকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বদহজম গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার পেট ফোলা বা অস্বস্তিকর অবস্থা দূর করে। এটি আমাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কেউ উন্নতি করতে সাহায্য করে। এক কথায় বলা যায় নিয়মিত দুধ খেলে হজমে সমস্যা দূর হয়।
এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ: হলুদের রয়েছে অলৌকিক কিছু শক্তিশালী উপাদান যেমন এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য। যা আমাদের শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত দুধ খেলে এটি ব্যথা উপশমে সহায়তা করে।
ইমিউন সিস্টেম বুস্টার: দুধ হলুদে রয়েছে কারকিউমিন এবং অন্যান্য উপকারী কিছু যৌগ যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলে।
এনটিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: হলুদের রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য যা আমাদের শরীরে যারডিকেল গুলোকে নিরপেক্ষ করে তোলে। এই যারডিকেল আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করতে পারে যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য দায়ী হয়। নিয়মিত দুধ হলুদ পান করলে আমাদের শরীরে থাকা বিভিন্ন কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে হলুদ আমাদের নিউরো প্রটেকটিভ জ্ঞানের কার্যকারিতা সমর্থন করতে পারে। যার ফলে এটি নিউরো ডিজেলারেটিভ রোগের সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
ত্বকের জন্য উপকারী: নিয়মিত দুধ হলুদ খেলে এটি আমাদের শরীরে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর বৈশিষ্ট্য তৈরি করে যার ফলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়, দাগ দূর হয়, ত্বকের রং উন্নতি হয় এবং একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে ত্বককে রক্ষা হতে সহায়তা করে।
শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা সমাধানে: দুধ হলুদ এমন একটি ঔষধি উপাদান যা আমাদের হাঁপানি ব্রংকাইটিস এবং শ্বাসযন্ত্রের হওয়া বিভিন্ন সমস্যাগুলি প্রভূষণ করতে পারে। এতে থাকা একদিন বৈশিষ্ট্য শ্বাসনালীকে প্রশমিত করে যার ফলে সহজে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দূর হয়।
কার্ডিও ভাস্কুলার স্বাস্থ্য উন্নত করে: বিভিন্ন প্রকার প্রদাহ দূর করতে হলুদ বেশ কার্যকরী একটি উপাদান। এটি কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত হয়ে কোলেস্টেরলের স্তর এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে সহায়তা করে।
ব্যথা উপশম করে: দুধ হলুদে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য যার ফলে এটি আমাদের ব্যথা উপশম এ সহায়তা করে। মাথাব্যথা থেকে শুরু করে পেশি ব্যথা এমন কি মাসিক ক্যাম্প উপশম করে।
লিভারের জন্য উপকার: দুধ হলুদে থাকা পুষ্টি উপাদান লিভারের কার্যকারিতা কমাতে সহায়তা করে। এটা থাকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যকৃত কে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য। যদিও এখনো আরো গবেষণা চলছে তবে। এখন পর্যন্ত গবেষণা করে পাওয়া গেছে এটি নির্দিষ্ট কিছু ধরনের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং স্তরকে বাধা দিতে সাহায্য করে।
ক্ষত নিরাময় করে: দুধ হলুদে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত নিরাময় করে এবং সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। এটি আমাদের শরীরে কাটা, পোড়া বা আঘাতের চিকিৎসায় খুব ভালো কাজ করে।
মহিলাদের জন্য উপকারী: দুধ হলুদে থাকা বিভিন্ন উপাদান আমাদের হাড় নির্মাণ, কোষের বৃদ্ধি এবং হাড়ের কার্যকলাপকে শোষণ করে হাড়ের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি মহিলাদের অস্টিওপেরোসিস এবং অন্যান্য হাড় সম্পর্কিত অবস্থার ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্ট্রেস কমায়: দুধ হলুদে রয়েছে প্রশান্তি দায়ক বৈশিষ্ট্য যার ফলে এটি প্রদাহ কমায় এবং শিথিলতাকে উন্নতি করে। এটি বিভিন্ন ধরনের চাপ কমাতে সাহায্য করে যার ফলে মন শান্ত এবং সুস্থ বোধ করে।
হাড় ভালো রাখে: হলুদে থাকা কারকিউমিন বৈশিষ্ট্য আমাদের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে, জয়েন্টের কার্যকারিতা উন্নত করে এছাড়াও এটি আমাদের হাড়ের টিস্যু গুলোকে সুরক্ষা দেই এবং হাড় ক্ষয় রোধ করে। সেই সাথে দুধে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের হাড়কে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলে এবং সুস্থ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই বলা যায় দুধ হলুদ একসাথে খেলে এটি অস্টিওপেরোসিসের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে: দুধ হলুদে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম এবং রক্তনালী পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। তাই দুধ হলুদকে রক্ত পরিশোধক হিসেবেও নামকরণ করা হয়।
ঘুমের সমস্যা দূর করে: দুধ হলুদে থাকা ওষুধি গুণ এটি আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে ভালো ঘুম এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বাড়িতে কোন বৃদ্ধ অথবা শিশুর ভালো ঘুমের জন্য নিয়মিত রাতে দুধ হলুদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়াও আপনার পরিবারে যদি কারো ইমসমনিয়া বা ঘুমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।
দুধ হলুদ খাওয়ার ৫ টি অপকারিতা
দুধ হলুদ খাওয়ার ৫ টি অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। আমরা জানি যে কোন জিনিসের উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। তাই প্রতিটা জিনিসের উপকারিতা জানার পাশাপাশি এর অপকারিতা গুলো জেনে থাকলে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। দুধ হলুদেও রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিক।
যদিও দুধ হলুদ বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ এবং উপকারী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর কয়েকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই দুধ হলুদ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই দুধ হলুদ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো জেনে রাখা প্রত্যেকের উচিত। চলুন জেনে নেই দুধ হলুদ খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
দুধ হলুদ খাওয়ার ৫ টি অপকারিতা
- গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা
- এলার্জির সমস্যা
- ওষুধের সাথে মিথস্ক্রিয়া
- গলব্লাডারের সমস্যা
- গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যপান করার ক্ষেত্রে
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা: কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এর হালকা অস্বস্তি বোধ হতে পারে। প্রচুর পরিমাণ দুধ হলুদ খেলে এটি কিছুটা ফুলে যায়, অতিরিক্ত মাত্রায় গ্যাস হয়।
এলার্জির সমস্যা: কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাত্রায় দুধ হলুদ খেলে কিছুটা এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যদি আপনার কোন ফুসকুড়ি হয়, চর্মরোগের লক্ষণ দেখা দেয় অথবা শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে অতি দ্রুত এটি খাওয়া বন্ধ করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ওষুধের সাথে মিথস্ক্রিয়া: বেশ কয়েকটি ওষুধের সাথে দুধ হলুদ মিথস্ক্রিয়া করতে পারে। যেমন ডায়াবেটিসের ওষুধ, রক্তপাতলাকারী ওষুধ এবং রাসায়নিক মিশ্র প্রয়োগের সমস্যা এ ধরনের ওষুধ যদি আপনি খেয়ে থাকেন তাহলে দুধ হলুদ না খাওয়ায় উত্তম। এগুলোর সাথে দুধ হল মিথস্ক্রিয়া করতে পারে।
গলব্লাডারের সমস্যা: শুধু সাধারণত পিত্ত উৎপাদন প্রক্রিয়াকে অনেক বেশি সক্রিয় করতে পারে। যার ফলে পিত্তকোষ, পিত্তথলির পাথর বা পিত্তথলির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সমস্যা বাড়িয়ে দেয় বা অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যপান করার ক্ষেত্রে: যদিও দুধ হলুদ প্রায় অনেকের জন্যই নিরাপদ একটি পানীয়। তবুও গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে দুধ হলুদ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন।
দুধ হলুদ বানানোর নিয়ম
দুধ হলুদ বানানোর নিয়ম অনেক সহজ একটি পদ্ধতি। এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী বলে সেই দীর্ঘকাল ধরে দুধ হলুদ মানুষ খেয়ে আসছে। গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের দুধ হলুদ তৈরির নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়ে আপনি খুব সহজেই দুধ হলুদ সঠিক নিয়মে তৈরি করে খেতে পারেন। চলুন জেনে নিই।
আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার ১৮ টি উপকারিতা ও ৭ টি অপকারিতা
দুধগুলো তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে এক গ্লাস দুধকে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার ফুটিয়ে নেওয়া দুধের সাথে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করলেই তৈরি হয়ে যাবে দুধ হলুদ। এছাড়াও এর সাদ বাড়ানোর জন্য আপনি দুধ হলুদের সাথে কিছুটা চিনি, ড্রাই ফ্রুটস, কেশর, আদা, দারুচিনি ইত্যাদি মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত এই পদ্ধতিতে তৈরি করে খেলে আপনি হাতেনাতে ফল পাবেন।
দুধ হলুদ খাওয়ার নিয়ম
দুধ হলুদ খাওয়ার নিয়ম মেনে তারপর দুধ হলুদ খেতে হবে। প্রতিটা জিনিস খাওয়ার কিছু নিয়ম থাকে। ঠিক তেমনি দুধ হলুদ খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে। দুধ হলুদ খাওয়ার জন্য প্রথমে এক গ্লাস দুধ ভালো ভাবে ফুটিয়ে এতে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে নিতে হবে। হাত বাড়ানোর জন্য এতে আপনি কিছুটা মধু অথবা চিনি বা এলাচ দারুচিনি মেশাতে পারেন। তাহলে এটি খেতে অনেক ভালো লাগবে।
এরপর এই মিশ্রণটি রাতে ঘুমানোর আগে হালকা কুসুম গরম অবস্থায় খেয়ে ফেলুন। আপনি যদি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগেন অথবা হৃদরোগ বা জয়েন্টের ব্যথার সমস্যায় কষ্ট পান তাহলে নিয়মিত হলুদ দুধের সাথে এক চিমটি জায়ফল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে করে অনেক ভালো ফল পাবেন। এই নিয়ম মেনে আপনি আপনার সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে নিয়মিত দুধ হলুদ আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
দুধ হলুদ কখন খেতে হয়
দুধ হলুদ কখন খেতে হয় এটি জানা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। আমরা অনেকেই দুধ হলুদ আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এই তথ্য সম্পর্কে জানলেও এটি কখন খেতে হয় সেটি সম্পর্কে সঠিক কোন ধারণা নেই। গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের দুধ হলুদ কখন খেতে হয় সেই সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাবো।
দুধ হলুদ সাধারণত রাতে শোয়ার আগে খাওয়া উত্তম। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে আপনি যদি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম দুধের সাথে অল্প একটু হলুদ মিশিয়ে খেয়ে ফেলে তাহলে এটি আপনার রাতের ঘুমকে আরো বেশি আরামদায়ক করে তুলবে। এটি রাতে ঘুম ভালো করতে সহায়তা করে। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত রাতে ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই এক গ্লাস দুধ হলুদ খেয়ে ঘুমাবেন।
দুধের সাথে হলুদ খেলে কি হয়
দুধের সাথে হলুদ খেলে কি হয় চলুন জেনে নেওয়া যাক। দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি ওষুধে পরিণত হয়। দুধ হলুদে থাকা প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান আমাদের সর্দি-কাশি থেকে খুব সহজেই মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও এতে থাকা প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য আমাদের শ্বাস লালির প্রদাহ কমাতে এবং ভিড় কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দুধ হলুদ খেলে কি ওজন কমে
দুধ হলুদ খেলে কি ওজন কমে এই প্রশ্নটি প্রায় অনেকেই করে থাকেন। গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাকে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি সম্পর্কে জানাবো। আপনি জানলে অবাক হবেন যে অনেকেই ওষুধের বিকল্প হিসেবে হলুদকে সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করেন। আর সেই হলুদের সাথে দুধ মেশালে এটি হয়ে যায় আরো বেশি পুষ্টিকর।
যা আমাদের ওজন কমানোর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। নিয়মিত দুধ হলুদ খেলে দ্রুত ওজন কমতে সহায়তা করে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত এই দুধ হলুদ খেতে পারেন। এতে থাকা ঔষধি গুন আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে আপনাকে স্বস্তি দিতে সহায়তা করবে।
প্রতিদিন দুধ হলুদ খাওয়া যাবে কি
প্রতিদিন দুধ হলুদ খাওয়া যাবে কি এটি সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। কারণ আমরা জানি কোন কিছু অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ নয়। গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের প্রতিদিন হলুদ খাওয়া যাবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তর দিব। আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়ে আপনি দুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন জেনে নিই।
আরো পড়ুন: দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত। খালি পেটে কলা খেলে কি হয় জানুন
আমরা সকলেই জানি দুধ হলুদ সাধারণত আমাদের শরীরের জন্য অনেক নিরাপদ এবং উপকারী। তবে দীর্ঘ সময় ধরে এই দুধ হলুদ খেলে দেখা দিতে পারে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এর সমস্যা অর্থাৎ প্রচুর পরিমাণ একটানা দীর্ঘদিন ধরে দুধ হলুদ খেলে গ্যাস, পেট ফোলা এমনকি ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দুধ হলুদ খাওয়ার সময় মনে রাখবেন এটি দীর্ঘদিন একসাথে নয় মাঝে মাঝে গ্যাপ দিয়ে খাবেন।
পিরিয়ডের সময় দুধ হলুদ খেলে কি হয়
পিরিয়ডের সময় দুধ হলুদ খেলে কি হয় এটি সম্পর্কে আপনার সঠিক তথ্য জানা আছে কি? যদি আপনি পিরিয়ডের সময় দুধ হলুদ খেলে কি হয় সেটি সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে গরম দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এই অংশটুকু পড়লে আপনি পিরিয়ডের সময় দুধ হল খেলে কি হয় তার সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
হলুদে থাকা হলুদ কমলা রং থেকে আসা কারকিউমিন উপাদান একটি সক্রিয় উপাদান। এটি আমাদের রক্ত পরিশোধন করতে সহায়তা করে বিশেষ করে পিরিয়ডের সময়ের রক্ত পরিশোধনে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও পিরিয়ডের সময় হলুদ খেলে এটি আমাদের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই অবশ্যই পিরিয়ডের সময় নিয়মিত দুধ হলুদ খাওয়া মেয়েদের জন্য অনেক উপকারী।
হলুদ দুধ কাদের খাওয়া উচিত নয়
হলুদ দুধ কাদের খাওয়া উচিত নয় সেই সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জেনে তারপর দুধ হলুদ খাওয়া শুরু করা উত্তম। কারণ কোন কিছু আমাদের জন্য উপকারী বলে যে এটি সকলের জন্যই উপকারী হবে এই তথ্যটি কিন্তু সঠিক নয়। একেকজনের শরীরের অবস্থার উপর ভিত্তি করে একেক জিনিস উপকারী এবং অপকারী হতে পারে। তাই কাদের জন্য দুধ হলুদ খাওয়া উচিত নয় চলুন জেনে নিন।
অতিরিক্ত পরিমাণ হলুদ খেলে এটি আমাদের শরীরে আইরন শোষণে হস্তক্ষে প করতে পারে। অতএ ব আপনার যদি আয়রনের ঘাট থাকে তাহলে হলুদ খাওয়া থেকে সাবধানে থাকা উচিত। এছাড়াও যাদের লিভারের রোগ বা লিভার অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে দুধ হলুদ না খাওয়াই ভালো। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিস অথবা রক্ত পরিশোধনকারী ওষুধ খান তারা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে কি ফর্সা হয়
দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে কি ফর্সা হয় এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে ইচ্ছুক হন। আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের জানাবো দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে ত্বক ফর্সা হয় কিনা সেই সম্পর্কে। হলুদ ত্বক ফর্সা করার জন্য অথবা ত্বকের যে কোন সমস্যা দূর করার জন্য সেই প্রাচীনকাল থেকে রূপচর্চার কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদকে মেয়েদের রূপচর্চার একটি অংশ হিসেবে ধরা হয়।
তবে বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা হচ্ছে হলুদের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। যা আমাদের ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে। এক চিমটি কাঁচা হলুদের সাথে অল্প একটু দুধ মিশিয়ে মুখে লাগান। এরপর কিছুক্ষন অপেক্ষা করে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন তো অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখাবে। এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত দুধগুলো দুধ খান তাহলে ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল হতে সাহায্য করবে।
দুধে হলুদ দিয়ে ফুটানো উচিত
দুধে হলুদ দিয়ে ফুটানো উচিত এই জন্য যে সাধারণত দুধের সাথে হলুদ দিয়ে হলুদ দিয়ে একটু সিদ্ধ করে নাও ভালো। এতে করে হলুদে থাকা স্বাদ এবং উপকারী যৌগগুলোকে দুধের মধ্যে প্রবেশ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ফুটানো দুধ হলুদের সামগ্রিক সামঞ্জস্য উন্নতি করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই দুধে হলুদ দিয়ে অল্প একটু ফুটিয়ে নেওয়ায় উত্তম।
শেষ কিছু কথা
গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলে আমরা আপনাদের দুধ হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বানানোর নিয়ম সহ এটি সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন অজানা বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আপনি যদি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই দুধ হলুদ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আপনি জানতে পারবেন।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত দুধ হলুদ যুক্ত করার চেষ্টা করুন। আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে অবশ্যই ডিজিটাল আবিদা ওয়েবসাইটির সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url