কুমড়ো ফুলের ১৭ টি উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান
কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেল আমরা আপনাদের কুমড়ো ফুলের বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সহ এর পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে নানা বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানাবো। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই কুমড়ো ফুল শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয় এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক জনপ্রিয় একটি খাবার। কুমড়ো ফুলে থাকা ভিটামিন, মিনারেল, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে নানা ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। চলুন জেনে নিই কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।
কুমড়ো ফুলের ১৭ টি উপকারিতা
কুমড়ো ফুলের পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। কারণ কুমড়ো ফুল খেতে হয় এই কথাটি অনেকেই জানেন না। আসলে কুমড়ো যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি ঠিক তেমনি এর ফুলেও পুষ্টিগুণের দিক থেকে কম নয়। হলুদ রঙের এই ফুলটিতে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কুমড়ো ফুল শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয় এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুষ্টিগুনের কথা বিবেচনা করে অনেক বেশি জনপ্রিয়।
আরো পড়ুন: চুলে মেহেদি পাতা দেওয়ার ১০ টি উপকারিতা
বিভিন্ন দেশের মানুষ এই ফুল বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকেন। কুমড়ো ফুল নানাভাবে খাওয়া যায় যেমন সিদ্ধ করে, বেটে বিভিন্ন তরকারির সাথে রান্না করে অথবা কাঁচা ফুল বিভিন্ন সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। অনেকেই আবার এই ফুল বেসনে ডুবিয়ে ভেজে খায়। এই ফুলে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের কুমড়ো ফুলের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নিই।
কুমড়ো ফুলের ১৭ টি উপকারিতা
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস
- দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
- রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে
- পেটের জন্য উপকারী
- ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস সংক্রমনের সমস্যা দূর হয়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
- ত্বক উজ্জ্বল হয়
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে
- ভিটামিন সি এর উৎস
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে
- হাড় মজবুত করে
- দাঁত ভালো রাখে
- চর্মরোগ দূর করে
- বিষন্নতা কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
- চুল ভালো রাখে
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্থোসায়ানিন, ফ্ল্যাভনয়েড, ক্যারোটিন, ফেনলস এর মত বিভিন্ন ধরনের সব উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয় এটি আমাদের শরীরের প্রদাহ কমানোর কাজেও বেশ পটু। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কুমড়ো ফুল রাখুন।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ যা আমাদের চোখের জন্য প্রাকৃতিক ভাবে খেয়াল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন কুমড়ো ফুলে থাকা এই সকল ভিটামিন চোখের ম্যাকুলার ডিজেনারেশন কে আটকে দিতে পারে। যার ফলে বয়স জনিত কারণে আমাদের চোখের যে সকল সমস্যা দেখা দেয় তা হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। এছাড়াও এই ভুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধেও বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই চোখ ভালো রাখতে চাইলে অবশ্যই কুমড়ো ফুল নিয়মিত খেতে হবে।
রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং কপার হিমোগ্লোবিন যা আমাদের শরীরে রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। এই ফুলে থাকা বিভিন্ন ধরনের উপাদান গুলো আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত উৎপাদন করে যার ফলে রক্তশূন্যতার মতো সমস্যা দূর হয়। আপনারা যারা অ্যানিমিয়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই মিষ্টি কুমড়া ফুল খাবেন এতে উপকার পাবেন।
পেটের জন্য উপকারী: আমরা বাঙ্গালীদের একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে পেটের সমস্যা। প্রায় সময় গ্যাস, এসিডিটি, বদহজমের মতো বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় অনেককেই। এই সকল সমস্যার একটি সুন্দর সমাধান হচ্ছে কুমড়ো ফুল। কারণ কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা আমাদের পেটের অন্ত্রকে ঠিক রাখে। যার ফলে আমাদের পেটের সমস্যা দূর হয়।
ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস সংক্রমনের সমস্যা দূর হয়: বাংলাদেশ গ্রীষ্ম প্রধান দেশ। এদেশে বেশিরভাগ সময় গরম থাকে। আর গরমে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। এই সময় কুমড়ো ফুল খেলে আমাদের শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দূর করতে সহায়তা করে। গরমকাল আসলেই ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কুমড়ো ফুল খেলে এই সমস্যা সহজেই দূর করা যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি জাতীয় আরো অনেক পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এমনকি আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শক্তি যোগান দিতে পারে এই ফুল।
ত্বক উজ্জ্বল হয়: নিয়মিত কুমড়ো ফুল খেলে এটি আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হতে সহায়তা করে। কুমড়ো ফুলে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা আমাদের খাবার হজমে সহায়তা করে। যার ফলে বদহজম, পেট ভারী হয়ে যাওয়া এবং পেটে গ্যাস হওয়া এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি এর উৎস: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। হলুদ এই ফুলটিতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে শরীরকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে: কুমড়ো ফুলে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের ঠান্ডা কাশির ঝুঁকি কমাতে বেশ কার্যকরী। নিয়মিত কুমড়া ফুল খেলে ঠান্ডা কাশির সমস্যা কমবে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
হাড় মজবুত করে: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম যা নিয়মিত খেলে আমাদের হাড় মজবুত হয়। আর আমরা জানি হাড় মজবুত হলে অস্টিওপেরোসিস এর মত কঠিন রোগ হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কুমড়ো ফুল রাখা উচিত।
দাঁত ভালো রাখে: কুমড়ো ফুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি আমাদের দাঁতের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত কুমড়ো ফুল খেলে দাঁত মজবুত হয় এবং দাঁত ভালো থাকে।
চর্মরোগ দূর করে: কুমড়ো ফুল আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। যার ফলে চর্মরোগের মতো বিরক্তি কর রোগ দূরে থাকে। এক কথায় চর্মরোগ দূর করতে কুমড়ো ফুলের জুড়ি মেলা ভার
বিষন্নতা কমায়: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত কুমড়ো ফুল খেলে বিষন্নতা এবং ডিপ্রেশন দূর হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা আমাদের পেটের সমস্যা দূর করে, খাবার ঠিকমত হজম হয়, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কুমড়া ফুল খেতে পারেন।
চুল ভালো রাখে: কুমড়ো ফুল শুধুমাত্র আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী এমনটি কিন্তু নয়। এটি আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী। এক কথায় চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে কুমড়ো ফুলের জুড়ি মেলা ভার।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: কুমড়ো ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন। আর আপনি জানলে অবাক হবেন যে কুমড়ো ফুলে থাকা এই প্রোটিনে কোন ধরনের কোন ফ্যাট নেই। যার ফলে কুমড়ো ফুল খেলে ওজন বাড়ে না বরং নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে ওজন বাড়ার ঝুঁকি একেবারেই কম।
কুমড়ো ফুলের পুষ্টি উপাদান
কুমড়ো ফুলের পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি। আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই ফুলটি বা বাজার থেকে কেনা সস্তা এই ফুলটিতে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা সকলেই জানি বাঙালি বাড়িতে কুমড়োর কদর অনেক বেশি। এই সবজিটি বাঙালি বাড়িতে একাধিক লোভনীয় পদে রান্না করা হয়। আপনি জানলে অবাক হবেন যে শুধু কুমড়োই নয় কুমড়োর পাশাপাশি এর ফুলেও রয়েছে অসাধারন পুষ্টি উপাদান।
যার ফলে বিশেষজ্ঞরা সুস্থ থাকতে নিয়মিত কুমড়ো ফুল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কুমড়ো ফুলে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান গুলো কুমড়ো ফুলকে অত্যন্ত উপকারী একটি খাবারে পরিণত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ শুধুমাত্র এর পুষ্টি উপাদান এর কথা বিবেচনা করে এটিকে একটি আদর্শ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের এই ফুলে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নিই।
প্রতি ৩৩ গ্রাম কুমড়ো ফুলে থাকে
- ভিটামিন সি ৯.২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি৯ ১৯ গ্রাম
- ভিটামিন এ ৩২ গ্রাম
- আয়রন ০.২৩ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ১৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি২ ০.০২৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ৮ মিলিগ্রাম
- সেলেনিয়াম ০.২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি৩ ০. ২২৮ মিলিগ্রাম
কুমড়ো ফুল কি কাজে লাগে
কুমড়ো ফুল কি কাজে লাগে এটি জেনে থাকা অনেক জরুরী। কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের কুমড়ো ফুল কি কাজে লাগে সেটি সম্পর্কে জানাবো। আমাদের আশেপাশে পড়ে থাকা এই কুমড়ো ফুল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। অনেক সময় না জানার কারণে এই কুমড়ো ফুল অবহেলায় পড়ে থাকে। কিন্তু এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা সকলের জেনে রাখা উচিত।
আরো পড়ুন: পেয়ারা পাতার ১৬ টি বিশেষ উপকারিতা-চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা
সিলভার আস্তরণ বা লিজটেলার থিমক বিশেষ এবং আমাদের শারীরিক উপকারিতার কথা কুমড়ো ফুল গুলো বাছায় করতে হবে। সুন্দর ভাবে কুমড়ো ফুলগুলো সংরক্ষণ করে এটি রান্না করে বেসন দিয়ে ভেজে বা সালাদ এর উপর ছিটিয়ে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। তাহলে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে সম্পূর্ণরূপে পুষ্টির যোগান দিতে পারবে।
কুমড়ো ফুল কি স্বাস্থ্যকর
কুমড়ো ফুল কি স্বাস্থ্যকর এটি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা কি বলেন কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই। হলুদ রঙের এই ফুলটিতে রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারী নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কুমড়ো ফুলের পুষ্টি উপাদান বেশ চিত্তাকর্ষণ। এতে কোন চিনি নেই, কোলেস্টেরল নেই।
বরং আছে প্রচুর পরিমাণ প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ যা আমাদের শরীরে উপকার করে এবং ওজন কমানোর জন্য একদম আদর্শ। কুমড়ো ফুলে প্রায় ৯০% পানি থাকে। কয়েকটি কুমড়ো রান্না করে খেলে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে নানা ধরনের অপুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কুমড়ো ফুল রাখতে পারেন।
কুমড়ো ফুলের স্বাদ কেমন
কুমড়ো ফুলের স্বাদ কেমন সেটি কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের জানাবো আজ। আমাদের দেশে বর্তমানে কুমড়ো ফুলের পুষ্টি উপকারিতার কথা বিবেচনা করে প্রায় অনেক মানুষ এটিকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। কুমড়ো ফুলের স্বাদ কিছুটা হালকা মিষ্টি জাতীয় এতে কুমড়োর কিছুটা গন্ধ আছে। কুমড়ো ফুল খুব ভরে সংগ্রহ করলে তখন এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত হয়। এটি যে কোন বিপলক ব্যাগে বা রেফ্রিজারেটরে সংগ্রহ করলে দীর্ঘ সময় ধরে তাজা থাকে। তাই সংগ্রহ করে আপনি খেতে পারেন।
কুমড়ো ফুল ও পাতা কি খাওয়া যায়
কুমড়ো ফুল ও পাতা কি খাওয়া যায় এটি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কুমড়ো অনেক পুষ্টিকর এবং জনপ্রিয় খাবার হলেও এর ফুল এবং পাতা যে খাওয়া যায় আর সেই এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা উপকারী তা অনেকেই জানেন না। যার ফলে কুমড়ো ফুল এবং পাতার পুষ্টি উপকারিতা থেকে অনেক মানুষ বঞ্চিত হন। কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়লে আপনি জানতে পারবেন কুমড়ো ফুল ও পাতা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী সেই সম্পর্কে।
কুমড়ো ফুলে এবং পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান। সেই সাথে ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি৯ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত কুমড়া ফুল এবং এর পাতা খেলে আপনি আপনার শরীরে অনেক ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। এগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হওয়া থেকে শুরু করে রক্তশূন্যতা, পেটের সমস্যা দূর করা সহ আরো অনেক উপকার করে থাকে। তাই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কুমড়ো ফুল ও পাতা রাখুন।
কুমড়ো ফুল কাঁচা খাওয়া যাবে কি
কুমড়ো ফুল কাঁচা খাওয়া যাবে কি এটা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে কুমড়ো ফুল কাঁচা অবস্থাতে খাওয়া যায় এবং কাঁচা অবস্থায় এর পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি পাওয়া যায়। কুমড়ো সবজিটির মতোই কুমড়ো ফুলে রয়েছে মিষ্টি এবং মৃদু একটু গন্ধ যা বিভিন্ন খাবার এবং মসলার সাথে মিশিয়ে খেলে সুন্দর গন্ধ পাওয়া যায়। এটি সুপের উপর এবং বিভিন্ন ধরনের সালাদের উপর টুকরো টুকরো করে কেটে ছিটিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও অনেকেই ঠান্ডা ড্রিংসের উপর ছিটিয়ে খেতেও পছন্দ করেন। কুমড়ো ফুল কাঁচা অবস্থায় খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
কুমড়ো ফুল কখন খাওয়া যায়
কুমড়ো ফুল কখন খাওয়া যায় এটি অনেকে ই জানেন না। কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই। কুমড়ো ফুল খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সংরক্ষণ করুন। এই সময় এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত হয় এবং এটি থেকে ফুলের একটি মিষ্টি হালকা কুমড়ো গন্ধ এই সময় পাওয়া যায়। তাই খুব ভরে কুমড়ো ফুল সংগ্রহ করে এটি ডিপলক ব্যাগের অথবা রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে পারেন। তাহলে এটি দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তাজা থাকবে।
কুমড়ো ফুল থেকে কুমড়ো হতে কত সময় লাগে
কুমড়ো ফুল থেকে কুমড়ো হতে কত সময় লাগে এই তথ্যটি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। একটি কুমড়ো বীজ মাটিতে পোতার এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি পাতা সহ একটি চারাগাছ বের হয়। অল্প কয়দিনের মধ্যেই এই চারা গাছটি লতা গাছে পরিণত হয় এবং বাড়তে শুরু করে। চার থেকে দশ সপ্তাহের মধ্যে এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত হয় এবং ফলন দেখা দেয়।
একসাথে অনেকগুলো কুমড়ো হয় এবং কুমড়ো গুলো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। কুমড়ো গাছে কুমড়ো আসার সময় থেকে একটি তুলতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ দিন মতো। কুমড়ো গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কুমড়ো ফুল থেকে কুমড়ো হলে এটিও খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কুমড়ো ফুল থেকে কুমড়ো হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এটি গাছ থেকে পেড়ে সবজি আকারে খাওয়া যায়।
রান্নার জন্য কুমড়ো ফুল কিভাবে পরিষ্কার করতে হয়
রান্নার জন্য কুমড়ো ফুল কিভাবে পরিষ্কার করতে হয় এটি অনেকেই জানেন না। কারণ কুমড়ো ফুল অনেক নরম অল্পতেই ছিড়ে যায়। এটি খুব সাবধানে হালকা আলতো ভাবে পরিষ্কার করতে হয়। স্কোয়াস ব্লসমগুলি সাধারণত নরম ব্রিসল বা প্লাস্টিক ব্রাশ ব্যবহার করে সাবধানে আলতো ভাবে ব্রাশ করুন। এই ফুলে অনেক সময় অনেক ধুলো ময়লা থাকে তাই অবশ্যই এটি ধুয়ে খেতে হবে। ধোয়ার সময় চেষ্টা করবেন শুধুমাত্র নিচের অংশটি ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোয়ার। তারপর আলতো ভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে দীর্ঘদিন ধরে খেতে পারবেন।
আরো পড়ুন: সবুজ আঙ্গুর খাওয়ার ১০ টি বিশেষ উপকারিতা-বেশি আঙ্গুর খেলে কি হয়
শেষ কিছু কথা: কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের কুমড়ো ফুলের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান সহ কুমড়ো ফুল সম্পর্কিত আর ও অনেক বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি কুমড়ো ফুল সম্পর্কিত অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে এবং এটি পড়ে আপনি কুমড়ো ফুলের অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে ডিজিটাল আবিদা ওয়েবসাইটির সঙ্গে থাকুন।
ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url